স্বাস্থ্যকী এবং কেন?

কুষ্ঠ রোগ কি? কারণ ও চিকিৎসা

কুষ্ঠ রোগ 

কুষ্ঠ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর তিনটি প্রধান ধর্ম, যথা- হিন্দু, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থগুলোতে এ রোগের উল্লেখ আছে। পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত মিসর, চীন, গ্রিক, রোম, ভারত ইত্যাদি প্রায় সব কটি দেশের ইতিকথায় এর বিবরণ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, এ রোগের ইতিহাস চার হাজার বছরের পুরনো। এ রোগের সবচেয়ে পুরনো কংকাল-নির্ভর প্রমাণ মেলে ভারতবর্ষে, যা প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব দুই হাজার সালের সময়কার। তবে, রোগটির সাথে মানুষের পরিচয় কয়েক হাজার বছর আগের হলেও, এর প্রকৃত কারণ তাদের জানা ছিল না। তেমনি এর কোনো চিকিৎসাও তাদের জানা ছিল না। ফলে, শত সহস্র বছর ধরে এ রোগকে কেন্দ্র করে চলে আসে নানাবিধ অলীক ধারণা ও কুসংস্কার, যার নির্মম শিকার হয়ে সমাজে যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর নিপীড়িত, নিগৃহীত হয়েছে এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। কোথাও এটাকে মনে করা হয়েছে বিধাতার অভিশাপ, কোথাও বা পাপাচারের ফসল। এ রোগের কার্যকারণ বা প্রতিকারের বিষয়ে তেমন কিছু না জানলেও লোকজন এটুকু বুঝতে পেরেছিল যে, এ রোগ ছোঁয়াচে, জন থেকে জনান্তরে ছড়াতে পারে। ফলে, সমাজের স্বার্থপরতার বলি হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হতে হয়েছে অস্পৃশ্য, কোথাও সমাজচ্যুত, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে লোকালয় থেকে নির্বাসিত।

 

দিন বদলেছে। আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ আমরা কুষ্ঠের কারণ, এর উপসর্গ ও ক্রমধারা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল। এর কার্যকর চিকিৎসাও আমাদের আয়ত্তে। এক্ষেত্রে মাইলফলক ছিল ১৮৭৩ সালে নরওয়ের বিজ্ঞানী গেরহার্ড হ্যানসেনের যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই কৃতী বিজ্ঞানী গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেন, কুষ্ঠ আসলে একটি জীবাণুঘটিত রোগ, যা একটি ধীরলয়ে বংশ বিস্তার করা ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে।

 

কুষ্ঠ রোগ কী?

 

কুষ্ঠ রোগ বা হ্যানসেন রোগ হল মাইকোব্যাক্টেরিয়াম লেপ্রি  নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সৃষ্ট দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ। এই ব্যাক্টেরিয়া ত্বকের উপর দ্রুত সংক্রমণ ছড়ায়। তাছাড়াও সংক্রমণটি স্নায়ু, শ্বাস প্রশ্বাসের নালী এবং চোখের ক্ষতি করতে পারে। কুষ্ঠ রোগের কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে –

 

টিউবারকুলার লেপ্রসি

ইন্টারমিডিয়েট লেপ্রসি

লেপ্রোমাটাস লেপ্রসি

সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কুষ্ঠ রোগ হাতের চামড়ায় হয়ে থাকে। সংক্রমণের ফলে ত্বকে ক্ষত, স্নায়বিক ক্ষয় এবং শরীর দুর্বল এবং অসাড় বোধ হতে পারে। বাচ্চা থেকে বয়স্ক, যে কোনও বয়সের ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে

 

কুষ্ঠ রোগের কারণ এবং চিন্তার বিষয়

কুষ্ঠ হল মাইকোব্যাক্টেরিয়াম লেপ্রি নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই সংক্রমণ এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, আসুন জেনে নিন কীভাবে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে – 

 

হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

সংক্রমিত ব্যক্তির সর্দি হয়ে থাকলে, নাক থেকে নিসৃত তরলের মাধ্যমেও এই ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে হাতে হাত মেলালে বা গাল স্পর্শ করলে সংক্রমণের ভয় থাকে।

বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশি।

যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারা খুব তাড়াতাড়ি এই রোগের কবলে পড়েন।

 

কুষ্ঠ রোগের কারণ এবং চিন্তার বিষয়

কুষ্ঠ হল মাইকোব্যাক্টেরিয়াম লেপ্রি নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই সংক্রমণ এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, আসুন জেনে নিন কীভাবে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে – 

 

হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

সংক্রমিত ব্যক্তির সর্দি হয়ে থাকলে, নাক থেকে নিসৃত তরলের মাধ্যমেও এই ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে হাতে হাত মেলালে বা গাল স্পর্শ করলে সংক্রমণের ভয় থাকে।

বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশি।

যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারা খুব তাড়াতাড়ি এই রোগের কবলে পড়েন।

 

কুষ্ঠ রোগের লক্ষণ

কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে প্রাথমিক যে লক্ষণগুলি দেখা দেয় সেগুলি হল 

 

ত্বকের রঙ পরিবর্তন, ফ্যাকাশে দাগ এবং ছোপযুক্ত ত্বক।

ত্বকের উপর জ্বালা, যন্ত্রণা অনুভব হয় এবং প্রচণ্ড গরম লাগে।

মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়ে।

হাত ও পায়ে ঘা এবং অসাড় হয়ে যায়।

চুল উঠে যায়।

রুষ্ক ও শুষ্ক ত্বক।

পায়ের পাতার নীচের অংশে ঘা।

নাক বন্ধ এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ে।

 

কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা 

 

কুষ্ঠরােগ নির্ণয় করা হয় ত্বকের রঙের দ্বারা যা ত্বকের আসল রঙের চেয়ে গাঢ় বা হালকা হয়। এই ছােপগুলি লালচে হতে পারে।পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করতে, ডাক্তার একটি ত্বক বা নার্ভ বায়ােপসি পরিচালনা করতে পারে।

এই অবস্থায় এন্টিবায়ােটিকের দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে পারে, এই বহু-ডাগ থেরাপি অ্যান্টিবায়ােটিক সহ্য করার ক্ষমতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ড্যাপসন, ক্লোফাজিমিন ও রিফাম্পিসিন। যদি এই ওষুধ থেকে অ্যালার্জি হয় তাহলে মিনােসাইক্লিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ও অফ্লক্সাসিন কার্যকারী বিকল্প।

সারহীনতা এড়াতে বিশেষ জুতাগুলি বেছে নিন যা পাটিকে সুরক্ষিত করে স্বাভাবিক গতিপথে আনবে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃশ্যমান বিকৃতির চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং আত্মবিশ্বাস উন্নত করতে সাহায্য করে।

সম্পূর্ণভাবে, এই রােগের চিকিৎসা করতে প্রায় এক বছরের উপর লাগবে। আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে দ্রুত পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে সময় মতাে চিকিৎসা করতে যত বর্ণ নির্মূল হতে পারে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link