পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা কী বলে ইসলাম
পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা হারাম নয়। তবে কেউ যদি কেবলা কে অসম্মান করার জন্য সে দিকে পা দিয়ে রাখে তা কুফরের শামিল। পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা কী বলে ইসলাম
ইসলামের একটি নীতি হচ্ছে কোন কিছুকে হালাল বা হারাম ঘোষণা করতে হলে সেটির উপর হালাল বা হারাম ঘোষণা করার জন্য দলিল থাকতে হবে। আর কেবলার দিকে পা দিয়ে রাখা বিষয়ে কোনো দলিল কুরআন বা হাদীসে পাওয়া যায়নি বলে এটিকে হারাম বলে ঘোষণা করা যাবেনা।
কেবলার দিকে মুখ বা পিঠ রেখে প্রস্রাব বা পায়খানা করাকে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্পষ্ট হাদিস রয়েছে। অনেকে তার ওপর ভিত্তি করে কিবলার দিকে পা দেওয়াকেও নিষেধ মেনেছেন। এখানে বুঝতে হবে প্রস্রাব-পায়খানার বিষয়ে বলা হয়েছে পা রাখার বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। তাই কিবলার দিকে পা দেওয়া বিষয়ে একে হারাম ঘোষণা করে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা ঠিক নয়।
উপরন্তু হানাফী ফিকহ থেকে জানা যায়, কেউ যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অসম্মত হয় তাকে বসে নামাজ পড়তে হবে, বসে নামাজ পড়তে অসম্মত হলে শুয়ে কিবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে কাত হয়ে নামাজ পড়তে হবে, এভাবেও যদি নামাজ পড়তে অসম্মত হয় তাহলে কিবলার দিকে পা দিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে মাথার নিচে কোন কিছু দিয়ে মাথা কিছুটা উঁচু করে রেখে নামাজ পড়তে হবে। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, শেষ পর্যায়ে ‘কিবলার দিকে’ পা দিয়ে নামাজ পড়ার কথা বলা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, কিবলার দিকে পা দেওয়া নাজায়েজ নয়।
তবে বুঝতে হবে কেবলার দিকে পা দেওয়ার উদ্দেশ্য যদি কিবলাকে অসম্মান করা হয় তাহলে অবশ্যই কেবলার দিকে পা দেওয়া যাবেনা। এই অসম্মানের দৃষ্টিভঙ্গির অঞ্চলভেদে তারতম্য রয়েছে। যেমন- আরবদেশে কারো দিকে পা দেওয়া কে অসম্মান করা হিসেবে গণ্য করা হয় না। এমনকি কাউকে ডাক দেওয়ার সময় তারা হাতের সাথে পা কেউ ব্যবহার। এর জন্য আরব দেশে কেবলার দিকে পা দেওয়া কে অসম্মান করা হিসেবে গণ্য করা হয় না। এর জন্য আরব দেশের সংস্কৃতির পরিপ্রেক্ষিতে আরব দেশের ইসলামী বিশ্লেষকেরা কেবলার দিকে পা দেওয়া কে জায়েজ বলে ফতুয়া দিয়েছেন। এমনকি সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বাজ (র.) এক প্রশ্নের উত্তরে মসজিদে হারামে বসেও কাবার দিকে পা ফিরিয়ে রাখাকেও কোনো সমস্যা নেই বলেছেন।
কিন্তু বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যেহেতু কারো দিকে পা দেওয়া কে আমরা অসম্মান হিসেবে গণ্য করি সেহেতু কিবলার দিকে পা দেওয়া কে অসম্মান করা হিসেবে গণ্য হবে। তাই আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কিবলার দিকে পা না দেওয়ারই চেষ্টা করা উচিত।