Shahjalal University of Science and Technology | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology) SUST ‘এক কিলো’; শাবিপ্রবির প্রবেশমুখের ১ কিলোমিটার রাস্তাশাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল শাস্ত্রে বিশেষ অবদান প্রদানকারী ও বাংলাদেশে নেতৃত্ব স্থানীয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ২৫শে আগষ্ট ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর ক্যাম্পাসটি সিলেট শহর হতে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭টি অনুষদের অধীনে ২৮ টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে ২৯ এপ্রিল ১৯৯৮ এবং ৬ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে। এছাড়া সর্বোচ্চ সংখ্যক গবেষনাপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে ওয়েবমেট্রিক্স র্যাঙ্কিং এ এই বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভাল অবস্থান দখল করে আছে। ইদানীংকালে বাংলাদেশের সবগুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরাই আনুপাতিক হারে সবচেয়ে বেশি বিশ্বের অন্যান্য দেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার কাজে নিয়োজিত থাকছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা গবেষণায় খুবই পারদর্শী।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology) একাডেমিক কার্যক্রম
একাডেমিক কার্যক্রম বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। শতকরা ৭৫ ভাগ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।
ভর্তি কার্যক্রম
শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীরা অস্নাতক, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি হতে পারে। শিক্ষার্থীদের তুখোড় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেতে হয়। ভর্তি পরীক্ষায় এক আসনের বিপরীতে প্রায় ৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ভর্তি পরীক্ষা বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি কমিটির তত্ত্বাবধায়নে সম্পন্ন হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতএসএমএস ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনের এসএমএস-এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে এ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। এই উদ্ভাবনের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় ২০১০ সালে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিযোগিতায় Ambillion পুরস্কার, E-Content এ জাতীয় পুরস্কার এবং উন্নয়নের জন্য আইসিটি পুরস্কার ২০১০ লাভ করেছে।
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
একাডেমিক ভবন বি এর একটি দৃশ্যশাবিপ্রবিতে ৬ টি অনুষদের অধীনে ২৮ টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন পরিকল্পনা অনুসারে ৮ টি অনুষদের অধীনে আরো একাধিক বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগ খোলার অনুমোদন পেয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology)
- অনুষদসমূহ
অনুষদের নাম | বিভাগ সমূহ |
---|---|
ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ | কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ (CSE) |
তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ (EEE) | |
শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগ (IPE) | |
যন্ত্রকৌশল বিভাগ (MEE) | |
পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগ (CEE) | |
কেমি কৌশল ও বৃহদাণু বিজ্ঞান বিভাগ (CEP) | |
পেট্রোলিয়াম ও খনিকৌশল বিভাগ (PME) | |
খাদ্য প্রকৌশল ও চা প্রযুক্তি বিভাগ (FET) | |
সফটওয়্যার প্রকৌশল (SWE) | |
জীব বিজ্ঞান অনুষদ | জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা (BMB) |
জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি (GEB) | |
কৃষি ও খনিজ বিজ্ঞান অনুষদ | বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ (FES) |
ভৌত বিজ্ঞান অনুষদ | গণিত বিভাগ (MAT) |
পদার্থ বিভাগ (PHY) | |
রসায়ন বিভাগ (CHE) | |
পরিসংখ্যান বিভাগ (STA) | |
সমুদ্রবিজ্ঞান (OCG) | |
ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ | ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ (BBA) |
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ | অর্থনীতি বিভাগ (ECO) |
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ (PSS) | |
লোকপ্রশাসন বিভাগ (PAD) | |
সমাজকর্ম বিভাগ (SCW) | |
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (SOC) | |
নৃবিজ্ঞান বিভাগ (ANP) | |
ইংরেজি বিভাগ (ENG) | |
বাংলা বিভাগ (BNG) | |
মোট অনুষদঃ ৬ টি | মোট বিভাগঃ ২৬ টি |
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ
- এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ
- জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ
- নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ
- সিলেট ওমেন’স মেডিকেল কলেজ
- দুররে সামাদ রাহমান ওমেন’স রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ
সংশ্লিষ্ট কলেজ
সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজক্যাম্পাসের একটি দৃশ্য, শাবিপ্রবির সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত একটি কলেজসিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত একটি বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজটি ৩ টি বিভাগ নিয়ে গঠিত:
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ(CSE)
- পুরকৌশল বিভাগ (CE)
- তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ (EEE)
ইন্সটিটিউট
এটি বাংলাদেশের অন্যতম গবেষনাকারী প্রতিষ্ঠান। পদার্থ ও পরিসংখ্যান শাস্ত্রে গবেষনার পাশা-পাশি এতে রয়েছে কয়েকটি প্রসিদ্ধ ইন্সটিটিউটঃ
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
- স্থাপত্য গবেষণা কেন্দ্র
- কম্পিউটার প্রকৌশল গবেষণা কেন্দ্র
- পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
- পরিসংখ্যান গবেষণা কেন্দ্র
সহযোগি বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology)
সাস্টের সাথে নিম্নোক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের একাডেমিক সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে:
- কার্লসরুয়ে প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, জার্মানি
- কালাব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালি
- চিংশু বিশ্ববিদ্যালয়, চীন
- Fachhochschule, বার্লিন, জার্মানি
- তামপেরে ফলিত বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ড
- বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক
শিক্ষাঙ্গন
৫টি একাডেমিক ভবন, ২টি প্রশাসনিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, একটি মিলনায়তনসহ অনেকগুলো ভবন সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্য্যক্রম চলছে। বর্তমানে ২৫ টি বিভাগে প্রায় ৮ হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে।
আবাসিক হলসমূহ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রদের ৩টি এবং ছাত্রীদের ২টি মোট পাঁচটি ছাত্রাবাস রয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য রয়েছে ডরমেটরি এবং আবাসিক সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রাবাস শাহপরান হল। প্রতিটি হলের তত্বাবধানে রয়েছেন একজন প্রভোস্ট। সাধারণত সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য হতে প্রভোস্ট নির্বাচন করা হয়। এটি দেশের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থী এবং স্টাফদের জন্য বিনামূল্যে সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে ওয়াই ফাই চালু করে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology)
সাস্টের পাঁচটি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল হচ্ছে :
- শাহপরান ছাত্র হল
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হল
- সৈয়দ মুজতবা আলী ছাত্র হল
- জাহানারা ইমাম ছাত্রী হল
- বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হল
ভাস্কর্য
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত সিলেটের প্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ভাস্কর্য চেতনা ‘৭১’ (ভাস্কর্য)’। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ সালের ২৬ শে মার্চ চেতনা ‘৭১ নামে অস্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে স্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু হয়।
সংগঠন
২০১৬ সালে মঞ্চায়িত একটি নাটকের দৃশ্য।শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন খুবই সক্রিয় সহশিক্ষামূলক কাজে। বছরের প্রায় প্রতিটি দিনই কোনো না কোনো ধরনের উৎসব লেগে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, টুর্নামেন্ট, জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগীতা, ফটোগ্রাফি প্রতিযোগীতা, নাট্যোৎসব, স্কিলস হান্ট ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়টির নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এছাড়া বিভিন্ন অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক ও জাতীয় কেন্দ্র হিসেবেই এ ক্যাম্পাস বেশ পরিচিত। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (shahjalal university of science and technology)
সাংবাদিক সংগঠন
- শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব
বিজ্ঞান বিষয়ক সংগঠন
- সাস্ট সায়েন্স অ্যারেনা
- কোপার্নিকাস এস্ট্রোনমিক্যাল মেমোরিয়াল অব সাস্ট (ক্যাম-সাস্ট)
- বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
- বিজ্ঞানের জন্য ভালবাসা
- বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
- রোবো সাস্ট
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন
- গ্রিন এক্সপ্লোরার সোসাইটি, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন
নাট্য সংগঠন
- থিয়েটার সাস্ট
- দিক থিয়েটার
- আজ মুক্তমঞ্চ
- অঙ্গীকার
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
- স্বপ্নোত্থান
- সঞ্চালন
- কিন
অন্যান্য সংগঠন
- সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব
- সাস্ট সাহিত্য সংসদ
- চোখ ফিল্ম সোসাইটি
- শাহজালাল ইউনিভার্সিটি স্পীকার্স ক্লাব
- ধুমপান ও মাদকবিরোধী সংগঠন
- ধূমপান ও নিরকোটিন বিরোধী সংগঠন
- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, সাস্ট
- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
- উদীচী
- চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
- ক্যারিয়ার ডিজাইন সেন্টার
- কার্টুন ফ্যাক্টরী
- চোখ ফিল্ম সোসাইটি
- ধ্রুবতারা
- এডুকেশন ওয়াচ
- মাভৈ: আবৃত্তি সংসদ (আবৃত্তি বিষয়ক একমাত্র সংগঠন)
- নোঙর
- নিরাপদ সড়ক চাই
- অন্বেশন
- প্রমিসিং ইয়থ
- রিম
- শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি অ্যাসেসিয়েশন (সুপা)
- শিকড়
- স্টুডেন্ট এইড
- স্পোর্টস সাস্ট
- সাস্ট লেখক ক্লাব
- ইউসাব
- শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি
- টুরিস্ট ক্লাব
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ত্ব
- ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল – অধ্যাপক, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ।
- অরুণ কুমার বসাক – সূচনা অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ।