ক্যাম্পাস ভিউ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এটিকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই গণ্য করা হয় এবং অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এই বিশ্ববিদ্যালয়েও অনুষদের ওপর শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সিভাসু বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রাণী ব্লাড ব্যাংক তৈরি করে। বাংলাদেশের প্রথম পেট হাসপাতাল, প্রথম এনাটমি জাদুঘর সিভাসু তৈরি করেছে।

অবস্থান

চট্টগ্রামের খুলশী থানার অন্তর্গত এবং নগরীর জাকির হোসেন রোডে এটি অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে রয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। আর সামনে পাহাড়তলী এলাকা। আর পেছনদিকে অর্থাৎ, উত্তর দিকে রয়েছে ফয়েজ লেক।

 

ইতিহাস

১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার সিলেট ও চট্টগ্রামে দুটি ভেটেরিনারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে, দিনাজপুর ও বরিশালে আরো দুটি ভেটেরিনারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি কলেজের প্রাথমিক নাম ছিল চট্টগ্রাম সরকারী ভেটেরিনারি কলেজ, সংক্ষেপে চসভেক। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে একটি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজটির পড়াশুনার ব্যাপকতার জন্য, বড় সিলেবাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমতি নিয়ে কলেজটিকে একটি আলাদা অনুষদে রূপান্তরিত করে। তখন পুরো চট্টগ্রামে কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। ফলে চসভেককেই আলাদা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার জোড় দাবি ওঠে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এই দাবির সাথে একাত্নতা পোষণ করে। এই দাবী মোটামুটি একটি আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রামের সমাজ সেবক ও দৈনিক পূর্বকোণের চেয়ারম্যান ইউসুফ চৌধুরী। তার এই অবদানের জন্য সিভাসুর একটি ভবনের নাম রাখা হয় ইউসুফ চৌধুরী ভবন। এই আন্দোলনের ফলে ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে চসভেককে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ তারিখে এটিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৭ই আগস্ট এটি যাত্রা শুরু করে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধুমাত্র ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ও মাৎস্যবিজ্ঞান নামে আরো দুটি অনুষদ সহ মোট তিনটি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চসভেক প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এর প্রিন্সিপাল ছিলেন অধ্যাপক নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হন। ২০১০ সাল পর্যন্ত উপাচার্য হিসেবে ছিলেন।

READ MORE:  Shahjalal University of Science and Technology | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রাবাস

শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য ছিল একটি ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীদের জন্য ছিল ফজিলাতুন্নেছা হল। ২০১৬ সালে তৈরি হওয়া হাটহাজারী ক্যাম্পাসে আরেকটি হল তৈরি করা হচ্ছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে।

 

অনুষদ ও বিভাগসমূহ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩টি অনুষদে ১৮টি বিভাগ রয়েছে।

 

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ এবং অন্তর্গত বিভাগসমূহ হলো:

 

ভেটেরিনারী মেডিসিন অনুষদ

রোগবিদ্যা ও পরজীবীবিদ্যা বিভাগ
অ্যানাটমি ও কলাস্থান বিভাগ
শারীরবিদ্যার, প্রাণরসায়ন ও ঔষধবিদ্যা বিভাগ
প্রাণী বিজ্ঞান ও পুষ্টি বিভাগ
অনুজীবিদ্যা ও ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগ
জেনেটিক্স ও পশু প্রজনন বিভাগ
ডেইরি ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ
কৃষি অর্থনীতি ও সামাজিক বিভাগ
মেডিসিন ও সার্জারী বিভাগ

খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ

পদার্থ ও গাণিতিক বিজ্ঞান বিভাগ
ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগ
ফলিত খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টি বিভাগ
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকৌশল বিভাগ

মৎস্য অনুষদ

মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
ফিসিং ও পোস্ট হার্ভেস্ট প্রযুক্তি বিভাগ
সামুদ্রিক জৈব-গবেষণা বিভাগ
কৃষি বিভাগ
মাছের জীববিদ্যা এবং জৈব প্রযুক্তি বিভাগ

গবেষণা কেন্দ্রসমূহ

পোল্ট্রি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
ওয়ান হেলথ ইন্সটিটিউট
ইন্সটিটিউট অব কোস্টাল-বায়োডাইভারসিটি, মেরিন ফিসারিজ এবং ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *