বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা

কৃত্রিম বৃষ্টি কিভাবে ঘটানো হয়?

কোনো একটি এলাকায় কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১০%-২০% বাড়ানো সম্ভব। খরাপ্রবণ এলাকায় ফসল ফলাতে এ কৌশল বেশ কার্যকর। কৃত্রিম বৃষ্টিপাত প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভারী বৃষ্টিপাত ও হারিকেনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘূর্ণিঝড় এলাকায় প্রচুর মেঘ থাকে, থাকে নিম্নচাপও। যখন সে ঘূর্ণিঝড় প্রবল শক্তি নিয়ে লোকালয়ে আঘাত করে তখন ক্ষয়ক্ষতির শেষ থাকে না। এমন অবস্থায় সেখানকার ঘূর্ণিঝড়ের মাঝে ক্লাউড সিডিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে বৃষ্টি ঝরিয়ে ঘূর্ণিঝড়কে দুর্বল করে ফেলা যায়। সম্প্রতি এই কাজটিই করছে ইন্দোনেশিয়া।

It is possible to increase the annual average rainfall by 10%-20% through artificial rainfall in any one area. This technique is very effective in growing crops in drought prone areas. Attempts are made to deal with natural disasters such as cyclones, floods, heavy rains and hurricanes using artificial precipitation processes. Cyclone area has a lot of clouds, low pressure is also there. When that cyclone hits the locality with great force, there is no end to the damage. In such a situation, the cyclone can be weakened by using the cloud seeding process between the cyclones. This is what Indonesia is doing recently.

 

 

কৃত্রিম বৃষ্টিপাত হলো প্রকৃতির ওপর বৈজ্ঞানিক প্রভাব খাটিয়ে সংঘটিত জোর করে বৃষ্টি নামানো! এ জন্যে প্রথমে মেঘ সৃষ্টি করতে হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এই মেঘকে ঘনীভূত করে বৃষ্টিপাতের উপযোগী অবস্থায় নিয়ে আসতে হয় এবং সবশেষে বৃষ্টি ঝরানো হয়। তবে সচরাচর আকাশে ভাসমান মেঘকে পানির ফোঁটায় পরিণত করেই কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়।

ক্লাউড সিডিংয়ে সাধারণ রাসায়নিক যেমন সিলভার আয়োডাইড, পটাশিয়াম আয়োডাইড অথবা শুষ্ক বরফ বা কঠিন কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। তরল প্রোপেন গ্যাসও ব্যবহার করা হয়। এ গ্যাস সিলভার আয়োডাইডের চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় বরফের স্ফটিক তৈরি করতে পারে। তবে অনেক সস্তা ও বেশ কার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় এ কাজে এখন সোডিয়াম ক্লোরাইড বা খাবার লবণের ব্যবহার বাড়ছে।  ক্লাউড সিডিংয়ের সময় মেঘের ভেতরের তাপমাত্রা -২০ থেকে -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসেন তখন তুষারপাত বেড়ে যেতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। 

ক্লাউড সিডিংয়ের উপাদানগুলো উপযুক্ত স্থানে উড়োজাহাজে করে অথবা বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। মেঘের ভেতর দিয়ে যখন উড়োজাহাজটি যায় তখন সিলভার আয়োডাইড ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ রাসায়নিকের ক্ষুদ্র স্ফটিকদানাগুলোই মেঘের সিড হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এসব দানায় ভাসমান জলীয়বাষ্পে পানি কণাগুলো জড়ো হয়ে বড় ফোঁটায় পরিণত হয়। একসময় ওজন বেড়ে গিয়ে মহাকর্ষের টানে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। 

 

১৮৯১ সালে লুই গাথমান প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টিতে তরল কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহারের প্রস্তাব করেন। ১৯৩০ এর দশকে বার্গারন-ফাইন্ডিসেন বরফের স্ফটিক কণার উপস্থিতিতে অতীব ঠাণ্ডা পানির কণা জমে এবং শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়ে নামে- এ ধারণার ওপর ভিত্তি করে তত্ত্ব তৈরি করেন। এ তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেন জেনারেল ইলেকট্রিকের গবেষক ভিনসেন্ট শিফার। ১৯৪৬ সালের জুলাইতে তিনি কৃত্রিম বৃষ্টির মূলনীতি আবিষ্কার করেন। পরে  নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী আরভিং ল্যাংমুর সঙ্গে যৌথভাবে কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টির কৌশল নিয়ে গবেষণা করেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link