চিকেন পক্স ভালো করার ৩টি অব্যর্থ ঘরোয়া উপায়
চিকেন পক্স হলে চিন্তার কিছু নেই যদি কিছু ঘরোয়া টোটকা জানা থাকে।
চিকেন পক্স কীভাবে ছড়ায় ?
যেমনটা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে চিকেন পক্স বা জল বসন্ত একটি ভাইরাল সংক্রমণ। আর এই সংক্রমণের পিছনে মূলত দায়ী ভেরিসেলা-জস্টার ভাইরাসের সংস্পর্শে এলেই চিকেনপক্স হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ভাইরাস খুব সহজেই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায় সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল।
এটি সর্দি, ফ্লু, কাশির মাধ্যমে একজন থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
চিকেন পক্সে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে একসঙ্গে এক ঘরে থাকলে এটি ছড়ায়।
চিকেন পক্সের গুটি হাতে লাগলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
রোগীর জামাকাপড়ের সংস্পর্শে এলেও এটি ছড়িয়ে যেতে পারে।
এছাড়া রোগীর ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
চিকেন পক্সের লক্ষণ
চিকেন পক্স হলে সাধারণত যে লক্ষণগুলি দেখা দেয় সেগুলি হল –
ত্বকের উপর তরল পদার্থ ভরা র্যাশ দেখা দেয়
গুটিগুলি সাধারণত লাল অথবা গোলাপী রঙের হয়ে থাকে
প্রচণ্ড জ্বালা এবং চুলকানি
অস্থির লাগে
জ্বর
ক্লান্তিভাব
খিদে কমে যায়
মাথাব্যথা
চিকেন পক্সের রিক্স ফ্যাক্টরস
চিকেন পক্স যাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে :
যাদের আগে কখনও চিকেন পক্স হয়নি।
চিকেন পক্সের টিকা যারা নেননি।
‘ভেরিসেলা-জস্টার ভাইরাস’ বাচ্চাদের খুব সহজেই আক্রান্ত করতে পারে।
শরীর দুর্বল হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সহজেই এই ভাইরাল সংক্রমণ হওয়া ভয় থাকে।
চিকেন পক্স প্রতিকারের ঘরোয়া উপায়
চিকেন পক্সের চিকিৎসা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত। যদিও কিছু ঘরোয়া উপায়ে এর প্রভাব কিছুটা হলেও কম করা সম্ভব। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই এই ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করুন। সেইসঙ্গে মনে রাখবেন ঘরোয়া প্রতিকার রোগ নিরাময়ের চিকিৎসা নয়, এতে কেবলমাত্র রোগের লক্ষণ কিছুটা কম হতে পারে। তাতে সাময়িক আরাম পেতে পারেন। এবার জেনে নিন চিকেন পক্সের ঘরোয়া প্রতিকারগুলি কী কী –
১. অ্যালোভেরা দিয়ে চিকেনপক্সের চিকিৎসা
সামগ্রী :
একটি অ্যালোভেরা পাতা
কীভাবে ব্যবহার করবেন :
পাতার ভিতর থেকে অ্যালোভেরা জেল বের করে কোনও এয়ারটাইট কৌটোতে ভরে রাখুন।
জেল র্যাশের উপর লাগান
কিছুক্ষণ ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিন।
বাকী জেল ফ্রিজে স্টোর করে রেখে দিন। সাতদিন পর্যন্ত তা ব্যবহার করতে পারবেন।
চিকেন পক্সের জ্বালা, যন্ত্রণা কমাতে দিনে ২-৩ বার অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন।
উপকারিতা :
অ্যালোভেরা যে ত্বকের জন্য উপকারী তা আমাদের জানা। চিকেন পক্সের সময়ও এটি দারুণ কাজ দেয়। ত্বক ঠান্ডা রাখে এবং ত্বকের জ্বালা, যন্ত্রণা দূর করে আরাম দেয়। এনসিবিআই এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে যা জ্বালা, যন্ত্রণা কম করতে সাহায্য করে । ছোটো বড় সকলেই এটি ব্যবহার করে উপকার পেতে পারবেন।
২. নিম
সামগ্রী :
একমুঠো নিম পাতা
জল (প্রয়োজনমতো)
কীভাবে ব্যবহার করবেন :
প্রয়োজনমতো জল মিশিয়ে নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে নিন।
পেস্টটি গুটিগুলির উপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
নিম পাতা জলে ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে স্নান করলেও উপকার পাবেন।
নিম পাতার পেস্ট দিনে দুবার লাগাতে পারেন এবং নিম পাতা মেশানো গরম জল দিয়ে একবার স্নান করুন।
উপকারিতা :
এনসিবিআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, নিম পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল গুণ। যা চিকেন পক্সের পিছনে দায়ী ভাইরাসের প্রভাব কম করতে পারে। সেইসঙ্গে সংক্রমিত ত্বকে জ্বালা কম করে আরাম দেয়। চুলকানি এবং র্যাশ দূর করতে নিম দারুণ ওষুধ। নিম পাতার পেস্ট পক্সের গুটি তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে । তাই চিকেন পক্সের চিকিৎসা নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
৩. বেকিং সোডা দিয়ে স্নান
সামগ্রী :
অর্ধেক কাপ বেকিং সোডা
স্নানের জন্য গরম জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন :
স্নান করা যাবে এমন গরম জল নিন।
এবার এক কাপ বেকিং সোডা স্নানের জলে মিশিয়ে নিন।
সেই জল দিয়ে ভালো করে স্নান করে নিন।
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রত্যেকদিন এর ব্যবহার করতে পারেন।
উপকারিতা :
স্নান করতে পারবেন এমন গরম জল নিন। খুব বেশি গরম জল নেবেন না। জলে সোডা মিশিয়ে স্নান করলে ত্বকের জ্বালা, যন্ত্রণা থেকে আরাম পেতে পারেন । অন্যদিকে এতে উপস্থিত অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল গুণ সংক্রমিত ত্বককে ফাঙ্গাল এবং ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। যদিও বেকিং সোডা সরাসরি কীভাবে চিকেন বক্সের জন্য উপকারী, সে বিষয়ে আরও গবেষণা করা দরকার।