স্বাস্থ্য

কাঁচা আদা কেনও খাবেন?

আদা হলো সকল রোগ নিরাময়ের দাদা। আদার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। আদা যেমন সহজলভ্য তেমনি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। শরীর সুস্থ রাখতে কাঁচা আদা খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অনেকেই এক মাসের প্রয়োজনীয় আদা একবারে পিষে ফ্রিজে রেখে দেন। এ আদা দিয়ে কিন্তু ঔষধি উপকার পাওয়া যাবে না। চলুন দেখে আসি কাঁচা আদা কেন প্রতিদিন খাওয়া উচিত আমাদের।

 

 কাঁচা আদার উপকারিতা

 

আদা বেশিরভাগ সময়েই রান্নায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও চা এর সাথেও এটি ব্যবহার হয়। তবে এটি কাঁচাও খাওয়া যায়। কাঁচা খেলেও এ থেকে উপকারিতা পাওয়া যায়। আসুন জেনে নিই কাঁচা আদার উপকারিতা সমূহ।

  • কাঁচা আদা খেলে সর্দি,কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।
  • এটি কাঁচা খেলে গলা ব্যথার উপশম হয় দ্রুত।
  • কাঁচা আদা বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। বমি বমি ভাব দেখা দিলে অল্প করে কাঁচা আদা লবণ দিয়ে খেয়ে নিন।।
  • বাতের ব্যথা দূর করতেও এটি কাঁচা খেতে পারেন। 
  • এটি কাঁচা খেলেও আপনার দেহের রােগ প্রতিরােধ

ক্ষমতা বাড়বে।

  • দাঁতে থাকা জীবাণু ধ্বংস করতে এটি খেতে পারেন কাঁচা বা রস করে।

 

এছাড়াও 

 

আমাশয়, পেটফাঁপা, পেটব্যথা

যাঁরা এসব সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য খাওয়ার পর এক কাপ গরম পানিতে এক চা–চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে আমাশয়, পেটফাঁপা, পেটব্যথা দূর হবে। যাঁরা এ সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন, তাঁরা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু, একত্রে এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে দিনে এবং রাতে নিয়মিত খেলে সুফল পাবেন।  

 

হাঁপানি ও ফুসফুসে সংক্রমণ

ফুসফুসের ধমনিতে কোনো সংক্রমণ থাকলে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হলে অথবা হাঁপানি থাকলে প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস, মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে এবং ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চললে ১৫ দিনের মধ্যে এর সুফল পাবেন।

 

আদা ও লেবুর রসের সঙ্গে মধু দারুণ কার্যকরআদা ও লেবুর রসের সঙ্গে মধু দারুণ কার্যকর

শরীরের ভেতরের বায়ু ও কোষ্ঠবদ্ধতা, পেটে গ্যাস, কোনো খাবার খেলেই গ্যাস বের হতে থাকে, সেই সঙ্গে কোষ্টকাঠিন্য, প্রতিদিন মলত্যাগ হয় না, মলে দুর্গন্ধ এবং শক্ত, তাঁদের জন্য প্রথম সাত দিন এক চা–চামচ আদার রস এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে ছয় থেকে সাতবার খেতে হবে। এতে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে; তারপর প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেতে হবে। তাহলে গ্যাসের স্থায়ী সমাধান মিলবে। মনে রাখতে হবে, গ্যাসের সমস্যার প্রধান কারণ শরীর বিরুদ্ধ খাবার; আসলে যে খাবার আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর তা এড়িয়ে গেলে কোনো ওষুধেরই প্রয়োজন হয় না।

 

অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা

মূলত এ রোগগুলোর কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। শরীরের ওজন ঠিক রেখে, নির্দিষ্ট ব্যায়াম ও দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস, মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে এর তীব্রতা কমে। যেহেতু এ রোগ হওয়ার অন্যতম কারণ শরীরে পানি ও ক্যালসিয়াম ঘাটতি, সেহেতু পানি খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে হবে।

 

হৃদ্‌রোগ

হৃদ্‌রোগের বিভিন্ন উপায় আছে প্রাকৃতিক উপায়ে নিরাময়ের জন্য। যাঁদের হৃদ্‌রোগ আছে কিন্তু উচ্চরক্ত চাপ নেই, তাঁরা দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খাবেন। সেই সঙ্গে গ্যাসজনিত সমস্যা থাকলে সাত দিন এক চা–চামচ আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে ছয় থেকে সাতবার খাবেন। ধৈর্যসহ নিয়মিত এ নিয়মে চললে হৃদ্‌রোগের সমস্যা দূর হতে থাকবে।

 

জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাব

এক চা–চামচ আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে ছয় থেকে সাতবার খেলে জ্বর জ্বর ভাব ও বমি বমি ভাব কেটে যাবে।

 

মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ও মাথাব্যথায়

তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে হবে। কিন্তু রোগ সারাতে হলে প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু গরম এক কাপ পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা দূর হবে।

আহারে রুচি আসে, ক্ষুধা বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে

সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে আহারে রুচি আসে।

 

কাশি কমায়, কফ দূর করে

প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে কাশি কমে, কফ দূর হয়।

 

পাকস্থলী ও লিভারের শক্তিবর্ধক

সমপরিমাণে আদার গুঁড়া, মধু ও আমলকীর গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে রেখে প্রতিদিন তিনবার চা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে পাকস্থলী ও লিভারের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

 

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

 

প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজে আসবে। ডায়েবেটিস রোগীদের মধু বাদ দিয়ে খেতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link