সহিহ্ পদ্ধতিতে আকিকা ( Akika)

আকিকা

(Akika)

আকিকার সহিহ্ পদ্ধতি।

( akikar sohih poddhoti)

Akikar poddhoti

(আকিকার পদ্ধতি)

 

আকিকা শিশুর অধিকার। নবজাতক শিশুর জন্য আকিকা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এর ফজিলত বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।

আকিকা করা সুন্নত। আকিকার ফজিলতের বরকতে নবজাতক শিশুর বালা-মুসিবত দূর হয়ে যায়। নবজাতক শিশু সন্তানের শুকরিয়া আদায়ের নিদর্শন হিসেবে বাবা-মাকে সন্তানের জন্য আকিকা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সন্তান ছেলে বা মেয়ে যা হোক না কেন, উভয়ের জন্য আকিকা করতে হবে।

 

 

আকিকার সময় ( akikar shomoy) : নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। হজরত রাসূল সা: নিজে সপ্তম দিনে আকিকা করেছেন। যদি কোনো কারণে সপ্তম দিনে আকিকা করা সম্ভব না হয়, তাহলে চতুর্দশতম দিনে আকিকা করতে হয়। তাও সম্ভব না হলে, একবিংশতম দিনে আকিকা করতে হয়। তাও সম্ভব না হলে, অন্য যেকোনো দিনে আদায় করে নিতে হবে। হজরত সামুরা ইবনে জুনদুব রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকিকার বিনিময়ে বন্ধকস্বরূপ। কাজেই সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করবে এবং তারা মাথা মুণ্ডন করে নাম রাখবে’ (সুনানে আবু দাউদ : ২/৩৯২)। 

 

আকিকার পশু ও সংখ্যা ( akikar poshu o songkha) : উট, গরু, মহিষ, ভেড়া বা ছাগল দিয়ে আকিকা করতে হবে। কোরবানির পশুর মতো আকিকার পশু সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত হতে হয়। হজরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: তাদেরকে ছেলে সন্তানের জন্য দুটি সমবয়সী ছাগল আর মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করার জন্য নির্দেশ করেছেন। (তিরমিজি শরিফ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৮৩; আবু দাউদ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৪)। হজরত উম্মে কুরজ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘নবজাতক সন্তান ছেলে হলে দু’টি ছাগল আর মেয়ে হলে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করবে’ (তিরমিজি শরিফ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৮৩; আবু দাউদ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৪)। 

READ MORE:  হায়েজ বা মাসিক অবস্থায় সহবাস করা যাবে কি?

 

আকিকার গোশত বিতরণ ( akikar goshto bitoron) : আকিকার গোশত ইচ্ছে হলে রান্না করে আত্মীয়-স্বজন ও গরিব-মিসকিনকে খাওয়ানো যাবে। তবে আকিকার পশুর গোশত তিন ভাগ করে এক-তৃতীয়াংশ নিজের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনদের জন্য সাদকা করে দিয়ে বাকি এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া সুন্নত। আকিকার গোশত সচ্ছল আত্মীয় স্বজনকেও দেয়া যায়।

 

আকিকার গোশত খাওয়া ( akikar goshto khawa) : আকিকার পশুর গোশত খেতে কারো কোনো বাধা নেই। আকিকার পশুর গোশত নিজেরা খেতে পারবে। অন্যদেরও খাওয়ানো যাবে। 

 

আকিকার পশুর চামড়া ( akikar poshur chamra) : আকিকার পশুর চামড়া বাজারে বিক্রি করে, বিক্রিয়কৃত টাকা গরিব-মিসকিনের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।

আকিকার কল্যাণসমূহ : আকিকার মাধ্যমে নবজাতক শিশুর বাবা-মায়ের দানশীলতা প্রকাশ পায়। গরিব, ইয়াতিম ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গোশত বিলি-বণ্টনের মাধ্যমে আত্মীয়তার হক আদায় হয়। নবজাতক শিশুর জন্য সবাই দোয়া করেন। নতুন একটি প্রাণের আগমনকে কেন্দ্র করে আকিকা দেয়ার ফলে আল্লাহ তায়ালা নবজাতকের কাছে যত বালা-মুসিবত ছিল, সেগুলো উঠিয়ে নেন।

 

আকিকার কুসংস্কার ( akikar kusongskar) : আকিকার পশু নানার বাড়ি থেকে দিতে হয়। আকিকার গোশত বাবা-মা, নানা-নানী ও দাদা-দাদীরা খেতে পারেন না। সন্তানের চুল মুণ্ডানোর সময় মাথার তালুর উপর ক্ষুর ধরে রেখে আকিকার পশু জবাই করতে হয় ইত্যাদি কুসংস্কার থেকে দূরে থাকতে হবে। আকিকা করতে হয় নবজাতকের কল্যাণের উদ্দেশ্যে। তাই আকিকার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অশ্লীল নাচ-গান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।