জেনে নিন হাঁটার উপকারিতা ও সঠিক নিয়ম
সুস্থ দেহের জন্য শারীরিক ব্যায়ামের বিকল্প নেই। অনেকেই বর্তমানে শরীর সুস্থ রাখার জন্য জিমনেসিয়ামে গিয়ে ভারী ব্যায়াম এর দিকে ঝুঁকছে। আবার বর্তমানে ব্যস্ত আধুনিক জীবনে অনেকেরই ভারী ব্যায়াম করার সময় হয়ে ওঠে না। শরীর সুস্থতার ব্যাপারে তাদের হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই । জিমনেসিয়াম এ গিয়ে ভারী ব্যায়াম ছাড়াও শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব। এই জন্য হাঁটা একটি কার্যকরী উপায় হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত কিছু সময় হাঁটার মাধ্যমে ভারি শারীরিক ব্যায়াম ছাড়াও শরীর সুস্থ রাখা যায়।
হাঁটার উপকারিতা:
১. এক গবেষণায় দেখা গেছে পানির পাশে ( সৈকত, নদীর তীর, হ্রদ এর পাশ) হাঁটলে মেজাজ ভালো থাকে ।
২. BJSM ( ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিন) এর এক গবেষণার তথ্য মতে, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাটলে স্মৃতিশক্তি এর কার্যক্রম উন্নতি সাধিত হয়।
৩. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণার তথ্য মতে, নিয়মিত ৩০ মিনিট করে হাঁটলে ১৩% পরিমাণ হতাশার ঝুঁকি কমে যায়।
৪. ইংল্যান্ডের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের এক গবেষণার তথ্য মতে, নিয়মিত ৩০ মিনিট করে হাঁটলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা ২৭ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়।
৫. ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়মিত ৩০ মিনিট করে হাটলে একজন ব্যক্তির স্তন ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩০% পর্যন্ত কমে যায়।
৬. এছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে, পেশি শক্তি বৃদ্ধি করতে, জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে হাটা একটি কার্যকরী ব্যায়াম।
প্রতিদিন কত কিলোমিটার হাঁটা উচিত?
শরীর সুস্থ রাখতে একজন সুস্থ মানুষের সপ্তাহে গড়ে দেড়শ মিনিট হাঁটা উচিত। এ হিসেবে দিনে ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচদিন হাঁটা উচিত।
হাটার উপযুক্ত সময়:
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, সকালে হাঁটলে ঘুম থেকে উঠার পর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর হাঁটতে বের করা উচিত। আর হাঁটার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বিকাল।
খাওয়া ঠিক আগে আগে বা পরে হাটা শরীরের জন্য ভালো নয়।
হাঁটার সঠিক নিয়ম:
এমন গতিতে হাঁটতে হবে যখন হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এই গতিতে হাঁটলে যদি শরীর খারাপ লাগে তাহলে হাঁটার গতি কমিয়ে দিতে হবে।
হাটার সময় হাতে কোনো ভারী জিনিস রাখা যাবে না। তবে কাঁধে হালকা ব্যাগ জাতীয় কিছু রাখা যেতে পারে। হাঁটার মাঝে মাঝে পানি পান করা একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এতে করে শরীর আদ্র থাকবে।
হাটার সময় কোন সঙ্গীর সাথে হাটা একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এতে করে সঙ্গীর সাথে কথা বলতে বলতে হাঁটা যাবে, বিরক্ত বোধ হবে না।
সর্বোপরি নিয়মিত নিয়মমতো নির্দিষ্ট সময় হাঁটলে আমাদের শরীর ও মন দুইই ভাল থাকবে। সুস্থ দেহে সুন্দর মন যাপন করাও সম্ভবপর হবে।