ইসলামইসলামিক বিষয়াদিকী এবং কেন?

তাশাহুদ পড়ার সময় আঙ্গুল কখন উঠাবো?

আমাদের সমাজে নামাজের বৈঠকে ডান হাতের আঙ্গুল উঠানো নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা আছে। সমাজে প্রচলিত ধারণা হলো নামাজের বৈঠকে তাশাহুদ পড়ার সময় যখন আশহাদু আসবে তখন আঙ্গুল উঠাতে হবে আবার ইল্লাল্লাহ বলা শেষ হলে আঙ্গুল নামিয়ে ফেলতে হবে। এ বিষয়ে সহিহ হাদিস বা দলিল তো দূরের কথা কোন জাল হাদিস বা দলিলেও কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি। 

 

দুই রাকাত সালাতে দ্বিতীয় রাকাতে , তিন রাকাত সালাতের দ্বিতীয় রাকাতে এবং তৃতীয় রাকাতে, চার রাকাত সালাতে দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাকাতে যে বৈঠকে বসা হয় উক্ত বৈঠকগুলোতে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে বৈঠকের বেলায় শুরু থেকে সালাম ফেরানোর  আগ পর্যন্ত সব সময় ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল উঠিয়ে রাখতে হবে। 

 

তবে জানা যায় যে, ইমাম হানাফী (রহ.) এর মতে লা বলার সময় শাহাদাত আঙ্গুল তুলতে হবে এবং ইল্লাল্লাহ বলার পর নামিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু তুহফাতুল আহওয়াযী ১/২৪২ অনুযায়ী আল্লামা আব্দুর রহমান মোবারকপুরী এর মতে, ইমাম হানাফী (রহ.) এর এ মত  প্রমানের কোন সহিহ হাদিস তিনি পাননি। 

 

এই হাতের তর্জনী আঙ্গুল উঠানোর নির্দিষ্ট নিয়ম টি সম্পর্কে আমরা এবার বিস্তারিত জানবো।

 

তাশাহুদ পড়ার সময় আঙ্গুল উঠানোর সঠিক নিয়মঃ

হাতের তর্জনী আঙ্গুল উঠানোর দুইটি নিয়ম রয়েছে এবং দুইটিই সহিহ। যেকোনো একটি অনুসরণ করা যাবে।

১. ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল ছাড়া সবগুলো আঙুল মুষ্টিবদ্ধ করে তর্জনী আঙ্গুল উঠিয়ে কেবলার দিকে মুখ করে ইশারা করতে হবে। 

২. কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙুল মুষ্টিবদ্ধ করে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বয়ের অগ্রভাগে আঙ্গুল দ্বয় একত্রে এমন ভাবে রাখতে হবে যাতে গোল আকার ধারণ করে। এমতাবস্তায় তর্জনী আঙ্গুল উঠিয়ে কিবলার দিকে মুখ করে ইশারা করতে হবে। সহিহ মুসলিম হাদিস ১৩৩৮ থেকে জানা যায়, মহানবী (সাঃ)  উপরোক্ত পদ্ধতিতে আরবি ৫৩ সংখ্যার মত তর্জনী বা শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন।

READ MORE:  এপেন্ডিক্স এর লক্ষণ এবং এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন

 

আঙ্গুল ইশারার সময় আঙ্গুল নাড়ানোর পদ্ধতিঃ

সুনানে নাসায়ী কোবরার হাদিস ১১৯৩, সুনানে আবু দাউদ এর হাদিস ৯৮৯, মুসনাদে আবী ওয়ানার ১৫৯৪ হাদিস থেকে জানা যায়, মহানবী (সাঃ) তাশাহুদ পড়ার সময় আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেও নাড়াতেই থাকতেন না। এ নাড়াতেই না থাকা বিষয়ে ইসলামিক বিশ্লেষকরা অনবরত না নাড়ানোর কথা বলেছেন। তাদের মতে, অনবরত জোড়ে জোড়ে আঙ্গুলকে উপর নিচে নাড়ানো যাবে না, এতে করে নামাজে থাকা পাশের মানুষের মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। বৈঠকের যেসব স্থানে দোয়া আসবে ঐ সব স্থানে আঙ্গুলের স্বীয় স্থানে এমন ভাবে আস্তে আস্তে  নাড়াতে হবে যেন একেবারে নিচে মিলে না যায়। 

 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বৈঠকে কোন কোন সময় দোয়া আসে যে সময় আঙ্গুল অল্প নাড়াতে হবে? বসা অবস্থায় পড়ার সময় মোট ৫ জায়গায় দোয়া আসে। 

১. আসসালামু আলাইকা থেকে ওয়া বারাকাতুহু পর্যন্ত। 

২. আসসালামু আলাইনা থেকে ছালিহীন পর্যন্ত। 

৩. আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাদ 

৪. আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আ’লি মুহাম্মাদ 

৫. আল্লাহুম্মা ইন্নী থেকে গাফুরুর রাহিম পর্যন্ত। 

 

বি. দ্রঃ আল্লাহই সবকিছু ভাল জানেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *