ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

চুল কাটার ইসলামিক স্টাইল

 রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)

 

বর্তমানে আমাদের দেশে যে হেয়ার স্টাইলগুলো জনপ্রিয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, শর্ট কাট বা আন্ডার কাট, ক্লাসিক কাট, ফেড কাট, ক্রু কাট, বাজ কাট, লেয়ার স্পাইক, ইমো সুইপ ইত্যাদি। যেগুলোর কোনোটিকেই ইসলাম সমর্থিত কাট বলা যায় না। কারণ প্রতিটি স্টাইলেই মাথার কিছু অংশে বড় চুল ও কিছু অংশে ছোট চুল রাখা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু অংশ ছেঁটে ফেলা হয়। রাসুল (সাঃ) এভাবে চুল কাটতে নিষেধ করেছেন। 

হজরত ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাঃ)-কে ‘কাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী ওবায়দুল্লাহ বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাজা’ কী? তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় ওবায়দুল্লাহ তাঁর কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। ওবায়দুল্লাহকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো, বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বলেন, আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন। ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি এ কথা আবার জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দোষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাজা’ বলা হয়—কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল এক পাশ থেকে অথবা অন্য পাশ থেকে কাটা। (বুখারি, হাদিস : ৫৯২১)

 

পুরুষের চুল রাখা ও কাটার ব্যাপারে ইসলামী শরিয়ত তিনটি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। এক. বাবরি চুল রাখা। বাবরি চুল রাখার তিনটি সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে। ১. ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, ৪১৮৫)

READ MORE:  সালামি কি হারাম?

 

২. লিম্মা তথা ঘাড় ও কানের লতির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুল রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৭)

৩. জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত রাখা। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৩)

 

দুই. মুণ্ডিয়ে ফেলা। ইসলামের দৃষ্টিতে মাথা মুণ্ডিয়ে ফেলাও সুন্নত। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৫/১৪৯, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১২/৪৩)

 

তিন. সব চুল সমান করে কাটা। যাদের হেয়ার স্টাইলের শর্ট কাট বা আন্ডার কাট, তারা একটু সচেতনভাবে কাটলেই গুনাহ থেকে বেঁচে যেতে পারেন। আর নিয়ত থাকতে হবে ইসলামের প্রতি সম্মান। কোনো অমুসলিম সেলিব্রেটির অনুসরণ নয়। কারণ প্রতিটি কাজই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কেউ যদি সুন্নত তরিকায় মাথা মুণ্ডায় কিন্তু তার নিয়ত থাকে হলিউড অভিনেতা ভিন ডিজেলের অনুকরণ, তবে সে সুন্নতের সওয়াব পাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *