ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

বিশেষ আমল : কবরের আযাব থেকে মুক্তি

কবরের পাশ দিয়ে যেতেন হজরত উসমান (রা) যখন হেটে যেতেন তখন কান্নায় তার দাড়ি ও বুক ভেসে যেত। লোকেরা জিগ্যেস করত, আপনি জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা শুনেও এত বেশি কান্নাকাটি করেন না, কিন্তু কবরের পাশ দিয়ে গেলে এত কান্নাকাটি কেন করেন? তিনি বলেন, আমি হুজুর (স)-এর নিকট শুনেছি, কবর আখেরাতের প্রথম ঘাঁটি। যে ব্যক্তি এখানে নাজাত পেয়ে গেল, তার জন্য সমস্ত মনিজল আসান বা সহজ হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এখানে মুক্তি পাবে না, তার জন্য হাশর-নাশর আরও ভয়ানক হয়ে দাঁড়াবে।

তবে রাসুল (স) বলেন, প্রতিদিন এশার নামাজের পর রাতে ঘুমানোর আগে যে ব্যক্তি সুরা তাবারাকাল্লাজি, অর্থাৎ সুরা মুলক তিলাওয়াত করবে, তার মৃত্যুর পর কবরের আজাব মাফ করে দেওয়া হবে। (তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম)।

হজরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; ‘কোরআন শরিফে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যা তার তিলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে না দেওয়া পর্যন্ত তার জন্য সুপারিশ করতেই থাকবে। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বি ইয়াদিহিল মুলক, অর্থাৎ সুরা মুলক। (আবু দাউদ-১৪০২, তিরমিজি-২৮৯১, ইবনে মাজাহ-৩৭৮৬, মুসনাদে আহমাদ-২/২৯৯)।

 

অন্য এক হাদিসে আছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো রাতে সুরা মুলক না পড়ে ঘুমাতেন না (তিরমিজি-২৮৯২, হিসনে হাসিন)। অন্য দিকে আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘কবরস্থিত ব্যক্তির কাছে পায়ের দিক দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা, সে সুরা মুলক পাঠ করত। তখন তার সিনা অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে। তখন সিনা অথবা পেট বলবে, আমার দিকে দিয়ে আসার কোনো রাস্তা তোমাদের জন্য নেই।

 

কেননা, সে আমার মধ্যে সুরা মুলক ভালোভাবে ধারণ করে রেখেছিল। অতঃপর তার মাথার দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করবে। মাথা বলবে, এদিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা, সে আমার দ্বারা সুরা মুলক পাঠ করেছিল। সুরা মুলক হচ্ছে বাধাদানকারী। কবরের আজাব থেকে বাধা দেবে। তাওরাতেও সুরা মুলক ছিল। যে ব্যক্তি তা রাতে পাঠ করে, সে অধিক ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট আমল করল। (নাসাঈ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link