ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত এবং এর ফজিলত | sura bakara ses 2 ayat

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ( sura bakara ses 2 ayat ) মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বেশ কয়েকটি ফজিলত পূর্ণ আয়াতের কথা উল্লেখ রয়েছে তাদের মাঝে অন্যতম সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত। আজ জানবো সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত এর আরবি বাংলা অনুবাদ এবং এর ফজিলত সম্পর্কে।

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত:

اٰمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِه وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ(285 ) لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلَانَا فَانْصُرْنَا عَلَى 
الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ(286)

উচ্চারণ-

আ-মানার রাসূলু বিমাউংযিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুনা। কুল্লুন আ-মানা বিল্লাহি ওয়া মালাইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসূলিহী। লা- নুফাররিকুবাইনা আহাদিম মির রুসূলিহী। ওয়া ক্বা-লু- সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরা-নাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। (আয়াত নং ২৮৫)
লা- ইউকাল্লিফুল্লা-হু নাফসান ইল্লা- উস’আহা- লাহা- মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা- মাকতাসাবাত, রাব্বানা- লা- তুআখিজনা ইন্নাসিনা- আও আখত্বনা, রাব্বানা ওয়ালা- তাহমিল আলাইনা- ইছরান কামা- হামালতাহু- আলাল্লাজিনা মিং কাবলিনা-, রাব্বানা- ওয়ালা তুহাম্মিলনা- মা- লা- তা-কাতা লানা- বিহি, ওয়া’ফু আন্না ওয়াগফিরলানা- ওয়ারহামনা-, আংতা মাওলা-না- ফাংসুরনা- আলাল ক্বাওমিল কা-ফিরীন। (আয়াত নং-২৮৬)

অর্থ: 

রসূল ঈমান এনেছেন ঐ সকল বিষয়ের উপর যেগুলো তার প্রভুর পক্ষ থেকে তার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং মোমেনরাও ঈমান এনেছে। সকলে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তার কিতাবগুলোর উপর এবং তাঁর রাসূলদের উপর। আমরা তার কোনো রাসূলদের মাঝে পার্থক্য বর্ণনা করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনেছি ও আনুগত্য করেছি। হে আমাদের প্রভূ! আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাচ্ছি। আপনার নিকটেই প্রত্যাবর্তনের স্থান। 
(আয়াত নং -২৮৫)
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাহিরে ভাব ধরেন না। তার পক্ষে তাই যা সে অর্জন করেছে। আর তার বিরুদ্ধে তাই জাহা সে অর্জন করেছে। হে আমাদের প্রভূ আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না যদি আমরা ভুলে যাই অথবা ভুল করি। হে আমাদের প্রভূ আর আপনি আমাদের উপর এমন বোঝা বহন করাবেন না যাহা আপনি বহন করেছিলেন আমাদের পূর্বেকার লোকদের ওপর। হে আমাদের প্রভূ আপনি আমাদের উপর এমন বিষয়ে চাপিয়ে দিবেন না যার সাধ্য আমাদের নেই। আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও মার্জনা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (আয়াত নং ২৮৬)
আয়াত গুলো রাতের যে কোন সময় পড়লেই উক্ত ফজিলত অর্জন হবে।

সূরা বাকারার ফজিলত:

 

১. হযরত উকবা ইবনে আমর বলেন, আমি আবু মাসুদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম বাইতুল্লাহর কাছে। অতঃপর বললাম, আপনার পক্ষ থেকে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত সম্পর্কে একটি হাদিস আমার নিকটে পৌঁছে, (এ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?)  অতঃপর তিনি বললেন, হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন, সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত যে ব্যক্তি রাতে পড়বে সে দুটি আয়াত তার জন্য যথেষ্ট হবে।
 সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৮০৭
হাদীসটির ব্যাখ্যা মুহাদ্দীগণ বিভিন্ন রকম করেছেন। তবে সবগুলোই উদ্দেশ্য হতে পারে।
(ক) রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য যথেষ্ট করবে।
(খ) শয়তানের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট করবে।
(গ) বিপদ-মছিবত থেকে যথেষ্ট করবে।
(ঘ) রাতে কুরআন তিলাওয়াত করা থেকে যথেষ্ট করবে।
২. জুবাইর ইবনে নুফাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুরা বাকারাকে আল্লাহ তাআলা এমন দুটি আয়াত দ্বারা শেষ করেছেন, যা আমাকে আল্লাহর আরশের নিচের ভান্ডার থেকে দান করা হয়েছে। অতএব, তোমরা এ আয়াতগুলো শিখবে। তোমাদের স্ত্রীদেরকেও শেখাবে। কারণ, এ আয়াতগুলো হচ্ছে রহমত, (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের উপায় ও (দীন দুনিয়ার সকল) কল্যাণলাভের দোয়া।
মিশকাতুল মাসাবিহ: ২১৭৩
৩. হযরত নুমান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আকাশ ও যমীন সৃষ্টির ২০০বছর আগে একটি কিতাব লিখেছেন। সে কিতাব থেকে দুটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। যার দ্বারা সূরা বাকারা শেষ করা হয়েছে, সেই দুটি আয়াত যে কোন ঘরে তিন রাত পাঠ করলে সেই ঘরে সেই ঘরের ধারে কাছেও শয়তান আসতে পারবে না। 
জামে তিরমিজী, হাদীস নং-৩১২৬
৪. হযরত হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদেরকে অন্য লোকদের ওপর তিনটি বিষয় দ্বারা মর্যাদা দান করা হয়েছে।
(১) পুরা জমিনকে সিজদার স্থান বানানো হয়েছে। পুরা জমিনের মাটি কে আমাদের জন্য পবিত্রতার বস্তু হিসেবে বানানো হয়েছে।
(২) আমাদের নামাজের কাতার কে ফেরেশতাদের কাতারের সাথে সমতুল্য করা হয়েছে।
(৩) সুরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো আরশের ভাণ্ডার থেকে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। যা আমাদের পূর্বে কাউকে দেওয়া হয় নাই এবং পরবর্তীতে কাউকে দেওয়া হবে না।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১১৯৩
READ MORE:  বয়স কত হলে রোজা রাখতে হবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *