ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

ইসলামে বিয়ের যোগ্যতা

The abilities for marriage.

Important things to know.

Man and woman। Kuran। Hadith।

 

যাদের সামর্থ্য আছে, বিয়ের প্রতি আকর্ষণ আছে, আল্লাহ তাআলা তাদের সবাইকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া বিয়ে হচ্ছে সব নবি রাসুলের অন্যতম সুন্নাত। বিয়ের জন্য কনে নির্বাচনে যেমন নির্দেশনা রয়েছে তেমনি বর নির্বাচনেও রয়েছে বিশেষ কিছু উপযুক্ত গুণ ও যোগ্যতা। বিয়ের জন্য বরের কী যোগ্যতা ও গুণ থাকা খুবই জরুরি?

 

বিয়ের জন্য বরের অন্যতম যোগ্যতা হচ্ছে- ‘দ্বীনদারি ও চারিত্রিক পবিত্রতা’। অর্থাৎ যে বর আল্লাহকে ভয় করে ফরজ ইবাদতসমূহ যথাযথভাবে আদায় করে এবং হারাম থেকে বেঁচে থাকে। আর আচার-আচরণগত দিক থেকে উত্তম হয়, সেই বরই বিয়ের জন্য উপযুক্ত ও উত্তম। হাদিসে পাকে এসেছে-

 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে যদি এমন পাত্র বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে- যার দ্বীনদারি ও চরিত্র তোমাদের কাছে পছন্দনীয়; তবে তার সঙ্গে তোমাদের কন্যাদের বিয়ে দিয়ে দাও। যদি তোমরা এরূপ না কর (দ্বীনদার ও চরিত্রবান পাত্রকে ফিরিয়ে দাও এবং তাদের সঙ্গে কনের বিয়ে না দাও) তবে এর কারণে জমিনে অনেক বড় ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হবে।’ (তিরমিজি)

 

এ হাদিসে বরের দুটি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি হলো- দ্বীনদারি আর অন্যটি হলো চারিত্রিক পবিত্রতা। সুতরাং বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রের অন্যতম গুণও এ দুটি।

 

অনেকে আবার দুনিয়ার অর্থ-সম্পদের বিষয়টিকেও উপযুক্ত বরের শর্ত হিসেবে দেখে থাকেন। আসলেই তা যথার্থ নয়। কেননা মহান আল্লাহ ঘোষণা দেন-

 

‘তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ের বাকি, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও আর তোমাদের দাস ও দাসিদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও (বিয়ে দাও)। তারা যদি সম্পদহীন নিঃস্ব ও ফকির হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সবাইকে সচ্ছলতা দান করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩২)

READ MORE:  আধার রাতের চাঁদ যে তুমি লিরিক্স

 

কুরআন-সুন্নাহর ঘোষণা অনুযায়ী ইসলামিক স্কলাররা বিয়ের কুফু বা উপযুক্ত হওয়ার জন্য বরের নির্বাচনে চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছেন। বিয়ের সময় বরের যে জিনিসগুলো দেখা আবশ্যক, তাহলো-

 

– ধর্ম তথা দ্বীনদারি : ধর্মহীন কোনো অমুসলিম কিংবা কাফেরের কাছে মেয়ে বিয়ে দেয়া যাবে না। আবার নেককার কন্যাকে ফাসেকের সঙ্গেও বিয়ে না দেয়া।

 

– স্বাধীন : কোনো স্বাধীন কন্যাকে পরাধীন তথা ক্রিতদাসের কাছে বিয়ে না দেয়া।

 

– বংশ মর্যাদা : ভালো কাজের জন্য সুনাম আছে এমন বংশের বরের কাছে কনের বিয়ে দেয়া। নিচু বংশের কারো সঙ্গে কনের বিয়ে না দেয়া।

 

– পেশা : আর যদি কনের পরিবার ভালো ও উচ্চ বংশের হয় তবে নিচু বংশের (নাপিত, ধোপা ও মুচির সম পর্যায়ের) কারো সঙ্গে বিয়ে না দেয়া।

 

হজরত ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বরের জন্য দ্বীনদারি ও চারিত্রিক পবিত্রতাকে যথাযথ উপযুক্ত উত্তম গুণ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।

 

হজরত মোল্লা আলি কারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘ধর্ম ও চরিত্র ব্যতীত পাত্রের যদি আর কোনো উপযুক্ত বিশেষণ না থাকে এবং কনে তাতেই সন্তুষ্ট থাকে, তবে বিয়ে বিশুদ্ধ হতে কোনো অসুবিধা নেই।’

 

মনে রাখতে হবে

 

অর্থ-সম্পদ কিংবা অধিক মোহর দেয়ার সক্ষমতা কোনো বরের উপযুক্তগুণ নয় বরং কনের জন্য নিরাপদ ও উত্তম বরের গুণ হবে দ্বীনদারি ও চারিত্রিক পবিত্রতা।

 

মুমিন মুসলমানের উচিত, কনে বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে দ্বীনদারি ও চারিত্রিক পবিত্রতার অধিকারী কিনা তা দেখা। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে বর-কনের বিয়ে সম্পাদ করাই উত্তম।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *