বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা

যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লবসাধনকারী চাকার আবিষ্কার কখন ও কিভাবে হয়

চাকা ছাড়া আজকের পৃথিবী কল্পনাই করা যায় না। একবার ভাবুন তো, আজ যদি চাকা না থাকত আমাদের চারপাশটা কি অন্যরকম হতো না? চাকা আবিষ্কার মানব সভ্যতায় এনেছে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। চাকা না থাকলে মানুষ আজও পায়ে হেঁটে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করত। চাকা আছে বলেই আজ আমরা যে কোনো জায়গায় এত দ্রুত যেতে পারি। চাকা হীন পৃথিবীটা হতো অনেক কষ্টসাধ্য। যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক বিপ্লব সাধন করেছে এই চাকার আবিষ্কার। চাকা আমাদের শ্রমকে অনেক কমিয়ে দিয়েছে। ইতিহাসবিদদের মতে চাকার আবিষ্কার হলো শতাব্দীর সবথেকে সেরা আবিষ্কার। কিন্তু এই চাকা কবে কিভাবে আবিস্কার হয়েছিল, সেটা কখনো ভেবে দেখেছেন কি?

 

ধারণা করা হয় যিশু খ্রিষ্টের জন্মের ৩৬০০ বছর পূর্বে প্রাচীন রোমানিয়ার কুকুটেনি ট্রিপিলিয়ান সভ্যতায় সর্বপ্রথম চাকা আবিষ্কারের সূচনা হয়। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করেছে চাকার আবিষ্কার। চাকা একটি প্রাচীন, প্রশংসনীয় ও চমকপ্রদ আবিষ্কার যেটা মানুষ সম্পূর্ণ তার নিজের কল্পনা শক্তি দিয়ে আবিষ্কার করেছে। 

 

মানুষ আজ পর্যন্ত যা কিছু আবিষ্কার করেছে সেখানে প্রকৃতি থেকে নেয়া অনুপ্রেরণা কাজ করেছে। যেমন- বিমান আবিষ্কারের চিন্তা মানুষের মাথায় এসেছে পাখির ওড়া দেখে। মানব জাতি  ভেবেছেন তারাও পাখির মতো কিভাবে উড়তে পারবে। পাখির শরীরের গঠন ও ওড়ার টেকনিক নিয়ে মানুষ গবেষণা করেছে এবং তা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই বিমান আবিষ্কার করেছে। এরকম আরো অনেক আবিষ্কার মানুষ করেছে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে। কিন্তু চাকাই সর্বপ্রথম এমন একটি আবিষ্কার যেটায়  মানুষ ১০০% তার কল্পনা শক্তির ব্যবহার করেছে এবং অবশেষে কালের বিবর্তনে চাকা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। 

 

চাকা আবিষ্কার কিভাবে হয়েছে এই বিষয়টি  নিয়ে   দুইটি মত বিশেষ ভাবে প্রচলিত । ১.মানুষ হাঁটার বিকল্প হিসেবে চলাচলের জন্য চাকা আবিষ্কারের ধারণা মাথায় এনেছে। 

২.মানুষ দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত চলাচলের জন্য চাকা আবিষ্কারের কথা চিন্তা করতে পারে। 

তবে মজার ব্যাপার হলো এই ২টি কারণের মধ্যে কোনটাই চাকা আবিষ্কারের পিছনে দায়ী নয়। মানুষ পৃথিবীতে আগমনের অনেক বছর পর পৃথিবীতে চাকার আবিষ্কার হয় এবং প্রথম যে চাকা বানানো হয়েছে সেটা যোগাযোগের প্রয়োজনে বানানো হয় নি। সর্বপ্রথম চাকা ব্যবহার করেছিল কুমোরেরা। তারা মাটির তৈরি জিনিসপত্র বানানোর জন্য এক প্রকার মাটির চাকা ব্যবহার করে। ধারণা করা হয়, খ্রীস্টপূর্ব ৩৫০০ সালে মেসোপোটেমিয়ায় কুমোররা চাকা ব্যবহার করা শুরু করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র বানানোর জন্য। এরপরও ৩০০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর মানুষ টানা গাড়িতে চাকা ব্যবহারের কথা চিন্তা করে এবং ব্যবহার শুরু করে। 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link