গরমকালে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিত?

আপনার কি ডায়াবেটিস রয়েছে? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে গরমে মেনে চলুন এই কয়েকটি ডায়েট টিপস।

 

ডায়াবেটিস রোগীদের গরমের দিনে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা যায়। যে কারণে রক্তশর্করা মাত্রার মধ্যে রাখা ভীষণ জরুরি। পর্যাপ্ত জল, খাবার খেতেই হবে।

 

গরমকালে সকলকেই একাধিক সমস্যায় ভুগতে হয়। আর তার মধ্যে প্রধান কিন্তু হল শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়া। বাইরের তাপমাত্রা এতটাই বেশি থাকে যে শরীর খুব সহজেই শুষ্ক হয়ে যায়। আর শরীর থেকে জল টেনে নিলে তখন একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ করে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া, সেই সঙ্গে মাথা ব্যথা, গা গোলানো, বমি, পেটের সমস্যা, হজমের সমস্যা- সহ একাধিক রোগ উপসর্গ কিন্তু রয়ে যায় শরীরে। শরীর একবার অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে সহজে ঠাণ্ডা হতে চায় না। কারণ ডায়াবিটিসের জটিলতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের স্নায়ু। ফলে প্রভাব পড়ে ঘর্মগ্রন্থিতে। আর যে কারণে ডায়াবিটিসের রোগীদের কিন্তু বেশি ঘাম হয়।

 

অতিরিক্ত তাপ আমাদের শরীরে ইনসুলিন ক্ষরণে পরিবর্তন ঘটায়। সেই সঙ্গে আসে একাধিক শারীরিক পরিবর্তনও। যে কারণে কিন্তু রোগ সমস্যা অহেতুক জটিল হয়। গরমের দিনে সকলকেই প্রচুর পরিমাণ জল খেতে হবে। সেই সঙ্গে এমন কিছু খাবার বেছে নিতে হবে যাতে শরীর ঠান্ডা থাকে। আবার সেই সব খাবারের যাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হয় সেদিকেও কিন্তু নজর দিতে হবে।

 

স্টার্চ নেই এই রকম কার্বোহাইড্রেট কিন্তু বেছে নিতে হবে। সেই সঙ্গে ফলমূল, গোটাশস্য, শিম, মটরশুঁটি, কম চর্বিযুক্ত দুধ, দুধের তৈরি কোনও খাবার এসবও কিন্তু রাখতে হবে তালিকায়। এছাড়াও রিফাইনড ময়দা আর চিনিও এড়িয়ে চলুন।

 

খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। ফাইবার হজমের সময় রক্তে শর্করার শোষণ বাড়িয়ে রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য এসবও কিন্তু বেশি পরিমাণে খেতে হবে। বাদাম আর লেবুও বেশি পরিমাণে খান।

READ MORE:  চা আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী?

 

গরমের দিন যেমন তেষ্টা মেটাবে ফল তেমনই কিন্তু শরীরও রাখবে সতেজ। সেই সঙ্গে শরীর পাবে পুষ্টিও। আর তাই গরমের দিনে তরমুজ, টমেটো, পালং শাক, শসা, বেল, লাউ, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শ এসব বেশি পরিমাণে খান। কারণ এই সব খাবার থেকেই ভিটামিন, ভাইবার, ভিটামিন সি, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সবই পাবে শরীর। সেই সঙ্গে লাইকোপোপিন, অ্যান্থোসায়ানিনও পাবে। তরমুজ আর শসাতে ৯০ শতাংশের বেশি জল থাকে।

 

আম খান, কিন্তু পরিমিত খান। পরিমাণের তুলনায় বেশি আম একেবারেই নয়। কারণ তাতে সুগার বাড়তে পারে। বরং রোজ ছোলা, বাদাম, মটর, মুগ এসব ভিজিয়ে খান। শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হবে না।

 

ছোট প্লেটে খাবার খান। সুন্দর করে সাজিয়ে খাবার খান। আর সেই খাবারের মধ্যে ভাত, ডাল, মাছ, তরকারি, স্যালাড আর একবাটি টকদই যেন অবশ্যই থাকে। একসঙ্গে সব কার্বোহাইড্রেট কিন্তু খাবেন না। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ে।

 

সব সময় একরকম খাবার খেতেও ইচ্ছে করে না। আর তাই গ্রিলড সবজি, স্যালাড, দই আর ফল দিয়ে স্যালাড, মাল্টিগ্রেন চাপাটি, ছোলা-বাদামের চাট এসব কিন্তু অবশ্যই রাখবেন ডায়েটে।

 

এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।