স্বাস্থ্য

কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম

প্রায়ই আমরা কৃমির রোগে আক্রান্ত হই। কৃমি দূর করতে হলে প্রথমেই জানা দরকার এটি কেন হয়? নোংরা পরিবেশ, অনিরাপদ পানি পান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খালি পায়ে হাঁটা কৃমি সংক্রমণের জন্য দায়ী।

 

কৃমি হলেও ওষুধের মাধ্যমে দূর করার উপায় আছে। কিন্তু অনেকে নানা ভুল ধারণার জন্য ভয়ে কৃমির ওষুধ খান না। শিশুদেরও খাওয়াতে চান না। কিন্তু ওষুধ নিয়ম মেনে খেলে আর সহজ কিছু উপায় মেনে চললে সহজেই কৃমি দূর করা যায়।

 

কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম- 

 

১. প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়। শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে। দুই বছরের নিচে কোনো শিশুকে খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

২. চিনি খেলে বা মিষ্টি খেলে কৃমি হবে বলে যে ধারণা প্রচলিত, তা ঠিক নয়। মিষ্টি বা চিনি খাওয়ার সঙ্গে কৃমির কোনো সম্পর্ক নেই। বরং নোংরা হাতে বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কৃমি হবে।

 

৩. কৃমি হলে পায়ুপথ চুলকায় বলে শিশুরা সেখানে হাত দেয়। পরে আবার সেই হাত মুখে দেয়। এভাবেই সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। তবে পায়ুপথ চুলকানো মানেই কৃমি সংক্রমণ নাও হতে পারে। কৃমি সংক্রমণের আরও উপসর্গ আছে। যেমন: ওজন না বাড়া, পেট ফাঁপা, পেট কামড়ানো, আমাশয়, অপুষ্টি, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।

 

৪. গরমকালে কৃমিনাশক খাওয়া যাবে না—এমন ধারণারও কোনো ভিত্তি নেই। গরম, শীত, বর্ষা যেকোনো সময়ই কৃমিনাশক খাওয়া যাবে। তবে খাওয়ার পর বা ভরা পেটে খাওয়া ভালো।

 

৫. কৃমিনাশক নিরাপদ ওষুধ। এর তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে কারও কারও পেট ফাঁপা বা বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় কৃমিনাশক খেয়ে শিশুদের অসুস্থ হওয়ার যে খবর পাওয়া যায়, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা ও কুসংস্কারজনিত।

READ MORE:  কণ্ঠের যত্নে অবহেলা করছেন না তো?

 

৬. পানি অবশ্যই ফুটিয়ে বা বিশুদ্ধ করে পান করবেন। শাকসবজি ও মাংস খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে ভালো করে হাত ধুতে হবে। শিশুদের খাওয়ার আগে ও শৌচাগার ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে কীভাবে ভালো করে হাত কচলে ধুতে হয়, তা শেখানো জরুরি।

 

৭. বাইরের খোলা অপরিচ্ছন্ন খাবার না খাওয়াই ভালো। মাঠঘাটে শিশুদের খালি পায়ে খেলতে দেবেন না।

 

৮. কেবল গ্রামে বা রাস্তায় থাকা শিশুদের কৃমি হয়—এই ধারণাও ভুল। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে-কারও কৃমি সংক্রমণ হতে পারে। তাই অপুষ্টি এড়াতে নিয়মিত কৃমিনাশক খাওয়াই ভালো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *