ইসলামিক বিষয়াদিইসলাম

হায়েজ বা মাসিক অবস্থায় সহবাস করা যাবে কি?

হায়েজ বা মাসিক অবস্থায় সহবাস করা যাবে কি?

প্রিয় দীনি ভাই-বােনদের জানিয়ে রাখছি। হায়েজ বা মাসিক অবস্থায় সহবাস করা নিষেধ। এটা হারাম কাজ। পবিত্র কোরআন ও হাদীসে নববীতে এ সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে । দলীল হিসেবে প্রথমে আপনাদের পবিত্র কুরআনের| আয়াত দেখাচ্ছি।

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, قادا ت لقب خلي يطير و اذی فاعتزلوا البناء في المحيض و ويتلونک عن المحيض ن قانون بي حيث أمره الا الله التطرين يج الاين و

অনুবাদ: আর তােমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তােমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (আল বাকারা – ২২২)।
আলােচ্য আয়াতে স্পষ্ট করে হায়েজ অবস্থায় সহবাস করা নিষেধ করা হয়েছে। পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে । এ ব্যাপারে হাদীসের নির্দেশনা থাকায় উক্ত বিধানটি দলীলের ক্ষেত্রে আরাে মজবুত হয়েছে। এবার হাদীসটি দেখুন। عن أبي هريرة، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: ث أني ځايحاء أو المرأة في برقاء، أو كاها، فقد كفر بما أنزل على شكثر অনুবাদ: হযরত আবু হুরায়রা রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঋতুবর্তীর সাথে মিলিত হয় কিংবা কোন মহিলার পশ্চাৎদ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোন গণকের নিকট যায় নিশ্চয়ই সে মুহাম্মদের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করে । ফুটনােট-তিরমিযী, হাদীস নং-১৩৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৩৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯২৯০)
উক্ত হাদীসে তিনটি বিষয়ের ভয়াবহতা বর্ণনা করা হয়েছে।
১. হায়েজ বা মাসিক অবস্থায় সহবাস
২. পচাৎদ্বারে সহবাস
৩. গণকের কাছে যাওয়া।
মারাত্বক এই তিনটি অপরাধ থেকে সকলের বেচে থাকা একান্ত কর্তব্য। ( আল বাহরুর রায়েক, খণ্ড নং ১)| স্বামী তার স্ত্রীর নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত স্থানে হাত বা কোন অঙ্গ লাগাবে না । এমন কি দেখবে না?। নাভির উপর থেকে মাথা পর্যন্ত অন্যান্য স্থানে হাত লাগাতে পারবে। চুমু দিতে পারবে। কেননা হায়েজ অবস্থায় মহিলাদের শরীর ও মুখের লালা পবিত্র। হায়েজের কারণে তাদের শরীর নাপাক হয় না । অতএব হায়েজ অবস্থায় তার শরীরের সাথে ছোঁয়া লাগলে বা স্বামী-স্ত্রীর মুখের মধ্যে জিহ্বা প্রবেশ করালে তাতে কোন ক্ষতি নেই। তবে হায়েজ অবস্থায় এসব না করাটাই উত্তম। কেননা অনেক ক্ষেত্রে ব্যালেন্স হারিয়ে সহবাস পর্যন্ত চলে যেতে পারে। আর ওই | পর্যন্ত গেলে তাে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিধান লংঘন করা হবে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আইন ভঙ্গ করা মারাত্মক অপরাধ ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া ডাক্তারদের মতেও এ সময় স্ত্রী সহবাস করা অনুচিত। ঐ সময় তাদের স্রাবের রক্তের সাথে বিভিন্ন রােগের জীবাণু বের হয়। যা সহবাসের মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বিশেষ করে ক্যান্সার, জ্বালাপােড়া ইত্যাদি রােগ সৃষ্টির প্রধান কারণ হয়ে যায়। তাই শরীয়তের বিধানের পাশাপাশি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি মতেও ঐ সময় সহবাস থেকে বিরত থাকা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link