ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

হাফ হাতা শার্ট/গেন্জি পড়ে নামাজ হবে?

Quran । Hadis। Hadith। Allah। Mohammad ( S.)। Sunnah। Halal । Haram। Shirt। Half shirt। 

 

জি, হাফ শার্ট অথবা গেঞ্জি পরিধান করে নামাজ পড়লে— নামাজ আদায় হবে। নামাজের কোনো অসুবিধা নেই। 

 

কারণ, একজন পুরুষের জন্য যেটা প্রয়োজন— সেটা হলো- সতর ঢাকতে হয়। সতর হলো- নাভি থেকে আরম্ভ করে হাঁটু পর্যন্ত। এটা ঢাকা থাকতে হবে, এটা ফরজ। এরপরে শালীন পোষাক পরিধান করে সুন্দর পোশাক পরিধান করে নামাজ পড়তে আল্লাহ বলেছেন।

خذوا زينتكم عند كل مسجد

 

অর্থ : ‘যখনই তোমরা আল্লাহর দরবারে সিজদা করতে নামাজ পড়তে যাও, তোমরা তোমাদের সৌন্দর্য গ্রহণ করো।’ সৌন্দর্য গ্রহণ অর্থ হলো- শালীন ও সুন্দর পোশাক পরিধান করে নামাজ আদায় করা।

 

এখন হাফ শার্ট পড়ে নামাজ পড়লে মাকরুহ হবে কিনা— যেটা আপনি প্রশ্ন করেছেন। আসলে হাফ শার্ট পড়াকে আমাদের সমাজে কি অশালীন পোশাক মনে করা হয় কিনা, যেহেতু এটাকে অশালীন পোশাক মনে করে না। অফিসে মানুষ হাফ শার্ট পড়ে যেতে পারে। অথবা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং-এ তার হাফ শার্ট পড়ে যেতে পারেন। এতে কারও আপত্তি থাকে না। কাজেই হাফ শার্ট পড়ে নামাজ পড়াটা অশালীন পোশাক নয়, এটা সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই এটাতে নামাজ মাকরুহ হওয়ার প্রশ্ন নেই।

 

হ্যাঁ, অনেকে মনে করেন যে— যদি ফুল হাতা হয়, তাহলে সুন্দর বেশি দেখায়; তাহলে এটা ভালো। তবে হাফ শার্ট পরিধান করে নামাজ পড়লে— নামাজ মাকরুহ হবে, এই ধারণার কারণে অনেকে নামাজ পড়ে না। কারণ, হাফ শার্ট তাই নামাজ পড়ছে না; এটা কত মূর্খতা চিন্তু করে দেখুন। খেয়াল রাখতে হবে— এটা যেন না হয়। ফুল হাতা শার্ট পরিধান করে নামাজ পড়লে হয়ত ভালো হতো, তবে আরও পরিপূর্ণ পোশাক যদি থাকে; সেটা হলে আরও ভালো হতো। কিন্তু এতে করে নামাজে কোনো গুনাহ হবে না। নামাজের কোনো ক্ষতি হবে না।

 

(সূত্র : সুরা আরাফ, আয়াত ৩১; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১৭৮৬)

 

নামাজ হওয়ার জন্য পুরুষের ক্ষেত্রে নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা যথেষ্ট। এভাবে যদি কেউ বাধ্য হয়ে নামাজ পড়েন যে, তার একটি লুঙ্গি বা একটি গামছা আছে বড়, তাহলে এভাবেই তার নামাজ পরিপূর্ণ সহীহ হবে। আর যার নামাজ পড়ার সময় অন্য পোষাক পড়ার সুযোগ রয়েছে তার জন্য হুকুম হলো, আল্লাহ তায়ালা সূরা আ’রাফের ৩১ নং আয়াতে বলেন, তোমরা প্রত্যেকে সিজদার স্থলে বা মসজিদে (নামাজের সময়) সৌন্দর্য গ্রহণ কর (পোষাক ও সাজসজ্জা পরিধান করে নাও)। এখানে নামাজের সময় উত্তম পোষাক পরার কথা বলা হয়েছে। সে জন্য একটা মানুষ যখন টি শার্ট বা শার্ট পরিধান করা থাকে এটা ভিজ্যুয়াল পোষাক। উনি যখন নামাজের ইচ্ছা করে নামাজ পড়বেন তখন যেন হাতাওয়ালা একটা জামা গায়ে দেন বা বড় চাদর উপরে দেন, যেন তাকে শোভনীয় মনে হয়। যেমন কেউ যদি বিশিষ্ট কারও সামনে যায় তখন সে তার স্বাভাবিক পোষাকে যায় না, গামছা গায়ে দিয়ে বা ঘরের ভেতরের গেঞ্জি পরেই চলে যায় না। সুতরাং আল্লাহর সান্নিধ্যে আমরা যখন যাবো, মনের হালতটা এমন হওয়া উচিত যে, আমি একটু শোভনীয় ও সৌন্দর্যমন্ডিত এবং আমার ভালো পোষাকটি পরে জায়নামাজে দাঁড়াই, মসজিদে যাই। এটা হলো আদব। নামাজ জায়েজ হওয়ার জন্য ফরজ সতরটুকু (পুরুষের ক্ষেত্রে নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত) ঢাকা থাকলেই হবে। আর নামাজ সুন্দর হওয়ার জন্য কনুই পর্যন্ত ঢেকে রাখা, শরীরটাকে ভালোভাবে ঢেকে রাখা, অন্যথায় সুযোগ থাকাবস্থায় শরীর ভালোভাবে ঢেকে নামাজ পড়লে নামাজ মাকরুহ হবে। তবে কেউ যদি অপারগতায় গেঞ্জি বা হাফ হাতা শার্ট পরে নামাজ পড়ে সেটা ভিন্ন বিষয়, তার নামাজ হয়ে যাবে। এ বিষয়টা আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link