ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরীমের জীবনকথা

সালেহ আহমেদ তাকরিম, বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ কোরআন হাফেজ চ্যাম্পিয়ন। তিনি প্রায় একশটিরও বেশি দেশকে পিছিয়ে ফেলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব অর্জন করে এনেছে। আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা সালেহ আহমেদ তাকরিম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

 

সালেহ আহমেদ আফরিন বাংলাদেশের একজন কুরআন হাফেজ। তিনি নয় বছর বয়সে কুরআনের উপর হাফেজ হন। ১১১ টি দেশের মধ্যে তিনি কুরান প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

 

তিনি ২০০৮ সালে ৩১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি নাগরপুর থানার ভদ্রা গ্রাম। তার বাবা পেশায় একজন মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মা গৃহিণী। খুব সাদামাটা পরিবারের জন্মগ্রহণ করে সালে আহমেদ বাংলাদেশের জন্য বিশাল গৌরব সিনিয়ে আনতে পেরেছে।

 

১৯০ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার সারাবিশ্বে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীম। তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। তাকরীমের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ভাদরা গ্রামে। বর্তমানে সে রাজধানীর মিরপুরের মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদ্রাসায় পড়ছে। ইরানের রাজধানী তেহরানের আন্দিশাহ (আল-ফিকির) হলে গত ৫ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯০ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত পর্বের জন্য পাঁচ দেশের সেরা পাঁচজন মনোনীত হন সেখানে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী সালেহ আহমাদ তাকরীম সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে। প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মাদ মাহদী ইসমাইলী, শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ নুরী ও ইসলামিক দাওয়া সেন্টারের প্রধান সৈয়্যদ মাহদী খামুশীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের জন্য এ গর্ব বয়ে আনা হাফেজের বাবাও একজন হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক। তার নাম আব্দুর রহমান। হাফেজ তাকরীমের মা একজন গৃহিণী। ছেলের এই বিশ্বজয়ের কৃতিত্বে হাফেজ আব্দুর রহমান শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জে ছিল। নদীতে বাড়ি-জমি ভেঙে গেলে টাঙ্গাইলের বাড়ি করি। তবে তাকরীম আমার সঙ্গে সাভারে থাকত। সেখানে আমার তত্ত্বাবধানেই সে হাফেজ হয়। কুরআনের আয়াত অন্তরে গেঁথে নেয় খুব সহজেই। মাত্র সাড়ে ৯ বছর বয়সে সে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করে ফেলে। পরে তাকে মিরপুরের মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী মাদ্রাসায় ভর্তি করি। সেখানেও সে সাফল্যের সঙ্গে সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমি তাকে একজন দীনদার আলেম হিসেবে তৈরি করতে চাই, যাতে ইসলামের খেদমত করতে পারে সঠিকভাবে। এখন সে কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছে।’ এদিকে হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরীমের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত তার মাদ্রাসা মারকাযু ফয়জিল কুরআনের শিক্ষকরা। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ খতিব মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুম এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমরা আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি ও দেশবাসীর কাছে হাফেজ তাকরীমের জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ তায়ালা অসাধারণ মেধা দিয়েছেন তাকরীমকে। হিফজ বিভাগের পাশাপাশি কিতাব বিভাগেও ঈর্ষণীয় সাফল্য তার। উল্লেখ্য, হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় দেশের মাটিতেই চমক দেখিয়েছিলেন হাফেজ তাকরীম। ২০২০ সালের রমজান মাসে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে আয়োজিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় সে। হাফেজ তাকরীম জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু ক্কারি।

 

শিক্ষা জীবন

সালেহ আহমেদ তাকরিম বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন হাফেজ। মাত্র নয় বছর বয়সে সালেহ আহমেদ তাকরিম কোরআন হাফেজ হতে পেরেছিলেন। তার বাবা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক হয় শুরু থেকেই তিনি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হন। তাকরীম ঢাকার মিরপুর ১ এ অবস্থিত মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামীর ছাত্র।

 এছাড়াও শুরুতে তিনি তার বাবার মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। তুমুল এ মেধাবী ছাত্র শুরু থেকেই আরবির উপর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা সালেহ আহমেদ তাকরিম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেব।

 

সালেহ আহমেদ তাকরিম সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই কোরআন হাফেজ নয় বছর বয়সে কোরানের উপর হাফেজ অর্জন করেন। তিনি ২০২২ সালে মাত্র 13 বছর বয়সে ইরানের তেহরানে অনুষ্ঠিত ৩৮ তম ইরান আন্তর্জাতিক হিজ ফুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। এছাড়াও সালেহ আহমেদ আফ্রিন ২০০৫ সালের সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত ৪২ তম বাদশা আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিজফুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এই প্রতিযোগিতায় সালেহ আহমেদ চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। এছাড়াও সালেহ আহমেদ একদিন বাংলাদেশের কুরআন প্রতিযোগিতার অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলাদেশে বাংলাভিশন টেলিভিশন কর্তৃক আয়োজিত হিসফুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।

 

সালেহ আহমেদ তাকরিম কিছু পুরস্কার 

সালেহ আহমেদ আফরিন বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন কোরআন হাফেজ। তিনি বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কিছু জনপ্রিয় পুরস্কার অর্জন করতে পেরেছেন। তার বিজয় কিছু পুরস্কারের নাম নিচে তুলে ধরা হলো।

 

সালেহ আহমেদ আফরিন বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন কোরআন হাফেজ। তিনি বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কিছু জনপ্রিয় পুরস্কার অর্জন করতে পেরেছেন। তার বিজয় কিছু পুরস্কারের নাম নিচে তুলে ধরা হলো।

 

২৬তম জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়

ত্রিশ হাজার প্রতিযোগির মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন (বাংলাদেশ, ফেব্রুয়ারি ২০২২)

৩৮তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন (ইরান, মার্চ ২০২২)

আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় সপ্তম স্থান অর্জন (লিবিয়া, মে ২০২২)

পবিত্র কুরআনের আলো বিজয়ী (বাংলাদেশ, ২০২০)

তাকরিম ২০২৩ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার ২৬ তম আসরে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link