Sports

FIFA বিশ্বকাপে মেসি রোনালদো : কে better?

Leonel Messi। Cristiano Ronaldo। FIFA World Cup। Football World Cup। Who is better in the FIFA world cup?

 

লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা দুইজন ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তারা দুই জন যেমন বর্তমান সময়ের সেরা দুই ফুটবলার তেমনি একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিও বটে। ক্লাব ফুটবল এমন কোনো শিরোপা নেই যা তারা অর্জন করেননি। বিগত এক দশক ধরে ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের স্থান ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এই পর্তুগিজ এবং আর্জেন্টাইন ফুটবলার। সর্বশেষ ১০টি ব্যালন ডি’অর সমানভাবে নিজের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলমান রেখেছেন।

 

তারা দুইজনই জিততে ভালোবাসেন, জেতাতে ভালোবাসেন। ইউরোপিয়ান ফুটবলে তারা নিজ নিজ ক্লাবকে ঘরোয়া লিগ, ইউরোপিয়ান লিগ যেমন জিতিয়েছেন তেমনি নিজেরাও ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন পুরষ্কার নিজেদের ঝুঁলিতে পুড়েছেন। কিন্তু বিশ্বকাপে তাদের দুইজনের অর্জন কেমন? বিশ্বকাপে কে এগিয়ে রয়েছেন? কে বেশি গোল করেছেন, কে বেশি ম্যাচ জিতেছেন? ক্লাব ফুটবলের মতো বিশ্বকাপের আসরেও মেসি-রোনালদোর মধ্যে কে এগিয়ে সেটা নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে গবেষণার যেন অন্ত নাই।

 

লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সমান চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। সর্বশেষ তারা রাশিয়া বিশ্বকাপে একই রাতে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছেন। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে তাদের আবারও দেখা যাবে কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে।

 

তার আগে চলুন পরিসংখ্যান কী বলছে, বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মধ্যে কে এগিয়ে আছেন সেটা জেনে নেই।

 

বিশ্বকাপে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপের আগে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়ান এবং পর্তুগালের হয়ে ২০০৪ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলেন। কিন্তু ২০০৪ সালের ইউরো ফাইনালকে তিনি রাঙাতে পারেননি। গ্রিসের কাছে হেরে হৃদয় ভাঙে পর্তুগাল এবং রোনালদোর। এর দুই বছর পর তিনি ২০০৬ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অংশ নেন।

READ MORE:  কে এই হামজা চৌধুরী?

 

পর্তুগালের হয়ে তিনি সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত মোট ৬টি ম্যাচ খেলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপে পর্তুগাল চতু্র্থ স্থান অর্জন করে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ইরানের বিপক্ষে প্রথম গোল করেন। পেনাল্টি থেকে তার করা সেই গোলসহ পর্তুগাল ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে নেয়। তবে ২০০৬ বিশ্বকাপে রোনালদোর সেরা ম্যাচ ছিলো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ম্যাচে তার ক্লাব সতীর্থ ওয়েইন রুনি রিকার্ডো কারভালহোকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন।

 

তবে রুনি ফাউল করার সাথে সাথে রোনালদো রেফারির কাছে জোরালে আবেদন করেন নিজ ক্লাব সতীর্থের বিপক্ষে। এরপর তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্নায়ুযুদ্ধের ন্যায় পেনাল্টি শ্যূট আউটে পর্তুগালের জয়সূচক গোলটি করেন। চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে যখন খেলতে আসেন তখন তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলেয়াড়।

 

সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি’তে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন এবং প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতে বিশ্বকাপ খেলতে আসেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে রোনালদো উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৭-০ গোলের জয়ের দিনে একমাত্র গোলটি করেন। সেটা ছিলো দেশের জার্সিতে দীর্ঘ ১৬ মাস পরে করা গোল। ২০০৬ বিশ্বকাপে রোনালদোর পর্তুগাল দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়। এরপর ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলতে আসেন আরো একটি ব্যালন ডি’অর এবং চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতে।

 

কিন্তু হাঁটুর চোটের কারণে বিশ্বকাপে ঠিক মতো খেলতে পারেননি। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে পর্তুগালের জয়সূচক গোলটি করেন। রাশিয়া বিশ্বকাপে রোনালদো দূর্দান্তভাবে শুরু করেন কিন্তু শেষটা রাঙাতে পারেননি। বিদায় নিয়েছেন দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে। গ্রুপ পর্বে স্পেন এবং মরক্কোর বিপক্ষে মোট ৪টি গোল করেছেন। চার বিশ্বকাপ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মোট ৭টি গোল করেছেন। তবে তার মতো খেলোয়াড়ের নামের পাশে আরো বেশি গোল থাকা উচিত ছিলো।

 

কিন্তু সেটা হয়নি। কাতার বিশ্বকাপ যদি খেলেন হয়তো গোল সংখ্যা বাড়তেও পারে।

READ MORE:  কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ সময়সূচী

 

বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো লিওনেল মেসিও ২০০৬ সালে দেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো লিওনেল মেসির সবগুলো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়।

 

সেই ম্যাচে তিনি একটি গোল করেন এবং একটি অ্যাসিস্ট করেন। বিশ্বকাপের পরের ম্যাচগুলোতে তাকে বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে তাকে মাঠে দেখতে চেয়েছিলেন অনেকেই কিন্তু কোচ হোসে পেকারম্যান তাকে সুযোগ দেননি। চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় তারকা বনে যান লিওনেল মেসি।

 

কোচ ডিয়েগো ম্যারাডোনার অধীনে আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি দারুণ খেলেন কিন্তু কোনো গোলের দেখা পাননি এবং কোয়ার্টার ফাইনালে আবারও জার্মানির কাছে হেরে তার দল বিদায় নেয়। চার বছর পর প্রতিবেশী দেশ ব্রাজিলে বসে বিশ্বকাপের আসর।

 

আর্জেন্টিনার উপরও বাড়ে প্রত্যাশার চাপ। লিওনেল মেসি সেই চাপ সামলে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান। ফাইনালে সেই চেনা প্রতিপক্ষ জার্মানি। আবারও সেই হার। ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে লিওনেও মেসি মোট চার গোল করেন। কিন্তু নক-আউট পর্বে তিনি কোনো গোল করতে পারেননি। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তিনি শিরোপার খুব কাছে থেকে ফিরে আসেন। কিন্তু তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার পান। বিশ্বকাপ জয়ের প্রত্যয় নিয়ে রাশিয়ায় আসলেও বাজে খেলে তার দল গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে।

 

লিওনেল মেসি মোট চারটি বিশ্বকাপ খেলে ছয়টি গোল করেছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *