শরীয়তের দৃষ্টিতে মেয়েদের মসজিদে গিয়ে নামাজের বিধান
নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, ‘যদি নারীরা তোমাদের কাছে মসজিদে নামাজ আদায়ের অনুমতি চায়, তাহলে তোমরা তাদেরকে (মসজিদে গমণের) অনুমতি দিয়ে দাও।’ (বুখারি ও মুসলিম)
বর্তমান সময়ে অনুমতি প্রদানে করণীয়
আরব দেশগুলো ছাড়া বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম দেশেই নারীদের জন্য মসজিদে নামাজ পড়ার তেমন কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। খুব কম সংখ্যক মসজিদে নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। সে হিসেবে যদি কোনো দেশে কিংবা অঞ্চলে নারীদের জন্য মসজিদে নামাজ আদায়ে সুব্যবস্থা থাককে তবে সেক্ষেত্রে যাতায়াত নিরাপদ হলে মসজিদে গিয়ে নারীদের নামাজ পড়তে কোনো বাধা নেই।
বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে
যে সব মসজিদে নারীদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব মসজিদে আসা-যাওয়ার পথ নিরাপদ কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে। আবার মসজিদে যাওয়ার ফলে নারী কিংবা পুরুষদের মাঝে ফেতনার ক্ষীণ সম্ভাবনাও যেন না থাকে। যদি এর খেলাফ হয় তবে নারীরা মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ আদায় করাই শ্রেয়।
নারীদের মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে রাষ্ট্র ও সমাজ যদি নিরাপদ ও ফেতনামুক্ত সমাজ তৈরি করতে পারে তবেই পরিপূর্ণ পর্দার সঙ্গে নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করবে।
সর্বোপরি…
ইসলামে নারীদের নামাজ আদায় নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তন্মধ্যে মসজিদে আসা-যাওয়ার পথ নিরাপদ হওয়া আবশ্যক। আবার মসজিদে নারীদের পৃথক নামাজ পড়ার সুব্যবস্থাও থাকা চাই।
নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করার ব্যাপারে যত মতভেদ বা যুক্তি থাকুক না কেন, ইসলাম নারীকে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে বাধা দেয় না। তবে নামাজ পড়ার কারণে যদি কারো বেপর্দা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে মসজিদের চেয়ে ঘরে বসেই নামাজ আদায় উত্তম।
প্রতিটি মহল্লায় মসজিদ নির্মাণের সময় নারীদের নামাজ আদায়ের কথা মাথায় রেখে সেভাবে মসজিদ নির্মাণ করা মুসলিম উম্মাহর একান্ত কর্তব্য। তবেই নারীরা নিরাপদে মসজিদে গিয়ে ফেতনামুক্ত হয়ে নামাজ আদায়ে সক্ষম হবে।