স্বাস্থ্য

ভ্রমণের সময় বমি রুখতে করনীয়

অনেকেই আছেন গাড়িতে চড়ার সময় কাছে বা দূরের যাত্রাপথে মাথা ঘুরায়। একই সঙ্গে বমি বমি ভাব চলে আসে অথবা কারোর বমি হয়ে যায়। এটাকে মেডিকেলের ভাষায় বলা হয় ‘মোশন সিকনেস’। এ সমস্যা থেকে চাইলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।

 

যখন কেউ কোনো যানবাহনে চলাফেরা করেন তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। তবে চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো থাকে স্থির। আমাদের চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার কারণে মোশন সিকনেস হয়। এছাড়াও অ্যাসিডিটি, অসুস্থতা, গাড়ির ধোঁয়া কিংবা বাজে গন্ধের কারণেও গাড়িতে বমি হতে পারে।

 

বমি প্রতিরোধে করণীয়:

 

১. যাদের এই সমস্যা রয়েছে, তারা চেষ্টা করবেন যেদিকে গাড়ি চলে তার উল্টো দিকের সিটে না বসা। কারণ উল্টোদিকে বসলে বমি ভাব বেশি হয়ে থাকে।

 

২. চেষ্টা করবেন গাড়ির সামনের দিকে বসার। কারণ পেছনে বসলে গাড়িকে বেশি গতিশীল মনে হয়, যার ফলে দ্রুত ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বমিভাব দেখা যায়।

 

৩. চেষ্টা করবেন জানালার পাশে বসার এবং জানালা যেন খোলা থাকে। এক্ষেত্রে এসি পরিবহন হলে অবশ্য কিছু করার নেই। আর জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকার চেষ্টা করবেন, এতে বমি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

 

৪. বমি করার কথা কখনো চিন্তা করবেন না, এতে বমির বেগ হতে পারে। আপনার সাথে কেউ সহযাত্রী থাকলে তার সাথে গল্প করবেন, কথা বলবেন। তবে খেয়াল রাখবেন অবশ্যই যাত্রা পথে কারও দেয়া কোনও খাবার গ্রহণ করবেন না, এতে বিপদ হতে পারে এবং আপনার যাত্রা অনিরাপদ হয়ে যেতে পারে।

 

৫. চোখ বন্ধ রাখতে পারেন অথবা ঘুমিয়ে যেতে পারেন। যাত্রার আগের দিন ঠিক মতো ঘুম হওয়া জরুরি। অনেক সময় পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে মাথাব্যথা ও বমি হতে পারে।

 

৬. গাড়িতে উঠার আগে হালকা কিছু নাস্তা খেতে পারেন। কখনই খালি পেটে ভ্রমণ করবেন না। ভ্রমণের আগে বেশি খাবার খাবেন না। যাত্রাপথে যত কম খাবেন, ততো ভালো।

 

৭. বমি ভাব দূর করার জন্য আদা, লেবু, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেতুল চাটনি, আচার, কমলা বা টক জাতীয় যে কোনো ফল সঙ্গে রাখা যেতে পারে। এতে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়।

 

৮. লেবু পাতাও সঙ্গে রাখা যেতে পারে, এই সুঘ্রাণ বমি ভাব দূর করে দিবে। বয়স্ক মহিলা এবং গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে যাত্রা পথে বিশেষ যত্ন রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাত্রা পথে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা।

 

৯. যখনই বমি ভাব হবে মুখে এক টুকরা লবঙ্গ দিন। এতে বমি ভাব চলে যাবে।

 

১০. চুইংগাম, লজেন্স খেতে পারেন। এতে বমি ভাব হবে না।

 

১১. বমি রোধে কিছু সাধারণ ওষুধ সঙ্গে রাখতে পারেন। বাজারে জয়ট্রিপ, ডমপেরিডন ও অনডেনসেট্রন জাতীয় কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। এই ওষুধ গাড়িতে উঠার আগে অথাবা খাবার পূর্বে খেয়ে নিতে পারেন। তবে এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেডিসিন গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত বা অযথা বমির ট্যাবলেট খেলে বিপদ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। 

 

যারা বমি নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় আছেন এবং বারবার এ রকম সমস্যা হচ্ছে। তাদের উচিত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দূরের পথে যাত্রা করা। চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠা সম্ভব। এ ছাড়া যাত্রা পথে খোলা খাবার গ্রহণ না করা উচিত। সকলের ভ্রমণ সুন্দর হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link