শুক্রাণু সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ কি, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

antibiotics

বীর্য বিশ্লেষণ পরীক্ষায় শুক্রাণুর সংখ্যা গণনা শুক্রাণুর গুণমান নির্ণয়ের একটি পরামিতি। বীর্য বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যাতে একজন মানুষ পিতা হতে সক্ষম কিনা তা নির্ণয় করা যায়। একটি পরীক্ষার নমুনাতে (বীর্য) গড়ে কতগুলি শুক্রাণু আছে তা গুনে দেখা হয়। শুক্রাণুর কম সংখ্যা বােঝায় যে বীর্যের নমুনাতে প্রত্যাশিত মানের চেয়ে কম শুক্রাণু আছে। একজন ব্যক্তি যার শুক্রাণুর সংখ্যা কম তার কোন লক্ষণ নাও থাকতে পারে। অথবা তার অণ্ডকোষ ফুলে গিয়েছে। অথবা অন্য কোন লক্ষণ আছে। কম শুক্রাণু সংখ্যা তার প্রজনন অঙ্গ সম্পর্কিত হতে পারে, অথবা বাইরের কোন প্রভাব যেমন উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব হতে পারে। পরীক্ষাগারে বীর্য পরীক্ষা করে কারণ জানা যেতে পারে। বাইরের যে প্রভাবে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হয়েছে (যদি তেমন থাকে) তার প্রভাব থেকে বেড়িয়ে এলে, সুস্থ জীবনধারা অনুসরণ করলে এবং ডাক্তারবাবুর পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করলে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ানাে যেতে পারে।

 

শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া কি? 

 

প্রজনন-অনুর্বরতা একজন ব্যক্তির পিতা হওয়ার পথের।  প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা। এটি একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা

যা বিশ্বের অনেক দম্পতিকে প্রভাবিত করছে। স্ত্রী অথবা পুরুষ অথবা দুজনই এই অবস্থার কারণ হতে পারেন। পুরুষদের প্রজনন-অনুর্বরতার উৎস কোন বংশগত কারণ অথবা প্রাকৃতিক কারণ যাতে শুক্রাণুর গঠনে এবং কাজে ত্রুটি রয়েছে। এগুলি ঠিক করা যেতে পারে অথবা স্থায়ীও হতে পারে। অন্তত এক বছর ধরে অসুরক্ষিত যৌন সঙ্গমের পরও যদি একটি দম্পতী সন্তান ধারণে অসমর্থ হন, তাহলে ডাক্তারবাবুরা তাদের অনুর্বর বলে নির্ণয় করেন। পরীক্ষা করে দেখা হয় সমস্যাটি কার, পুরুষের নাকি স্ত্রীর, নাকি দুজনেরই। 2030% পুরুষদের বীর্যের ত্রুটির কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হয়। এর অন্তর্নিহিত কারণ জানার জন্য ডাক্তারবাবু রােগীর জীবনধারা, অভ্যাস এবং পেশার বিস্তারিত ইতিহাসের পর্যালােচনা করেন। যখন নির্ণীত হয় যে একজন ব্যক্তির শুক্রাণুর সংখ্যা কম, তখন সমস্যাটিকে ডাক্তারবাবুর সঠিক নির্দেশিকা মেনে চিকিৎসা করা যেতে পারে। এই নির্দেশিকাতে থাকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, কিছু পূর্ব-সতর্কতা, খাদ্যের সাথে পুষ্টি সংযােজন এবং প্রয়ােজন হলে ওষুধ। 

 

কম শুক্রাণু সংখ্যাকে এই ভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় যে পরীক্ষার তরলে (বীর্য) পাওয়া শুক্রাণুর সংখ্যা প্রয়ােজনীয় গড় শুক্রাণু সংখ্যার চেয়ে কম থাকে। একজন পুরুষ প্রজনন সক্ষম কিনা (তিনি পিতা হতে পারবেন কিনা) তা নির্ণয় করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামিতি। সাধারণ গড় শুক্রাণু সংখ্যা হল। প্রতি নমুনায় ১৫- ৩৯ মিলিয়ান। কম শুক্রাণু সংখ্যা হল নমুনাতে ১৫ মিলিয়ানের চেয়ে কম শুক্রাণু।

 

 

শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া এর উপসর্গ – 

 

সাধারণত এর কোন লক্ষণ থাকে না। তবে কিছু কিছু ব্যক্তির নিচে দেওয়া লক্ষণগুলি থাকতে পারে:

  • অন্তত এক বছর ধরে অসুরক্ষিত যৌন সঙ্গমের

পরও সন্তান ধারণে অসমর্থ হন। 

  • একজন ব্যক্তির যৌন ইচ্ছে কম হতে পারে। 
  • যৌনাঙ্গে ফোলা থাকতে পারে।

 

শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়া এর চিকিৎসা – 

 

অন্তর্নিহিত কারণের উপরে কম শুক্রানু থাকার চিকিৎসা নির্ভর করে। যদি অন্তর্নিহিত কারণটি চিকিৎসার যােগ্য হয়, তাহলে কম শুক্রাণুর চিকিৎসা হতে পারে। এই চিকিৎসার সাথে জড়িত: 

 

  • বিস্তারিত ইতিহাস নিম্ন লিখিত বিষয়গুলি জানার জন্য এটি সাহায্য করবে। 

 

 ০ অসুস্থতার পদ্ধতিগত চিকিৎসা (যেমন,

ডায়াবেটিস (মধুমেহ) মেলিটাস এবং আপার রেসপিরেটারি অসুখ)।

 ০ অতীতে কোন শল্য চিকিৎসা হয়েছিল কিনা। ০ যৌনবাহিত সংক্রমণ সহ যৌন ইতিহাস। 

০ তাপমাত্রা, কোন বিষাক্ত বস্তু বা কীটনাশকের

সংস্পর্শে আসা। 

০ পেশাগত ইতিহাস যা কাজের সময় কোন কিছুর সংস্পর্শে আসা।

 

পরামর্শ দেওয়া

 

আপনার অবস্থার কথা আপনার ডাক্তারবাবু সব চেয়ে ভাল করে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। আপনার সমস্যা এবং ব্যক্তিগত ইতিহাস ডাক্তারবাবুকে বলতে দ্বিধা করবেন না। তাহলে রােগের কারণ খুঁজে বার করা এবং তার চিকিৎসা সহজ হবে। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই যে আপনার ডাক্তারবাবু আপনার মানসিক চাপ, যা কিনা শুক্রাণুর সংখ্যা কম হওয়ার কারণ হতে পারে, তার মােকাবেলা করতে সাহায্য করবেন।

 

জীবন ব্যবস্থাপনা 

 

  • উচ্চ তাপ, বিকিরণ এবং বিষাক্ত বস্তুর সংস্পর্শ পরিত্যাগ করলে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

 

  • ভারী ধাতুর কারখানায় কাজ করার সময় এবং কীটনাশক ব্যবহারের সময় সঠিক যত্ন এবং সুরক্ষার ব্যবস্থা করবেন।

 

  • ধূমপান এবং তামাক চিবানাে পরিত্যাগ করলে উপকার পাবেন।

 

  • মদ্যপান পরিত্যাগ করুন। এটা প্রমাণীত যে মদ শুক্রাণুর বিকাশকে প্রতিহত করে।

 

  • চাপ ধ্বংসকারী কার্যকলাপে অংশ নিয়ে চাপমুক্ত থাকুন। যেমন ধ্যান, গভীর নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং যােগ।

 

  • দৈনিক কার্যকলাপের সাথে রােজ ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করা।

 

  • ধূমপান ত্যাগ করা এবং মাত্রারিক্ত মদ্যপান না করা।

 

  • ধূমপান পরিত্যাগ করা।

 

  • অত্যধিক গরম জলে স্নান না করা।

 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *