সুস্থ থাকতে সাদা চিনির পরিবর্তে এই ৫টি প্রাকৃতিক মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

সাদা চিনি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই সুস্থ থাকতে চিনি নয়, সঙ্গী করুন এই ৫টি প্রাকৃতিক মিষ্টি।

 

মিষ্টির পরিবর্তে জিভকে প্রাকৃতিক সুগারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখুন। প্রক্রিয়াজাত চিনি অর্থাৎ রিফাইনড সুগার একেবারেই ছেঁটে ফেলুন…

 

সুস্থ থাকতে জীবন থেকে মিষ্টি ছেঁটে ফেলতেই হবে। কিন্তু মিষ্টি ছাড়া শুধুই তেতোকে বন্ধু বানিয়ে কি আর জীবন কাটানো যায়! এদিকে জীবনে মিষ্টি থাকলেও ঘোর বিপদ৷ যে কোনও মুহূর্তে জটিল কোনও শারীরিক সমস্যার শিকার হতে পারেন। সেই সঙ্গে ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যা, ট্রাইগ্লিসারাইডস, উচ্চরক্তচাপ এসে জুড়ে বসতে পারে। যেখান থেকে পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে জটিল হতে পারে। জন্মদিনের কেক, সিনেমা হলের পপকর্ন-কোকাকোলা কিংবা ফ্রুট জুস- এই সবের মধ্যেও কিন্তু থাকে প্রচুর পরিমাণ চিনি। কিংবা প্রথম আইসক্রিম ডেট- চিনি কিন্তু মোটেই কাছছাড়া হতে চায় না। বিজ্ঞাপন কিংবা ইন্সটাগ্রামের পাতায় কেক-পেস্ট্রি-আইসক্রিমের ছবি দেখতে যতই ভাল লাগুক না কেন বাস্তব জীবনে কিন্তু তা মোটেও ভাল নয়। প্রথম থেকেই এদেরকে নিজের শত্রু মনে করুন। তবে নিজে যেমন সুখে থাকবেন তেমনই কিন্তু দূরে থাকবে একাধিক শারীরিক সমস্যাও। গরম জিলিপি-পান্তুয়া-রাবড়ির লোভ সংবরণ করা খুবই মুশকিলের। কিন্তু এই মিষ্টিই আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার ক্ষমতা রাখে। কিডনি, হার্টের সমস্যা, ডিপ্রেশন এই সবকিছুর জন্য দায়ী কিন্তু সেই মিষ্টি।

 

তাই মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করুন, কিন্তু মিষ্টিকে ছাড়বেন না। বুঝতে পারলেন না তো! মিষ্টির পরিবর্তে জিভকে প্রাকৃতিক সুগারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখুন। প্রক্রিয়াজাত চিনি অর্থাৎ রিফাইনড সুগার একেবারেই ছেঁটে ফেলুন। পরিবর্তে মধু, গুড়, ব্রাউন সুগার, তালের চিনি, স্টেভিয়া পাতা এসব খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই সব মিষ্টি কিন্তু ১০০ শতাংশ প্রাকৃতিক। সেই সঙ্গে এই তিন চিনির মধ্যে কোনও রকম ভেজাল থাকে না। পায়েস, পানীয় থেকে আইসক্রিম- যে কোনও কিছুই কিন্তু তৈরি হতে পারে এই চিনি থেকে। দেখে নিন চিনির বদলে এবার কারা ঠাঁই পেতে চলেছে আপনার সাধের রান্নাঘরে।

 

প্রাকৃতিক শর্করা বা ব্রাউন সুগার- আখ আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আখের রস থেকেও কিন্তু চিনি তৈরি হয়। এই চিনি দেখতে বাদামী রঙের হয়। সেই সঙ্গে এর স্বাদও কিন্তু গুড়ের মত। এই চিনির মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কম। সেই সঙ্গে তা ব্যবহার করা যেতে পারে পায়েস, চা এবং কেক তৈরির কাজেও। এছাড়াও যে কোনও গরম পানীয়ের সঙ্গে খেতে পারেন। ডেজার্ট তৈরিতেও আজকাল ব্যবহার কপা হচ্ছে এই চিনি।

 

তালের চিনি-তালের থেকে তৈরি চিনি কিন্তু সুগার রেগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারী। তালের গুড়ও তৈরি হয়। সেই গুড় নিষ্কাশিত করে সেখান থেকে চিনি তৈরি হয়। এছাড়াও তাল ফুলের থেকেও তৈরি হয় চিনি। ফুলের মধ্যে যে ফ্রুক্টোজ থাকে তার থেকে প্রক্রিয়াকরণের মধ্যে দিয়েই কিন্তু চিনি তৈরি করা হয়। যে কারণে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে এই চিনি কিন্তু খুব জনপ্রিয়।

 

খেজুরের চিনি-সেই প্রাচীনকাল থেকেই মিষ্টি তৈরিতে খেজুর গুড় ব্যবহার করা হয়। শীত মানেই খেজুর গুড় ছাড়া অন্য কোনও কিছুর কথা ভাবাও যায় না। এছাড়াও আজকাল খেজুরের পাটালি পাওয়া যায় প্রায় সারাবছর। সেই সঙ্গে খেজুর থেকেও তৈরি হয় চিনি। খেজুর থেকে যে চিনি তৈরি হয় তা কিন্তু আমাদের ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে। এই চিনির স্বাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খানিকটা সময় লাগে. কিন্তু একবার মানিয়ে নিতে পারলে সেখান থেকে একাধিক উপকারিতা পাবেন।

 

গুড়-এত সব চিনি ছাড়াও গুড় তো আছেই বাড়িতে পছন্দের মিষ্টি বানিয়ে ফেলুন গুড় দিয়েই। মাংসও কিন্তু অভিনব পদ্ধতিতে বানাতে পারেন খেজুর আর আমসত্ত্ব দিয়ে। একরকম গুড় পাওয়া যায় যা দানাদার হয়। এই গুড়ের মধ্যে আয়রনের পরিমাণ অনেক বেশি। এবং তা কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যেও খুব ভাল।

 

মধু- বাজারে অনেক রকম মধু পাওয়া যায়। চেষ্টা করুন বলের খাঁটি মধু খেতে। এতে কোনও রকম প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে না। সেই সঙ্গে এই মধু আমাদের শরীরের জন্যেও ভাল। থাকে প্রয়োজনীয় খনিজ৷ একগ্লাস ইষদুষ্ণ জলে মধু দিয়ে খেলে যেমন আমাদের শরীর আর্দ্র থাকে তেমনই শরীর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পায়।

 

এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *