স্বাস্থ্য

কোন কলায় বেশি উপকার? পাকা নাকি কাঁচা কলা?

কলা অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য যা সুলভ মূল্যে বাজারে পাওয়া যায়। কলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কলা ফলটিতে থাকা ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ১০০। এছাড়াও এতে রয়েছে নানা রকম খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। কলা হজমশক্তি বৃদ্ধি, হৃদ্‌স্বাস্থ্যের সুস্থতায় ও ওজন কমাতে অনেক ভাবে সহায়ক। জেনে অবাক হবেন,  একটি বড় কলায় (৮-৯ ইঞ্চি) রয়েছে ১২০ ক্যালরি ও ৪৯০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এতে একজন মহিলার দৈনিক পটাশিয়ামের চাহিদার ১৯ শতাংশ এবং একজন পুরুষের চাহিদার ১৫ শতাংশ পূরণ হয়। এই পুষ্টিকর উপাদান শরীরের সোডিয়াম অপসারণ করে রক্তনালি শিথিল করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

এই উপকারী ফলটি ভিটামিন বি৬–এর খুব ভালো উৎস। ভিটামিন বি৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া কলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন ও ফ্যাট যা আমাদের দেহের জন্য উপকারী। সুস্থ থাকতে চাইলে এই কলা তাই প্রতিদিন খাওয়া উচিত।

 

তবে এখন একটি প্রশ্ন, কোন কলায় সবচেয়ে বেশি উপকার?  কাঁচা কলা নাকি পাকা কলা? কোন কলা খেলে আপনার বেশি উপকার হবে। চলুন জেনে আসি সে উত্তর। 

 

১. পাকা কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি যেমন-ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ এবং সু্ক্রোজ যা আমাদের শরীরের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। 

 

২.  পাকা কলা খুব সহজে হজম করা যায়। বৃদ্ধ মানুষের জন্য তাই হজমে সুবিধা হবে। 

 

৩, পাকা কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। 

 

৪. পাকা কলা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

 

৫. এছাড়াও পাকা কলা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এটি আমাদের হৃদরোগের জন্যও উপকারী এবং প্রয়োজনীয়। 

 

এবার বলি কিছু নেতিবাচক ব্যাপার। যা আছে পাকা কলায়। এতে অতি  উচ্চ পরিমাণে গ্লাইসিমিক ইনডেক্স থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। কারণ হিসেবে বলা যায়, কলা যত বেশি পাকা হবে এতে সুগারের পরিমাণও তত বাড়বে যা ক্ষতিকর। 

 

এবার আসি কাচা কলার কথায়। এমনিতে কাঁচা কলা প্রায়সই তরকারী হিসাবেই খাওয়া হয়। তবে এর বেশ কিছু পুষ্টিগুণ আছে। যেমন-

 

১. এটি রোগী বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।

 

২. এতে থাকা প্রবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

 

৩. ডায়রিয়া রোগীদের জন্য এটি অতিশয় বেশ কার্যকরী।

 

৪.এছাড়াও  কাঁচা কলায় নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে। বিশেষ করে এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় কাঁচা কলায়।

 

তবে কাঁচা কলা খেলে কিছু সমস্যাও হতে পারে অনেকের। যেহেতু এতে খুব কম পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। কেউ কেউ এটি খেলে হজমের সমস্যায় ভুগতে পারে। কারও কারও আবার গ্যাসেরও সমস্যা দেখা দেয়।

 

উপরের আলোচনা থেকে বোঝা গেল, কাঁচা কলা এবং পাকা কলায় উভয়েই আমাদের শরীরের জন্য অতীব জরুরি। তাই সুস্থ থাকতে দুটিই খেতে পারেন পছন্দ মতো। তবে ডায়াবেটিস থাকলে পাকা কলা এড়িয়ে চলায় ভালো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link