তুলসী পাতার উপকারিতা কতটুকু জানি?
শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে তুলসী পাতা মহৌষধ। বাচ্চার সর্দি-কাশি থাকলে আধা চা–চামচ মধুর সঙ্গে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে কাশি কমে যাবে। বুকে কফ বসে গেলে সকালবেলা এক গ্লাস পানিতে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করুন, আরাম পাবেন। এ ছাড়া মাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা অনেক কার্যকরী। তুলসী পাতা ফুটিয়ে গড়গড়া করলে গলাব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।
তুলসী পাতা রক্তের সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল দুটোই কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে খুব সহজেই আপনি ওজন বৃদ্ধির হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
ক্যানসার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। ক্যান্সার এক মরণঘাতি অসুখের নাম। এই অসুখ দূরে রাখতেও সাহায্য করে তুলসি পাতা। এই পাতায় আছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এতে আরও আছে ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক এসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন। এসব উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে কার্যকরী। অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় তা দূর করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী। পাশাপাশি দূরে রাখে ব্রেস্ট ক্যান্সারও।
তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। তুলসী পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক অ্যাসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন ক্যানসারের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকরী। অগ্ন্যাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয়, তা দূর করতেও তুলসী উপকারী। ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও তুলসী পাতা খুব কার্যকরী।
আসুন জেনে নেই তুলসীর পাতার উপকারিতা-
১. ঠাণ্ডা-কাশি থেকে রক্ষা পেতে তুলসী পাতা ও আদার রসের সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে ঠাণ্ডা-কাশি ভালো হবে।
২. সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়বে।
৩. তুলসী পাতার রস খেলে দ্রুত জ্বর ভাল হয়।
৪. তুলসী পাতা গরম পানিতে সেদ্ধ করে সে পানিতে গড়গড়া করলে মুখ ও গলার রোগজীবাণু মরে, শ্লেষ্মা দূর হয় ও মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়।
৫. তুলসী চা শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়।
৬. মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথা কমাতে তুলসী খুবই উপকারী।
৭. চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ওই পানি দিয়ে সকালবেলা চোখ ধুয়ে ফেলুন।
বাসার বারান্দায় বা ফুলের টবে অন্তত একটি তুলসী গাছ লাগাতে পারেন।
তুলসী পাতা ব্যবহারের নিয়ম
তুলসী পাতার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এ সকল উপকারিতা তাে আমরা জেনে গেছি৷ কিন্তু এই তুলসী পাতা ব্যবহার করবাে কিভাবে? কিভাবে খাবাে কিংবা ত্বকে যত্নে ব্যবহার করবাে? আসুন জেনে নিই তুলসী পাতা ব্যবহারের নিয়ম।
- আদা কিংবা মধু দিয়ে তুলসী পাতার রস খেতে পারেন।
- কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন এই পাতা।
- কুসুম গরম পানিতে এই পাতা ফুটিয়ে সেই পানি খেতে পারেন।
- এই পাতা খেতে পারেন লিকার চা এর সাথেও।
- গরম পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে টোনার হিসেবে ব্যবহার
করা যায়।
- ফুটন্ত পানিতে তুলসী পাতা দিয়ে সেই গরম পানির ভাপ নিলে ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- তুলসী পাতা, নিমপাতা, মুলতানি মাটি, চন্দন, লবঙ্গ ও সামান্য কপূর দিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করে তা মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
- কাঁচা হলুদের পেস্ট, তুলসী পাতার রস ও বেসন দিয়ে
মিশ্রণ বানিয়ে তা মুখে দিতে পারেন।
- তুলসী পাতার রসের সাথে ঝিঙের রস মিশিয়ে মুখে বা ত্বকে লাগাতে পারেন।
- বেসনের সাথে এই পাতা দিয়ে ফেস প্যাক বানিয়ে মুখে লাগালে ত্বক বা মুখের দাগ দূর হয়।
- হাত ও পা এর কালাে দাগ দূর করতে তুলসী পাতার রস, দুধ, ময়দা, কাঁচা হলুদবাটা ও জাফরান একস মিশিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে তা হাত ও পায়ে লাগানো যেতে পারে।
তুলসী পাতার অপকারিতা
তুলসী পাতা উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে এটিও হয়ে উঠতে পারে ক্ষতিকর। আসুন জেনে নিই এর অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলাে।
- অতিরিক্ত তুলসী পাতা নারীদের বন্ধাত্বের কারণ হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় এই পাতা অতিরিক্ত খেলে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে এই পাতা খেলে রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে কোনাে অপারেশন বা কোথাও কেটে গেলে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে যা ক্ষতির কারণ।
- এই পাতা বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম যুক্ত হওয়ায় এটি অতিরিক্ত খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে এক সময় রক্তচাপ একদম কমে যেতে পারে, যা আবার ক্ষতির কারণ।
পরিশেষে- তুলসী পাতার অনেক উপকারিতা হলেও এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিৎ। বেশি পরিমাণে খেলে হিতে বিপরীত হয়। আর এই ওষধি গাছ যেহেতু সহজেই জন্মায় তাই বাড়িতে প্রত্যেকেরই উচিৎ কমপক্ষে একটি হলেও তুলসী গাছ লাগানাে।