URP Subject Review (নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা)

URP Subject Review

(Urban and Regional Planning)  URP Subject Review

হয়তো এখনো বাংলাদেশের মানুষের কাছে ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার, সিভিল,কিংবা মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো খুব বেশি পরিচিতি পায় নি । আমার এই ছোট্ট জীবনে আমি অসংখ্য মানুষ পেয়েছি যারা কিছু না জেনেই দাঁত মুখ খিঁচিয়ে, ভুরু নাচিয়ে,বিশাল ধরণের একটা প্রশ্নবোধক তৈরি করে তাকায়…… “এইডা আবার কী !”আসুন একটু দেখে নেই URP সাবজেক্টটি কি,এখানে আসলে কি পড়ানো হয় আর কেনই বা সাবজেক্টটি পড়ানো হয় ।।

URP – Urban and Regional Planning

বাংলায় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা । নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে কোন নগরের সামগ্রিক পরিকল্পনা করাই এই সাবজেক্টের কাজ । সাধারণত যেকোনো স্থাপনার নকশা করে স্থপতিরা, আরসেটি নির্মাণের বিভিন্ন দিক তদারক করা পুরকৌশলের কাজ । কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটি নগরের ডিজাইন করা থেকে শুরু করে একটি পরিকল্পিত নগর গড়ে তুলার জন্যে ঐসব স্থাপনার ভুমিকা কতটুকু বা ঐসব স্থাপনার আদৌ কোন প্রয়োজন আছে কিনা বা উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি নগরের এবং নাগরিকদের কি কি দরকার, সেখানে বসবাসরত জীববৈচিত্র্য এর কোন ক্ষতি হবে কিনা সেটা দেখাশুনা করাই হল নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনাবিদদের কাজ । একটি সাধারন বিষয় চিন্তা কর, 

“এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেখানে স্থাপনা শুরু হয় সেখানেই স্থাপনা বাড়তেই থাকে ( যেমন-ঢাকা ); আবার যেখানে স্থাপনা নাই সেখানে তেমন কিছুই গড়ে উঠে না (যেমন- রাজশাহী বা অন্য যেকোন শহর) । যার ফলে সামান্য কোন দরকারেও আমাদের ঢাকায় যেতে হয় । কিন্তু যদি স্থাপনাগুলা ডিসেন্ট্রালাইজড করা হয় তাহলে কিন্তু এই সমস্যা গুলা অনেকাংশে কমানো সম্ভব”, URP তে পড়ে তুমি এই বিষয়গুলা সম্পর্কে সঠিক ধারনা পাবে । আর এ উদ্দেশ্যেই উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত পরিকল্পনা বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বর্তমানে আমাদের দেশেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকল্পনা বিষয়ে অধিকতর উন্নত শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে URP সাবজেক্টটি পড়ানো হয়ে থাকে । কি কি পড়ানো হয় এই সাবজেক্টে?? নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিষয়টি মূলত পূরকৌশল, স্থাপত্য বিদ্যার সংমিশ্রণ ।পুরকৌশল এর প্রাথমিক কিছু কোর্স করানো হয়। পাশাপাশি স্থাপত্যবিদ্যা নিয়েও বেশ ঘাটাঘাটি করতে হয় । এছাড়া পরিকল্পনা বিষয়ক নিজস্ব কিছু কোর্স তো আছেই ।পরিকল্পনা বিষয়ক কোর্স গুলোর উল্লেখযোগ্য হলঃ~

 

Site and Area Planning ~ Natural hazards & Disaster Management ~ Land Development and Management ~ Planning of Utility & Municipal Services ~ Planning of Tourism & Recreational Facilities ~ Environmental Planning & Management ~ Traffic & Transportation Studio ~ Transportation Policy & Planning ~ Rural Development Planning ~ GIS & Remote Sensing ~ Political Science & Local Government ~ Landscape Planning Design ~ Housing & Real Estate Development এছাড়াও পুরকৌশলের কিছু কোর্সও পড়ানো হয়, , এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল,~ Basic Environmental Engineering ~ Elements of Civil Engineering Structures ~ Water Resource Planning

 

এছাড়াও মেকানিক্স, প্রোগ্রামিং এবং স্থপত্য বিদ্যার কিছু মৌলিক কোর্সও করানো হয় । এছাড়াও গ্রাফিক্সের কিছু সফটওয়্যার, জী আই এস এসব সম্পর্কে বিষধ ধারণা দেয়া হয় ।।সিলেবাস (রুয়েট) লিংকঃ http://goo.gl/gLFMoT

 

এখন_আসি_কোটি_টাকার_­ প্রশ্নেঃ চাকরীর বাজারে এ সাবজেক্টের মুল্য কতটুকু?? চাকরির বাজারেও এ সাবজেক্টের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে যা দিন দিন বাড়ছেই ।সাবজেক্টটি পড়ানো হচ্ছে বর্তমানে বুয়েটে (৩০), কুয়েটে (৬০), রুয়েটে (৩০), চুয়েটে (৩০),জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (৫০), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (৪২) এবং ভিন্ন নামে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ানো হয় ।অর্থাৎ এই সাবজেক্ট থেকে প্রতিবছর পাশ করে বেড়াচ্ছে প্রায় ৩০০ জন এরও কম গ্র্যাজুয়েট যা চাকরীর বাজারে নিশ্চিতভাবেই তোমাকে বাড়তি সুবিধা দিবে । এখন আসো দেখি, তুমি কোন কোন সেক্টরে চাকরি করে “চাকরি নাই” কথা টা ভুল প্রমানিত করতে পারো

 

চাকরীর ক্ষেত্রঃ

সরকারী চাকরীর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হল,রাজধানি উন্নয়ন কতৃপক্ষ(রাজউক), এলজিইডি, এলজিআরডি, গণপূর্ত অধিদপ্তর, দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, সকল পৌরসভা,পরিকল্পনা কমিশনে নগর পরিকল্পনাবিদের আসনে আসীনহতে পারবে । UNDP, UNICEF, UNESCO এর অধিনে আয়োজিত বিভিন্ন প্রজেক্টেও পরিকল্পনা বিদদের চাহিদা ভালই । দেশেরপ্রতিটি কন্সট্রাকশন ফার্ম ও কন্সাল্টেন্সী ফার্মে স্বীকৃত পরিকল্পনাবিদ থাকাটা এখন বাধ্যতামূলক । আর বিভিন্ন রিয়েল ষ্টেট কোম্পানি, এনজিও, বেসরকারি সংস্থাতেও রয়েছে কাজের প্রচুর সুযোগ ।এছাড়া পরিকল্পনা বিষয়ক বিভিন্ন সফটওয়্যার বিশেষ করে GIS (geographic information system) এর ব্যাবহারে দক্ষ হতে পারলে জীবনে কখনই থেমে থাকতে হবে না, GIS এর প্রয়োগবিধিতে দক্ষ হতে পারলে আবহাওয়া অধিদপ্তর, কৃষি বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর অনেক জায়গাতেই কাজ করা সম্ভব । এমনকি, ট্রান্সপর্টেশনের ক্ষেত্রেও এখন প্ল্যানার এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে । এছাড়া যে কেউ চাইলেই প্রকৌশলীদের সাথে কারিগরি দিকেও কাজ করতে পারে ।আর দেশের বাইরে এই সাবজেক্টের চাহিদা তো রীতিমত আকাশচুম্বী, ,উন্নত বিশ্বে নগর থেকে শুরু করে সকল স্থাপনাই সুপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠে, আর তাই উন্নত দেশগুলোতে এই সাবজেক্টের চাহিদা মনে হয়না নতুন করে বর্ণনা করার দরকার আছে ।তবে, শর্ত প্রযোজ্য, , তোমাকে অবশ্যই অবশ্যই এগুলার যোগ্য হতে হবে । শুধু পাশ করে বের হলেই যে তোমাকে আমাকে ডেকে দেশে কিংবা বিদেশে নিয়ে গিয়ে চাকরি দিবে, এইটা ভাবার কোন নাই

উচ্চশিক্ষাঃ

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা রয়েছে । কেউ চাইলেই পরিকল্পনা বিষয়ক বিভিন্ন শাখায় উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবে । আবার চাইলে পুরকৌশল এবং স্থাপত্য বিদ্যার বিভিন্ন শাখায়ও উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবে । এ বিষয়ে মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার ক্ষেত্রে ফান্ডিংও বেশ ভালো পাওয়া যায় ।

গত বছরের কিছু বৃত্তি লিংকঃ

1. http://goo.gl/n2dNh0 2. http://goo.gl/3cLI9l 

 

ইউ আর পি তে পড়লে নামের পাশে ইঞ্জিনিয়ার শব্দটি লাগানো যায়না বলে অনেককেই ব্যাথিতহতে দেখা যায় । আসলে এসব কোন ব্যাপার নয় ।

এখানে যেহেতুপুরকৌশলের কিছু কোর্সের পাশাপাশি মেকানিক্স, প্রোগ্রামিং, স্থপত্যবিদ্যার কিছু কোর্সও করানো হয় তাই স্বাভাবিক ভাবেই ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্বাদ ভালভাবেই পাওয়া যায় । আর তাছাড়া নামের পাশে প্ল্যানার শব্দটি লাগানোও কিন্তু অনেক সন্মানের ।।সবশেষে বলব, ,যারা কারিগরি এবং ক্রিয়েটিভ শিক্ষার অদ্ভুত এক মেলবন্ধনে নিজেকে বাধতে চাও,নিজের নিজস্বতা প্রকাশ করতে চাও, বড় পরিসরে নিজেকে মেলে ধরতে চাও তারা নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনাকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেচে নিতেই পারো । শুধু এতটুকুই বলব, , তোমার ভবিষ্যৎ ভালই হবে, কখনও থেমে থাকতে হবে না ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *