স্বাস্থ্য

হলুদের উপকারিতা এবং সুস্বাস্থ্যে রক্ষায় এর ভূমিকা

আদার সমগােত্রীয় মশলা, হলুদ পাওয়া যায় দক্ষিণ এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে উৎপন্ন কারকিউমা লােঙ্গানামে উদ্ভিদ থেকের মূল থেকে। এই উদ্ভিদের মূল বা শিকড় স্ফীতাকার হয়ে থাকে যেখানে রাইজোম প্রস্তুত হয়। এগুলিকে ফুটিয়ে, শুকনাে করে নেওয়া হয়, তারপর গুঁড়াে করে আমরা যে পাওডার মেলে, সেটাই আমাদের কাছে হলুদনামে পরিচিত। প্রায় খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ সাল থেকে এটি রং করার এজেন্ট বা ডাই হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

হলুদের উপকারিতা

ভারতীয় উপমহাদেশে  চিকিৎসা শাস্ত্রে বহুদিন ধরে হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে কারণ আয়ুর্বেদ ভেষজ শাস্ত্রে এটি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন শ্বাসকষ্ট, বাত, শরীরের যন্ত্রণা, এবং এমনকি ক্লান্তি নিরসনের জন্যও দেওয়া হয়ে থাকে। কাপড় রং করার জন্যও হলুদের ব্যবহার আছে। বস্তুত, মার্কো পােলাে যখন ১২৮০ খ্রীষ্টাব্দে চিন ভ্রমণে যান তখন তিনি হলুদকে কেশরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। মধ্যযুগে ইউরােপে, হলুদকে “ভারতীয় কেশর” বলে অভিহিত করা হতাে। হলুদের একটি ঝাঁঝালাে-তিক্ত স্বাদ আছে এবং মাঝে মাঝে খাদ্য বস্তু রং করার কাজেও ব্যবহৃত হয়। ক্যানবন্দি পণ্য, বেকারি পণ্য, ডেয়ারি, জুস, এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যেও ব্যবহার হয়ে থাকে। খাদ্য দ্রব্যের মােড়ক করতে বা রান্নার জন্যও হলুদ পাতা ব্যবহার করা হয়। এই পাতা খাদ্যে একটি নির্দিষ্ট স্বাদ নিয়ে আসে। হলুদ নিজেই একটি চমকপ্রদ মশলা, কিন্তু যদি এটিকে দুধের সঙ্গে মেশানাে হয় তখন এর উপকার দ্বিগুণ হয়ে যায়। হলুদ  একটি বাসায়নিক যৌগ যার নাম কারকিউমিন যা স্নেহ পদার্থ দ্রবীভূত করে। দুধ গরম করে তার মধ্যে এক চামচ টামারিক পাওডার মিশিয়ে টার্মারিক প্রস্তুত করা হয়।

 

বিশ্বের মধ্যে ভারত হচ্ছে হলুদে সর্ববৃহৎ উৎপাদক, উপভােক্তা, এবং রপ্তানিকারক দেশ। ভারতে উৎপাদিত হলুদ কে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয় কারণ এই হলুদে উচ্চ মাত্রায় কারকিউমিন থাকে। সারা পৃথিবীতে উৎপাদিত হলুদের ৮০% ভারতে উৎপন্ন হয়।

 

 হলুদের কিছু প্রাথমিক তথ্য

 

  • বৈজ্ঞানিক নাম: কারকিউমা লােঙ্গা
  • পরিবার: আদার সমগােত্রীয় জিঞ্জিবারেসিয়া

পরিবার অন্তর্ভুক্ত

  • সাধারণ নাম: টার্মারিক, হলদি (হিন্দি)
  • কোন অংশ ব্যবহৃত: ভেষজ বা খাদ্য হিসাবে মূল বা রাইজোম ব্যবহৃত হয়। 
  • উদ্ভাবন স্থান এবং ভৌগৌলিক বণ্টন: সিংহভাগ উৎপন্ন যায় দক্ষিণ এশিয়ায়, প্রাপ্তিস্থান ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চিন, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, হাইতি,

জামাইকা, শ্রীলংকা এবং পেরু।।

  • গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: উদ্ভিদের আরবি শব্দ কারকুম থেকে কারকিউমা লোঙ্গা শব্দটি এসেছে। চিনে এটিকে বলা হয় জিয়াং হুয়ানজিন|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link