ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞান ও কোরআন কি বলে?
অনেকে হয়তো বলেই ফেলবে যে ভূত বলতে কিছুই নেই। কিন্তু প্রমাণ চাইলেই একটু প্রব্লেমে পড়ে যাবেন,কারণ আরেকজন হয়তো বলে বসবেন যে ভূত আছে। আপনাদের ২ জনেরই কাছে কিন্তু ওইরকম কোনো প্রমাণ নেই।
শুরু থেকেই মানুষ নির্বিশেষে এই ভূত নিয়ে গবেষণা করে আসছে,কিন্তু একটা সময় পর এসে থমকে গেছে।কিন্তু এখনো অনেকে আছেন যে,তারা কোনো কিছু সম্ভব হলেও গবেষণা করা ছেড়ে দেন না।
প্রথমে দেখা যাক,
প্যারানরমাল ইনভিস্টিগেটরটা আসলে ভূত সম্পর্কে কি মেনে থাকে।
প্যারানরমাল ইনভিস্টিগেটরটাদের মতে ভূত হলো সেই Energy বা শক্তি যা মৃতমানুষের দেহ থেকে নির্গত হয়। যারা ভূত বিশ্বাস করে, তারা মনে করেন যে ভূত হলো এই সমস্ত আত্তা যা বিভিন্ন ধরনের আশা-আকাংক্ষা নিয়ে মৃত্যু বরণ করে, ফলে মৃত্যুর পরও তার ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে যায়।
ফলে সে ভবঘুরে হয়ে যায় এবং তার হদিস ততক্ষন পর্যন্ত মিলে যতক্ষন না তার ইচ্ছা পূরন হয়। সে তার স্মৃতিময় জায়গাগুলোতে ঘুরে বেড়ায়।কখনো কখনো তো এটি মানুষের ভিতরেও পর্যন্ত চলে যায়।এরকম অনেক ঘঠনা শুনা যায়। তখন বলা হয় যে ভূত কারো উপর আছর করেছে।
আমাদের পৃথিবীতে ৩ ধরনের মানুষ রয়েছে,
১. যারা ভূতে বিশ্বাসী
২. যারা ভূত & সৃষ্ঠি কর্তায় বিশ্বাসী না
৩. যারা ভূত বিশ্বাসী করে এবং সেই সাথে বিজ্ঞানের থিঊরিগুলিও মেনে থাকে।
ভূত নিয়ে কিন্তু অনেক বাস্তবধর্মী মুভিও বানানো হয়েছে। যেমন এক্সরসিস্ট এবং দি কনজিওরিং মুভি দুটির কথাই বলা যাক। মুভি দুটি ছিলো খুবই ভূতুরে তোমরা যারা Horror মুভি দেখতে পছন্দ করো, তারা এই ২ টি মুভি দেখে নিতে পারো।দি কনজিওরিং মুভিতে এনাবেলে নামক একটি পুতুলকে দেখানো হয়েছে যার ভিতর আত্তা প্রবেশ করেছিলো।এমনকি এই মুভিতে আরো মেসেজ দেয়া হয়েছে যে,এই আত্তা বা ভুতরা যেকোনো বস্তুর ভিতরে ঢোকে যেতে পারে।
আসলে এই পুতুলটিকে একটি বদ্ধ ঘরে রাখা হয়েছে,,,এমনকি এখনও পর্যন্ত এই পুতুলটিকে সবচেয়ে Hunted বা ভূতুরে বলা হয়।
ভূত নিয়ে আরেকটি ধারনা হচ্ছে যে, যদি কোনো আত্তার দরকার হয়,তাহলে তারা সরাসরি আপনার সাথে কথা বলতে পারবে।
আপনি কি কখনও খেয়াল করেছেন যে, ভূতুরে ব্যাপারগুলো ম্যাক্সিমাম সময় রাতেই হয়?কেনো রাতেই হবে?
এই ব্যপারে প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটররা বলেন যে, ভূত রাতে আমাদের ভয় দেখানোর জন্য আসে না।
আসলে ভূতের সময়জ্ঞান বলতে কিছু নেই
তারা রাতে আসে কারন, এই সময়টাতে তারা শান্তি পায়,
তাছাড়া কোনো জিনিস তাপমাত্রার শংস্পর্শে আসলে তার শক্তি হ্রাস পায়।।।
ভূত দিনের বেলায় কিছু করতে চায় না, কারণ তারা তাদের শক্তি সঞ্চয় করে রেখে টিকে থাকতে চায়। এই দিক থেকে ভূতের অস্তিত্ব আছে। তাছাড়া ভূত সম্পর্কে আমার প্রিয় একজন বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন আগেই বলে গিয়েছেন।।।
তিনি শক্তির সংরক্ষনশীলতার নীতিতে বলেছেন,যে মাহাবিশ্বে মোট শক্তির পরিমান নির্দিষ্ট, নতুন কোনো শক্তি সৃষ্টিও হবে না এবং ধ্বংসও হবে না। শক্তি শুধু একরূপ থেকে অন্যরূপে রুপান্তরিত হতে পারে।অনেকে মনে করে যে মৃত্যুর পর আত্না মহাবিশ্বেই ঘুরাঘুরি করে কারণ মোট শতির পরিমাণ নির্দিষ্ট।শন্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই আর আত্নাও কিন্তু এক প্রকার শক্তির মধ্যেই পরে।
তাই বিজ্ঞান বলে যে কোনো মানুষ/বস্তু যখন মরে যায়, তখন তা শারীরিকভাবে মরে না।
অর্থাৎ তার দেহটা শুধু একরুপ থেকে আরেক রুপে রুপান্তরিত হয় মাত্র। একটু ভেবে দেখেন, অই মৃত ব্যক্তির দেহটা যদি কোনো জংগলে দাফন করে রাখা হয়, তাহলে অই দেহ মাটিতে মিশে যাবে এবং সেই কবরের উপর কিন্তু অনেক ঘাস-লতা,পাতা সৃষ্টি হয়, আসলে এই লতা পাতা কিন্তু শক্তিগুলো মৃতদেহটা থেকেই পেয়েছি।
আর এই লতা-পাতা গুলো বিভিন্ন পশু পাখি খেয়ে শক্তি অর্জন করছে।
তারমানে পৃথিবীর সবকিছুই শক্তি, এটা শুধু বিভিন্ন রূপে চক্রাকারে ঘুরছে।
বিজ্ঞান তো আমাদের ফিজিক্যালি বডির সম্পর্কে বলে দিলো,
কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো আত্নার কি হলো?, আত্না কোথাই যায়?
একটু আগেই বলা হয়েছে যে বিজ্ঞান বলে কোনো কিছুই ধ্বংস হয়ে যায় না, তারমানে আত্নাও বেচে থাকে এবং এটা প্রকৃতিতে শক্তিরূপে ঘুরাফেরা করে।
এখন আসো নেয়ার ডেথ এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে কিছু বলা যাক।
এটা হলো মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসা,,,এবং অনেকে এসেছেন বলেও দাবি করেছেন। এমনকি সেখানে ঘটে যাওয়া ঘটনা(পরী দেখে) সম্পর্কেও বনর্ণা করেছেন।
যদিও এর বিপক্ষে অনেকে যুক্তিও দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো, দেনক্যাল মেটাবেল নামক একজন বিজ্ঞানী মরা মানুষের ওজন পরীক্ষা করেছিলেন,তিনি মৃত্যুর ঠিক আগ একজন ব্যাক্তির ওজন মাপেন এবং মৃত্যুর কয়েকসেকেন্ড পরও ওইব্যাক্তির ওজন মাপেন।
তিনি দেখেন যে মৃত্যুর পর ২১ গ্রাম ওজন কমে যায়,
অর্থাৎ ২১ গ্রাম ভরের কিছু একটা শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
কিন্তু এখানেও কিছু বিজ্ঞানী তার বিপক্ষে যুক্তি দার করিয়েছে।কিন্তু অবশেষে দেখা গেছে যতবারই বিভিন্ন ব্যাক্তির উপর এই পরীক্ষা করা হয় ততবারই মৃত্যুর পর ওজন ২১ গ্রাম কমে যায়,
সেই থেকে ধারনা করা হয় যে শরীর থেকে কিছু একটা চলে যায় যেটাকে আত্মা বলে ধরে নেয়া যায় আর এর ওজন ২১ গ্রাম।
পরবির্তিতে এই পরীক্ষাটি ২১ গ্রাম থিউরি নামেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়।
এতক্ষণ তো দেখলাম যে ভূতের অস্তিত্ব রয়েছ।।।এখন বিপরীত যুক্তিও তুলে ধরবো?
একদল মনে করে যে ভুত বলতে কিছু নাই।আমরা যা দেখি অথবা যা শুনি তার ৯০% ই ফেইক।এইগুলা আমাদের মস্তিষ্কের ভ্রম ছাড়া আর কিছুই না।
এই কাজেই এগিয়ে এসেছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ ব্রায়ান: কক্স। এই ইংরেজ পরমাণু বিজ্ঞানী টেলিভিশনে বিজ্ঞান সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের সূত্রে আবার তুমুল জনপ্রিয়। সম্প্রতি কক্স জানিয়েছেন, ভূতের অস্তিত্ব নেই। যদি তা থাকত, তা হলে বিশ্বের সবথেকে বড় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় তা ধরা পড়তই। কী এই সব থেকে বড় পরীক্ষা?
কক্স জানিয়েছেন, মানুষের মৃত্যুর পরে তার আত্মা কোথায় যায়, তা নিয়ে সভ্যতার উন্মেষের কাল থেকেই মানুষ সন্ধান চালিয়েছে। যদি তেমন কোনও ‘যাওয়ার জায়গা থাকত, তা হলে তা নিশ্চিতভাবেই বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র সার্ন এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার এ ধরা পড়ত।
লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার আসলে বিশ্বের বৃহত্তম আণবিক বিশ্লেষক। চৌম্বক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই যন্ত্র মহাজগতের মৌলিক বস্তুসমূহকে বুঝতে যায়। এই বিশ্লেষণ থেকে আমাদের চারপাশে দৃশ্যমাণ জগতের প্রতিটি এলিমেন্টকেই জানা বা বোঝা যায়। লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যে কোনও এনার্জিকেও বিশ্লেষণ করতে সমর্থ।
কক্সের মতে, ভূত যদি থাকত, তবে তারা এনার্জি দিয়েই গঠিত হত। কারণ, আত্মা যে কোনও পদার্থ দিয়ে গঠিত নয়, তা প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না।