আমরা বাঙালিরা কেনও পনির খাই না?
পনির- Cheese
পনির একটি উপাদেয় খাদ্য। কিন্তু আমরা বাঙালীরা এই উপাদেয় খাদ্যটি খাই না। আমাদের বাঙালীদের উচিত পনির আমাদের খাদ্যাভাসে যুক্ত করা। কিন্তু কেনও আমি এমনটি বলছি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ইউরোপে পনির একটি খুবই জনপ্রিয় খাবার। দুধ থেকে তৈরী খাবার প্রতিদিনের ক্যালসিয়াম চাহিদার মধ্যে অনেকটাই পূরণ করে। এগুলোর মাঝে পনির একটি উল্লেখযোগ্য খাবার। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবার থাকা উত্তম কারণ পনির অতিশয় ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার।
তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক পনির কি ও এর পুষ্টিগুন সম্পর্কে।
Milk-based foods meet much of the daily calcium needs. Among these, cheese is a significant food. It is better to have dairy foods like cheese in your daily diet because cheese is a high calcium food.
So let’s find out what cheese is and its nutritional value.
পনির কি?- What is cheese?
পনির একটি প্রাচীন খাদ্য। গাভী এবং অন্যান্য প্রাণী থেকে নেওয়া দুধ থেকে প্রায় ১০০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে এটি তৈরি করা শুরু হয়েছে।
পনিরকে সাধারনত বার্গার, পিৎজা, মেক্সিকানডিশ, সালাড এবং স্যান্ডউইচ এর মত জনপ্রিয় খাবারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এটি একটি স্ন্যাকস বা একটি এপিটাইজার হতে পারে। এটি সসেজ, সুপ, পেস্ট্রিস এবং অন্যান্য খাবারের সাথে যোগ করা যেতে পারে।
চীজ মূলত গরু, ভেড়া, ছাগল, এবং অন্যান্য প্রাণীর দুধ থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত ধরনের চীজ উৎপাদিত হয়।
এর পোর্টেবিলিটি, দীর্ঘজীবন এবং চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং ফসফরাসের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান।
পনির বেশি কমপ্যাক্ট এবং দুধের চেয়ে বেশিদিন থাকে। যদিও এটি কতক্ষণ ভালো থাকবে তা পনিরের ধরনের উপর নির্ভর করে। পনিরের প্যাকেটের লেবেল প্রায়ই দাবি করে যে এটি খোলার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে খাওয়া উচিত।
সাধারণভাবে বলা যায়, হার্ড পনির নরম পনিরের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকে।
যদিও বিশ্বের অনেক অঞ্চলে এটি পুষ্টির একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং এটি ব্যাপকভাবে খাওয়া হয় তবে এর ব্যবহার সর্বজনীন নয়। পনির ক্যালসিয়ামের একটি ভাল উৎস, সুস্থ হাড় এবং দাঁত, রক্তজমাট বদ্ধকরণ, ক্ষত নিরাময় এবং স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখার একটি মূল উৎস।
পনির এর ধরণ- Type of cheese
পুরো পৃথিবীতে অগণিত পনিরের ধরন রয়েছে । সাধারনত দুধের সাথে আরো অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে এই পনির গুলো তৈ্রী করা হয়ে থাকে।কিছু পনিরের ধরন নিম্নরুপঃ
ব্রি
চেডার
ফেটা
গৌদা
মোজারেলা
সুইস
ইত্যাদি।
এগুলোই মুলত পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় চীজের ধরন যা মুটামুটি সব দেশেই চলে।
পনির এর স্বাস্থ্যকর গুণাগুণ- The health benefits of cheese
ক) হাড় শক্ত করে:
পনিরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ডি এর উপাদান আছে। এইসকল উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে | হাড় দুর্বল হতে শুরু করে এমনকি ভেঙ্গেও যেতে পারে।
এই কারণেই চিকিৎসকরা প্রতিদিন এক গ্লাস করে দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু যারা দুধ খেতে পছন্দ করেন না তারা সহজেই পনির খেতে পারেন। এটি খেলে হাড়ের জরুরী পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দূর হবে।
খ) ওজন কমাতে সাহায্য করে:
দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে রােজের ডায়েটে পনিরকে অন্তর্ভুক্ত করে নিন। এতে প্রাকৃতিক ফ্যাট থাকে। তা যা ওজন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে ফলে ভারসাম্য বজায় থাকে। এতে থাকা প্রােটিন বহুক্ষণ পেট ভরে রাখে ফলশ্রুতিতে বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এছাড়াও পনিরে। লাইনােলেইক অ্যাসিড নামক উপাদান আছে যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে।
গ) ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে:
গবেষণা অনুযায়ী প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পনির | গ্রহণ করলে এটি টাইপ-২ ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৮%
কমাতে সাহায্য করে। পনিরে প্রােবাইওটিক উপাদান | আছে যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।
ঘ) দাঁতের উপকার করে:
পনিরের ক্যালসিয়াম দাঁতের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটির পুষ্টিগুণ দাঁতের রােগজীবাণু ধ্বংস করে। একইসাথে এটি চিবানাের সময় এর কিছু উপাদান মুখেরও উপকার করে।
ঙ) হৃদযন্ত্রের উন্নতি করে:
পনিরের মধ্যে পটাসিয়াম থাকে যা হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি একইসাথে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। সুতরাং, দীর্ঘদিন হৃদযন্ত্রকে চাঙ্গা রাখতে নিয়মিত এটি খাওয়া যেতে পারে।
চ) ক্যান্সার প্রতিরােধ করে:
এতে লিনােলিক এসিড এবং স্পিংহাে লিপিড নামক | উপাদান থাকে যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে। কিছু গবেষণা অনুযায়ী স্পিংহাে লিপিড ও | ক্যালসিয়াম কোলন ক্যান্সার প্রতিরােধে সক্ষম। এছাড়াও
এটি ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের বিপক্ষেও সমানভাবে কাজ করে। হাওয়ার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের একটি গবেষণা অনুযায়ী ব্রেস্ট ক্যান্সার | প্রতিরােধে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সবথেকে বেশি উপকারী।
ছ) পর্যাপ্ত ঘুমে সাহায্য করে:
দুধ দিয়ে তৈরি যেকোনাে খাবারই ভালাে ঘুম আনতে সহায়তা করে। পনির খেলে মস্তিষ্কের স্নায়ু স্থির হয়। ফলশ্রুতিতে ভালাে ঘুম আসে। তাই সুস্থ মস্তিষ্ক ও সুন্দর ঘুমের জন্য প্রতিদিন এটি খাওয়া যেতে পারে।
জ) রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
দেহে রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পনিরের | সক্ষমতা অবিশ্বাস্য। এতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার
উপাদান বিদ্যমান থাকে। বেশকিছু গবেষণার ফলাফল মতে, চিজে শরীরের রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে প্রয়ােজনীয় খাদ্য উপাদানসমূহ রয়েছে। ঝ) মাইগ্রেন সমস্যায়: | এতে ক্যাম্বার্ট নামের উপাদান রয়েছে যা মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। প্রথমত এটি মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রদাহকে দূর করে। এতে মস্তিষ্কের পেশির ফোলা কমে এবং মাইগ্রেনের ব্যথাও কমে আসে।
ঝ) ত্বকের ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে:
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় এটি | আমাদের ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও
এতে সেলেনিয়াম নামের উপাদান থাকায় এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্যতা বাড়ায়। একইভাবে এটি খেলে চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি পায় এবং এটির প্রাকৃতিক প্রােটিন চুল সুন্দর করে।
পনির এর রেসিপি
উপকরণ- Cheese’s recipe
Materials-
১। দুধ- ১ লিটার
২। লেবুর রস/ ভিনেগার- ১ কাপ
বানানোর পদ্ধতি –
১। প্রথমে দুধ টাকে ভালো ভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে ৷
২। এরপর চুলা অফ করে তাতে পরিমান মতো লেবুর রস বা ভিনিগার দিয়ে সেটাকে চামচ দিয়ে পুরো দুধ টাকে নেড়ে ঢেকে রাখতে হবে ৷
৩। এরপর দশ মিনিট পর ঢাকনা টি খুলে দেখা যাবে সমস্ত দুধ টা কেটে দুধের ছানা আর পানি আলাদা হয়ে গেছে।
৪। এরপর পাতলা সুতি কোনো কাপড়ে ছানা টা কে ছেকে পানি ঝড়িয়ে নিতে হবে।
৫। পানি ঝরে যাওয়ার পর পুটলি টাকে একটা প্লেটের উপর সমান ভাবে বসিয়ে ভারী কিছু বা মসলা বাটা পাথরের শিল দিয়ে চাপা দিয়ে রাখতে হবে ৪-৫ ঘন্টা ।
৬. এরপর পুরো ছানা ভালোভাবে সেট হয়ে গেলে পনির তৈরি হয়ে যাবে ।