ছোলা খাওয়ার উপকারিতা বা হতে পারে বিপদ
শক্তি বর্ধক খাবার হিসেবে ছোলা অতি পরিচিত। প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ এটি মূলত ডাল জাতীয় খাবার।
ছোলা মূলত দুই প্রকার ।
কাঁচা ছোলা আর সিদ্ধ ছোলা। কাঁচা ও সিদ্ধ ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করব।
কাঁচা ছোলার উপকারিতা
মাছ মাংসের পরিবর্তে ছোলা : আমিষের চাহিদা পূরণে নিয়মিত মাছ মাংস খাওয়া যাদের জন্য ব্যয় বহুল তাদের জন্য ছোলা অতি কার্যকরী একটি খাবার। কারন মাছ-মাংসের প্রায় সমপরিমাণ আমিষ ছোলাতে বিদ্যমান।
কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে ছোলা:
ছোলায় বিদ্যমান আঁশ সহজে হজম না হয়ে খাদ্যনালী বরাবর চলতে থাকে। এতে করে মলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে মলত্যাগ এর বেগ সৃষ্টি করে।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কার্যকরী ছোলা: ছোলায় যে শর্করা বিদ্যমান তা অতি সহজে হজম হয় না বলে গ্লুকোজ তৈরিতে সময় নেয় যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ফলদায়ক। ইতোমধ্যে এ শর্করা রোগের শর্করার চাহিদা ভালোভাবেই পূরণ করে ফেলে।
শরীরের শক্তি বাড়াতে ছোলা: প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ৩৬০ ক্যালোরি থাকে। ছোলা সহজে হজম হয় না বলে দীর্ঘ সময়ব্যাপী এ বিপুল পরিমাণ ক্যালরি শরীরে শক্তির যোগান দিতে থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছোলা: ছোলা খেলে দীর্ঘ সময়ব্যাপী পেট ভরা থাকে বলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার আর আগ্রহ থাকে না। যা ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
কাঁচা ছোলার অপকারিতা
– ভেজে কাঁচা ছোলা খাওয়া যাবেনা। এতে করে ছোলার যে প্রাকৃতিক গুনাগুন তা কিছুটা হলেও কমে যায়।
– যাদের অল্পতেই বমি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের ছোলা না খাওয়াই উত্তম।
– কিডনি রোগীরা ছোলা খেলে শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জাতীয় সমস্যা সৃষ্টি করে।
– স্বাভাবিকভাবে কাঁচা ছোলা হজম হতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। উপরন্তু যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তাদের হজমে আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে কাঁচা ছোলা।
সিদ্ধ ছোলার উপকারিতা/ অপকারিতা
উপকারিতা : যারা ওজন বাড়াতে চান তারা তেল মসলাযুক্ত সেদ্ধ করা ছোলা খাবেন না কারণ তেল-মসলাযুক্ত ছোলায় ছোলার ডালের সাথে অতিরিক্ত তেল মসলার ক্যালোরি যুক্ত হয়।
অপকারিতা : যাদের বেশি ওজন জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অতিরিক্ত মসলাযুক্ত কাঁচা ছোলা খেলে ওজন আরও বেড়ে যায় ।
ছোলা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একমুঠো কাঁচা ছোলা ( ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম) ( সারারাত পানিতে ভিজিয়ে) খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
তবে ভরা পেটে ও রান্না করেও ছোলা খাওয়া যেতে পারে যার গুনাগুন তুলনামূলকভাবে কম বলেই গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে।
সর্বোপরি সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে তার ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ছোলার ক্ষেত্রেও অনুরূপ কথা প্রযোজ্য। নিয়মমতো নির্দিষ্ট পরিমাণ ছোলা প্রতিদিন খেলে স্বাস্থ্য নিষ্ঠুরভাবে স্বাস্থ্যসম্মত থাকবে।