কবিতাসাহিত্য

একটা নির্ঘুম রাত – কবিতা

লেখক

নির্মল ঘোষ

একটা নির্ঘুম রাত কালজয়ী হবে
বুঝতে পারিনি কখনো।
জীবনে হাজারো রজনী কখন
কেটে গেছে বুঝতে চাইনি।
হঠাৎ একটা নির্ঘুম রাত
আমাকে অনেক কিছু
বুঝিয়ে গেলো।
আজ হাজারটা রজনী পর
আমি আমাকে চিনতে পেরে
শিউরে উঠলাম, এ কে আমি।
আমার আমিটা আমার ভেতর থেকে
বেড়িয়ে এসে অকপটে
আমাকে বুঝিয়ে দিলো
আমার প্রকৃত স্বরূপ।
আমি অনেক চেষ্টা করেও
যখন ঘুমের স্যান্নিধ্য পেলাম না।
আমি চুপিসারে ঘর থেকে বেড়িয়ে
নদীর পাড়ে বসে দূর দিগন্তে
তাকিয়ে আছি।
রিমঝিম বাতাস বারবার
আমাকে মৃদু স্পর্শ করে যাচ্ছে।
জৈষ্ঠ্যের দহনে নদী প্রায় জলশূন্য।
ওদিকে ঝিঁঝি পোকা গুলো
মাতাল সুরে গাইছে গান।
রাত্রির মধ্যভাগ পেরোতে বসেছে।
অনেক চেষ্টা করেও চন্দ্রখানি
দেখবার সৌভাগ্য হলোনা আমার।
দূর্বাঘাস গুলোর উপর
শিশিরের জল আটকে আছে
খুবই নগন্য।
ঠিক ওপরের চিতা থেকে ধোঁয়া
একটু একটু করে এদিকে ভাসছে।
নিচে চোখ পড়তেই নদীতে রক্ত স্রোত।
কর্ণমূলে মিছিলে গুলিবর্ষণের
আওয়াজ, চিৎকার।
তারপর বিজয়ের উল্লাস।
সেখানে দেখি আমিও আছি,
আমার সাথে ভাষা শহীদ, বুদ্ধিজীবী
বীর মুক্তিযোদ্ধা সবাই।
সবার হাতে মশাল কিন্তু আগুন নেই।
বিজয়ের উল্লাস রাত্রির গাড় অন্ধকার
ঢেকে রেখেছে গহীনে।
এই দৃশ্য আমি আর মানতে পাড়ছি না।
বিচলিত আমি যখন চিৎকার করে
জয় বাংলা স্লোগান দিলাম।
এক দল নবীন,বীর সাহসী তরুণ,
আমার দেওয়া স্লোগান কে
বর্জ্রকণ্ঠে প্রতিধ্বনিত করলো।
আমাকে বললো হে বীর মুক্তিযোদ্ধা
আজ আমরা বাংলাকে
কলঙ্ক মুক্ত করেছি।
তাকিয়ে দেখো নদীতে রক্তস্রোত,
এই রক্ত দোসর, কুলাঙ্গার, ঘুষখোর,
চাঁদাবাজিদের জঘন্য রক্ত।
এরাই তো গৌরবান্বিত স্বাধীনতাকে
তাদের কুচক্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন
করে রেখেছিলো এতোগুলা দিন।
আমি রক্তস্রোত পায়েদোলে
চিতা থেকে একটুকরো আগুন নিয়ে
একে একে সবগুলো মশাল জ্বেলে দিলাম।
চারিধার আলোয় আলোকিত হলো।
বীর শহীদের মশালের আলোয়
পূর্ব দিগন্তে উদিত হলো নতুন সূর্য।
আর একটা নতুন স্বাধীনতা,
একটা নতুন সোনার বাংলা।

READ MORE:  মুসা বিন শমসের বাংলাদেশী ধনকুবের রহস্য! | Moosa Bin Shamsher Biography

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *