ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

রোজা মাকরুহ হওয়ার ২৫ টি কারন

রোজা রেখে কিছু কাজ করলে শরিয়তের দৃষ্টিতে রোজা মাকরুহ হয়। ফলে সওয়াব কমে যায়, তবে ‘সেকারণে রোজা ভঙ্গ হয় না।’ (জাওয়াহিরুল ফতোয়া: খ. ১, পৃ. ২২; জাওয়াহিরুল ফিকহ: খ. ১, পৃ. ৩৭৯; বুখারি: ১৯০৩)

 

যেসব কাজ করলে গুনাহ হয় না; তবে ইসলামে অপছন্দ করা হয়েছে সেগুলোকে মাকরুহ বলে। 

 

রোজার ক্ষেত্রেও অনেক কাজ এমন রয়েছে, যেগুলো করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এ ধরনের কাজ করা ঠিক নয়। 

 

ছোটখাটো কিছু ভুল থেকে শুরু করে বড় বড় কিছু কাজে রোজা মাকরুহ হয়ে যেতে পারে। এর পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে। রোজা মাকরুহ হওয়ার অন্তত ২১ টি কারণ এখানে তুলে ধরা হলো-

 

১. সারাদিন রোজা সঠিকভাবে করার পরেও সন্ধ্যায় ইফতারির সময় আপনি যদি এমন কোনও খাবার গ্রহণ করেন যেটি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম, তাহলে আপনার রোজাটি মাকরুহ হবে।

 

২. কোনও কারণ ছাড়াই কিছু চিবুতে থাকলে রোজা মাকরুহ হবে।

 

৩. কোনও কিছু স্রেফ মুখে পুরে রাখলেন, খেলেন না তাতেও রোজা মাকরুহ হবে।

 

৪. গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়ায় রোজা মাকরুহ হয়। আর এসব করার সময় পেটে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যায়।

 

৫. মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে।

 

৬. রমজানের সারাটি দিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরুহ হবে।

 

৭. কোনও বিষয়ে অস্থির হয়ে উঠলে কিংবা কাতরতা দেখালে রোজা মাকরুহ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে কোনও কোনও ব্যাখ্যা।

 

৮. পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিস্কার করলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়।

 

৯. মুখে গুল ব্যবহার মাকরুহ এবং থুথুর সঙ্গে গুল গলার ভেতর চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

READ MORE:  মাহে রমজান এলো বছর ঘুরে lyrics

 

১০. রোজা রেখে কারো গিবত করলে বা পরনিন্দা করলে রোজা মাকরুহ হয়।

 

১১. মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। রোজা রেখে এ কাজটি করলে তা মাকরুহ হবে।

 

১২. রোজা রেখে ঝগড়া-বিবাদ করলে রোজা মাকরুহ হবে।

 

১৪. যৌন উদ্দিপক কিছু দেখা বা শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতেও রোজা মাকরুহ হয়।

 

১৫. নাচ, গান, সিনেমা দেখা ও তাতে মজে থাকলে রোজা মাকরুহ হয়।

 

১৬. রান্নার সময় রোজাদার কোনও কিছুর স্বাদ নিলে, লবন চেখে দেখলে, ঝাল পরীক্ষা করলে মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনে সেটা যদি করতেই হয়, তাহলে বৈধ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

 

১৭. কোন কবিরাহ গুনাহে লিপ্ত হওয়া।

 

১৮. সকালবেলায় নাপাক অবস্থায় থাকা।

 

১৯. অহেতুক কোনো জিনিস চিবানো বা চেখে দেখা।

 

২০. নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া। (কিন্তু ওই পানি গলায় পৌঁছলে রোজ ভেঙে যাবে।)

 

২১. ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করা।

 

অহংকারের জন্য সুরমা লাগানো বা গোঁফে তেল লাগানো।

 

২২. পায়খানার রাস্তায় পানি দ্বারা এত বেশি ধৌত করা যে, ভেতরে পানি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।

 

২৩. প্রয়োজন ছাড়া দাঁত তোলা মাকরুহ। তাতে যদি রক্ত বা দাঁতে লাগানো ওষুধ পেটে চলে যায়, যা থুতুর সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

 

২৪. এমন কোনো কাজ করা, যা শরীরকে দুর্বলতার দিকে নিয়ে যায়, যেমন শিঙ্গা লাগানো। কাউকে রক্ত দিলে যদি পরের সময়টিতে উপোস থাকা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়।

 

২৫. সঙ্গম বা বীর্যপাতের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুমু দেওয়া।

 

সূত্র: দুররে মুখতার: ২/৪১৬, বাদাইউস সানায়ে: ২/৬৩৫, কিতাবুল ফিকহ: ১/৯২৩ 

(ফতোয়ায়ে শামি; আলমগিরি; ফতহুল কাদির; আলমুহিতুল বুরহানি; ফতোয়া হিন্দিয়া; আহসানুল ফতোয়া; জাওয়াহিরুল ফিকহ; বিনায়াহ; বুখারি; আবু দাউদ)

READ MORE:  দূর শহরে পড়ে আছি মা লিরিক্স | dur shohore pore achi ma lyrics

 

‘রোজা হলো ঢাল ও সুরক্ষিত দূর্গ’ (মুসনাদে আহমাদ: ৯২২৫)। অতএব, এ ঢাল ও দুর্গকে দূর্বল করা মুমিন মুসলমানের জন্য উচিত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *