ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

জন্মদিন পালন করা কি হারাম?

ইসলাম অনুযায়ী জন্মদিন পালন করা জায়েজ আছে কিনা?  জন্মদিন পালন করা কি হারামে?  এ বিষয় নিয়ে ইসলাম ও স্বাভাবিক বাস্তবতা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।

কিভাবে জন্মদিন পালন এর উৎপত্তি হয়।

প্রথম এ জন্মদিন এর উৎপত্তি সম্পর্কে জানা যাক। জন্মদিন এর প্রথম প্রচলন হয় ফেরাউন এর একটা ঘটনা থেকে। বাইবেলের বুক অব জেনেসিস এ বলা হয়েছে, ‘তৃতীয় দিনটা ছিল ফিরাউনের জন্মদিন। ফিরাউন তার সব দাসদের জন্য ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময়ে ফেরাউন রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলো”। (আদি পুস্তক,৪০:২০)

এখানে থেকে জন্মদিন এর প্রচলন শুরু হয়। অর্থাৎ এটা মুসলিম এর কোন ধর্মীয় উৎসব নয়। এখনে একটা হাদিস এর কথা বললে বুঝতে পারবেন জন্মদিন পালন করা যাবে কিনা। একটি হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন , “যে ব্যক্তি যে জাতির নমুনা অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।” (সহিহুল জামে : ৬০২৫)

জন্মদিন পালন এর কোন গুরুত্ব ইসলাম এ নেই।   সাহবারা জন্মদিন কে অন্যান্য সাধারণ দিন এর মতো মনে করত। হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জন্মের তারিখ নিয়ে ও অনেক মতপার্থক্যে রয়েছে। নবী করিম (সঃ) সোমবার এ রোজা রাখতেন। এর পিছনে অনেক গুলো কারন এর মধ্যে একটা ছিল এ দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি এটা বাৎসরিক হিসেবে পালন করতেন না।

জন্মদিন নিয়ে শিক্ষনীয় বাস্তবিক একটা গল্প।

একদিন কোন একটা লোক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সে হটাৎ করে দেখতে পেল রাস্তায় একটা ছেলে খুশিতে লাফালাফি করছে। সে ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল তুমি এত খুশি কেন।

ছেলেটি বলল আমার ১০০০ টাকা হারিয়ে গেছে এজন্য এত খুশি। লোকটি রীতিমতো মনে করলে এর নিশ্চয় মাথায় কোন সমস্যা আছে। নাহলে কেউ টাকা হারিয়ে গেলে আনন্দ করে নাকি। যাই হউক এ নিশ্চয় পাগল বা কোন অদ্ভুত টাইপ এর বোকা হবে। এখন আপনি একটা প্রশ্নের উত্তর দিন।

আপনার কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ১) এক হাজার টাকা। ২) আপনার জীবন। 

আমি মনে করি এবং আপনি নিশ্চয়ই বলবেন যে এক হাজার টাকার তুলনায় আমার জীবন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যদি ওই পাগল ছেলের ঘটনাকে আমাদের জীবন এর সাথে তুলনা করি। ছেলেটি এক হাজার টাকা হারিয়ে আনন্দ করছে। এজন্য তাকে আমরা পাগল বলছি। আর আমরা আমাদের জীবন থেকে একটা বছর হারিয়ে আনন্দ করছি। তাহলে আমরা কতটা বোকা আর পাগল তার কোন সীমা-পরিসীমা নেই।

জন্মদিন পালন করা কি হারাম বা জায়েজ আছে।

প্রথম কথা হচ্ছে জন্মদিন পালন করা হারাম বা যাবে না এরকম কোন বিধিনিষেধ নেই। তবে জন্মদিন পালন করা চরম মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়। যে দিনে আমাদের জীবন থেকে একটি বছর চলে গেলে সেদিন কিভাবে আমাদের আনন্দের দিন হয়।

যদি বলেন জন্মদিন পালন হারাম বা জায়েজ আছে কিনা। অনেকটা নির্ভর করে আপনি কিভাবে পালন করছেন। আপনি জন্মদিন উপলক্ষে রোজা রাখেন, নফল নামাজ পড়েন। গোনাহ তো দূরের কথা বরং সওয়াব হবে।

জন্মদিন উপলক্ষে গান/ বাজনা, আনন্দ করা, ফুর্তি করা ঠিক নয় বা জায়েজ নেই। জন্মদিন পালন করা কোন আদর্শ মুসলিম এর শিক্ষা নয়। বরং এটা খ্রিস্টান ও অমুসলিম এর সংস্কৃতি। আমরা অনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link