হুট করেই কেন মানুষ রেগে যায়?

হুট করেই কেন মানুষ রেগে যায়?

মানুষের রাগ করে?

 

আশে পাশে খেয়াল করলে প্রায়ই দেখা যায়, মানুষ হঠাৎ করেই রেগে যায়। মানুষ রেগে যায়, হঠাৎ করে রাগে। কারণে-অকারণে রাগে। জিনিসটি ভালো নয় জেনেও রাগ করে। রেগে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য রাগ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। হঠাৎ রেগে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে বা স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেছে এমন উদাহরণ সমাজে কম নয়। তবুও কেন রাগ করে মানুষ? ব্যাপারটা কি তবে?

 

রাগের সঙ্গে অভিজ্ঞতার যোগ আছে। আর আছে কিছু হরমনের কারসাজি। আমরা আসলে অভিজ্ঞতা আর অভ্যাসের দাস। আমাদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারে যেসব তথ্যের ঠাঁই নেই, যেগুলোতে আমরা অভ্যস্ত নই, এমন জিনিস হুট করে ঘটতে দেখলে রেগে যাই। আমরা যতই লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করি না, ভিন্নমত সহ্য করতে না পারা মানুষের মজ্জাগত ব্যাপার। যুগ যুগ ধরেই মানুষ নিজের ভেতর এই অশুভ শক্তিটি বয়ে বেড়াচ্ছে।

 

আমরা যেভাবে ভাবি, যেভাবে কাজ করে অভ্যস্ত, ধরেই নিই, অন্যরাও একইভাবে চিন্তা করে, একই পদ্ধতিতে কাজ করে অভ্যস্ত। তাই হঠাৎ কেউ এমন একটি কথা বলল, বা কাজ করল, আমাদের অবচেতন মন সেটির জন্য প্রস্তুত ছিল না। হঠাৎ নিজের মতের সঙ্গে, অভ্যাসের সঙ্গে, নিজের ভাবনার সঙ্গে মিলতে না দেখে তাই রেগে যাই।

 

রাগের জন্ম মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা নামের অংশে। এই অংশটি মানুষের রাগ-ক্ষোভ, আবেগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে। এই অংশে থেকেই নিঃসরণ হয় অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিন হরমন। নিঃসরণের পর এই হরমন রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেহে। ফলে রক্তচাপ বাড়ে, বেড়ে যায় হদকম্পনের গতি, ঘন ঘন শ্বাস ফেলতে ও শরীর কাঁপতে শুরু করে। মুখ লাল ও বিকৃত হয়ে যায়, ঘামতে শুরু করে রেগে যাওয়া ব্যক্তি।

 

READ MORE:  ছেলে ও মেয়ের মাঝে অবাক করা ১০টি পার্থক্য

ধরা যাক, বাংলাদেশ আর হংকং এর ওয়ানডে ম্যাচ হচ্ছে। বাংলাদেশ হেরে গেল, তখন আপনি ভীষণ রেগে গেলেন। কারণ আপনার অবচেতন মন আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল, হংকং এর সঙ্গে জিতবে। আপনার ভাবনার সঙ্গে ঘটনার ফলাফল মেলেনি, তাই আপনি রেগে গেলেন। আবার দেখা গেল ইংল্যান্ডের সঙ্গে টি-২০ ম্যাচ। যথারীতি হেরে গেল বাংলাদেশ। কিন্তু আপনার রাগ হলো না। কারণ আপনি আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের শক্তিমত্তার পার্থক্য কী, সেই অনুযায়ী খেলার ফল কী হতে পারে।

 

তেমনি সামাজিক অনেক বিষয়ে আপনি এমন কিছু ভাবেন, যেটি অনেকেই একরকম ভাবে। তাই তাদের কথা শুনে আপনার রাগ হয় না। কিন্তু কেউ যখন উল্টো কথা বলবে, আপনার মতের সঙ্গে মিলবে না, আপনি তখন রেগে যাবেন।