বিষ্ময়কর কিছু সংকরায়ন
আধুনিক বিশ্বের অন্যতম চমক প্রানীজগতের সংকরায়ন। একই গোত্রের দুটি আলাদা প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে সংকরায়নের ফলে উভয় প্রাণীর বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন নতুন একটি প্রাণীর সৃষ্টি হয়।
অনেকসময় এসব সংকরায়িত প্রাণীর এমন সব নতুন বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় যা তার পিতা-মাতা থেকে স্বতন্ত্র।
বাণিজ্যিকভাবে বন্য প্রাণীর সংকরায়ন অবৈধ, কেননা তা প্রকৃতির স্বাভাবিক খাদ্য শৃংখল ও বাস্তুসংস্থানের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে এবং প্রাণীর মূল জাত বিনষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
আজ আমরা জেনে নেব প্রাণিজগতের কিছু সংকরায়িত ফসলের কথা।
টাইগন
পুরুষ বাঘ ও মহিলা সিংহের হাইব্রিড জাতকে বলা হয় টাইগন। এদের পিতা মাতা একই বর্গের কিন্তু তাদের প্রজাতি আলাদা।
টাইগনদের গায়ে ডোরাকাটা দাগ থাকে এবং গায়ের রং থাকে গাঢ় কমলা। তারা সিংহের গর্জন এবং বাঘের হুংকার উভয় দিকেই পারদর্শী।
টাইগনরা সাধারণত আকৃতিতে ছোট হয়। বর্তমানে বিশ্বে একশোটির মতো টাইগন রয়েছে। বন্য পরিবেশে এদের কোনো অস্তিত্ব নেই।
লাইগার
লাইগার বাঘ ও সিংহের আরেকটি হাইব্রিড জাত। পুরুষ সিংহ ও মহিলা বাঘের ক্রসব্রিড হলো লাইগার। এটি প্রনীজগতের সবচেয়ে বড় সংকর জাতের উদাহরণ।
লাইগাররা দেখতে দৈত্যাকার এবং চিত্তাকর্ষক। এর গায়ে হালকা দাগ দেখা যায়। এর মাথা ও লেজ অনেকটা সিংহের মতো কিন্তু শরীর বাঘের মতো।
লাইগাররা খুবই শক্তিশালী। এরা মায়ের গর্ভেই এতো বড় থাকে যে অস্ত্রপাচার ছাড়া এদের স্বাভাবিক জন্ম হয়না। পৃথিবীতে একশোটির মতো লাইগার রয়েছে যাদের জন্ম হয়েছে মূলত বদ্ধ পরিবেশে।
লিওপন
লিওপন হলো পুরুষ চিতা ও মহিলা সিংহের ক্রসব্রিডিং এর ফসল। এদের মাথা বেশিরভাগ সিংহের মতো কিন্তু শরীর চিতার মতো। এটা খুবই দুষ্প্রাপ্য একটি সংকরায়ন।
বিফালো
বিফালো হল ষাড় ও আমেরিকান বাইসনের একটি সংকর জাত যার ৫/৮ অংশ ষাঁড় এবং ৩/৮ অংশ বাইসন।
এই জাতটি তৈরি করা হয়েছিল মূলত দুটি জাতের বৈশিষ্ট্য একত্রিত করার জন্য। এদের মাংস খুবই উৎকৃষ্ট মানের।
পিজলি
দানবাকৃতির গ্রিজলি ভালুক ও পোলার ভালুকের শংকর হলো পিজলি। প্রাকৃতিকভাবেও এই ব্রিডের অস্তিত্ব রয়েছে, বিশেষভাবে কানাডায় এই জাত দেখা যায়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে পোলার ভালুকের খাদ্যাভ্যাস অনেকটা গ্রিজলি ভালুকের মতো হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে প্রায়ই তারা একই এলাকায় বিচরণ করছে।
জাগলায়ন
পুরুষ জাগুয়ার ও মহিলা সিংহের হাইব্রিড। এই জাত খুবই সুন্দর এবং ততোটাই দুষ্প্রাপ্য।
ক্যামা
একটি পুরুষ উট এবং মহিলা লামার হাইব্রিডকে ক্যামা বলা হয়। দুবাইতে এর প্রথম পরীক্ষামূলক গবেষণা করা হয়। ১৯৯৮ সালের ১৪ ই জানুয়ারি প্রথম ক্যামার জন্ম হয়।
জর্স
পুরুষ জেব্রা ও মহিলা ঘোড়ার সংকরায়নের ফলে জর্স জাতটি পাওয়া যায়।
মিউল
আমরা যাকে বাংলায় খচ্চর বলে থাকি তা হলো একটা পুরুষ গাধা ও মহিলা ঘোড়ার সংকরায়নের ফল। এটি অনেক পরিচিত একটি জাত, অনেক স্থানেই দেখা মেলে।