মশারা কিভাবে আপনাকে দেখতে পায়?
মশা এমন একটি পতঙ্গ যা আমাদের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। মশা কিন্তু আমাদের শরীরের রক্ত খায় না। আমাদের শরীরের রক্ত পান করে মশকী অর্থাৎ স্ত্রী মশা। কিন্তু কেন? কারণ একটিই। স্ত্রী মশাদের ডিম্বাণুর পরিস্ফুটনের জন্য দরকার আমাদের শরীরের গরম রক্ত। তাই নারী মশা সুযোগ পেলেই আমাদের আক্রমণ করে বসে এবং রক্ত পান করে। পুরুষ মশারা গাছের পাতার রস, ফুলের রস ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। কিন্তু মশাদের তো আমাদের মতো বড় বড় চোখ নেই। তাহলে মশারা আমাদের কিভাবে দেখতে পায়? মশা কিভাবে আমাদের দেখতে পায় চলুন তা জেনে আসার চেষ্টা করি।
মশাদের চোখ নেই। মশাদের আছে পুন্জাক্ষী। পুন্জাক্ষী দিয়ে মশা আমাদের অতটা দেখতে পায় না। মশারা আমাদের শরীর থেকে বের হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড এর গন্ধ শুঁকে আমাদের চিহ্নিত করে এবং আমাদের শরীরের কাছে এসে শুঁঙ্গ ফুটিয়ে দেহ হতে রক্ত পান করে। শুধু কার্বন ডাই-অক্সাইড নয়, আমাদের দেহের ঘাম, দেহ থেকে বের হওয়া তাপ এই সবকিছুর মাধ্যমেও মশা আমাদের চিহ্নিত করতে পারে। আমাদের দেহের ঘাম সাধারণত এসিডিক হয়ে থাকে। এই এসিডিক ঘাম মশা খুব ভালোভাবে চিহ্নিত করতে পারে। কিন্তু সবথেকে বড় যে কারণটি রয়েছে সেটি হলো আমাদের দেহ থেকে নিঃশ্বাসের সাথে বার হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড। কার্বন ডাই-অক্সাইড এর গন্ধ শুঁকে মশারা আমাদের অবস্থান চিনতে পারে। মশাদের আমাদের শরীর থেকে নিঃসৃত কার্বন ডাই-অক্সাইড এর গন্ধ শুঁকার জন্য তাদের রয়েছে এক জোড়া এন্টেনা। এই এন্টেনার মাধ্যমে মশারা আমাদের শরীর থেকে বের হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড এর গন্ধ শুঁকে আমাদের কাছে আসে। এরপর সুযোগ বুঝে আমাদের দেহের ওপর বসে তার শুঙ্গ ফুটিয়ে রক্ত পান করে। মশারা নানা ধরনের রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। তারা যখন আমাদের দেহ হতে রক্ত পান করে তখন তাদের দেহ নানা রকম রোগ যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদীর জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। মশা থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে আমাদের বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাড়ির আশে পাশে ময়লা পানি জমে থাকতে দেয়া যাবে না। কারণ আবদ্ধ ময়লা পানিতে মশকী ডিম পাড়ে। রাতে শোয়ার সময় আমাদের উচিত মশারী ব্যবহার করা।