বিতর নামাজের সূরা
তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা
তাহাজ্জুদ নামাজে বিশেষ কোনো সূরা পড়ার কথা হাদিসে কোথাও বলা হয়নি। যে কোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। নবী করিম ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম। কেরাত উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।
বেতের নামাজের সূরা
বিতরের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সূরা নেই। বিতরের নামাজ মূলত ইবাদতের জন্য, নামাজের জন্য। বিতরের নামাজ আদায়ের জন্য নবী [সা.] কোনো নির্দিষ্ট সূরা নির্ধারণ করে যাননি; বরং আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘কোরআন থেকে তোমাদের সাধ্যে যতটুকু কুলায়, তোমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়, তোমরা ততটুকু তিলাওয়াত করো।’
>> কিন্তু নবী [সা.] বেশিরভাগ সময় সুনির্দিষ্ট কিছু সূরা বিতরের নামাজে তিলাওয়াত করতেন। এই মর্মে নবীর [সা.] হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। যেহেতু নবী [সা.] এই সূরাগুলো তিলাওয়াত করতেন, সুতরাং কেউ যদি এই সূরাগুলো তিলাওয়াত করেন, তাহলে নবীর সুন্নাহ অনুসরণ করার জন্য তাঁর এই কাজ সুন্নাহ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে এবং ফজিলতের কাজ হবে।
>> যেমন; নবী [সা.] বিতরের নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা আলা পড়তেন, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তেন। সুতরাং এই পদ্ধতি যদি কেউ অনুসরণ করেন, তাহলে করতে পারেন। কোনো কোনো রেওয়াতে এসেছে নবী [সা.] প্রথম রাকাতে সূরা আলা পড়তেন, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা জিলজাল এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়তেন।
নফল নামাজের সূরা
নফল নামাজ যেকোনো সূরা বা আয়াত দিয়ে পড়া যায়। নফল নামাজে সূরার তারতিব বা ধারাক্রম জরুরি নয়। নফল নামাজের সূরা কিরাআত নীরবে পড়তে হয়; “তবে রাতের নফল নামাজ ইচ্ছা করলে সরবেও পড়া যায়ʼʼ। বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্ন নফল নামাজের বিভিন্ন সূরা কিরাআত ও বিশেষ বিশেষ নিয়ম বর্ণিত আছে। সম্ভব হলে তা অনুসরণ করা উত্তম; “তবে জরুরি নয়ʼʼ। নফল নামাজে যত ইচ্ছা তত দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করা যায়। এতে রাকাত দীর্ঘ করার জন্য এবং তিলাওয়াতের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য একই রাকাতে বিভিন্ন সূরা ও বিভিন্ন আয়াত পড়া যায় এবং একই রাকাতে একই সূরা বারবার পড়া যায়। নফল নামাজে কিরাআতে তিলাওয়াতের “তারতিবʼʼ বা ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়। নফল নামাজে রুকু, সিজদাসহ প্রতিটি রুকন বা পর্ব দীর্ঘায়িত করা সুন্নত ও মোস্তাহাব। এ জন্য রুকু ও “সিজদায়ʼʼ তাসবিহ অনেকবার পড়া যায় এবং অন্যান্য পর্বে বেশি পরিমাণে বিভিন্ন দোয়া “যা কোরআন-হাদিসে আছেʼʼ পাঠ করা যায়। [কানজ]
ফজরের নামাজের সূরা
ফজরের নামাজে যেকোন সূরা দিয়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে। কিন্তু আপনাকে সিরিয়াল অনুযায়ী নামাজ পড়তে হবে। যেমন ‘প্রথম’ রাকআতে সূরা লাহাব পড়লে ‘দ্বিতীয়’ রাকআতে সূরা ইখলাস। এভাবে পড়তে হবে।কারণ সূরা মেলানো ওয়াজিব। আর ওয়াজিব তরক করলে সাহু সিজদা না দিলে নামাজ হয় না। তাই সূরা মিলিয়ে নামাজ পড়বেন।
তারাবির নামাজের সূরা
তারাবি নামাজের বিশেষ কোনো সুরা পড়ার কথা হাদীসে কোথাও বলা হয়নি। যে কোন সূরা দিয়ে আপনি নামাজ আদায় করতে পারবেন। তবে তারাবি নামাজ যেহেতু লম্বা একটি নামাজ এবং অনেক সময় ধরে আদায় করতে হয়। তাই কারো যদি সমস্যা থাকে তাহলে ছোট ছোট সূরা দিয়ে নামায আদায় করতে পারেন। বিশেষ করে কুরআনের ৩০ নম্বর পারা বা শেষ পারর সূরা সমূহ গুলো দিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করতে পারেন।