জাহাজ এবং 75 টির কাছাকাছি বিমান এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে নিখোঁজ হয়েছে।
রহস্যময় ঘটনাগুলো ঘটার পিছনের বৈজ্ঞানিক কারণঃ-
বেশিরভাগ বিজ্ঞানীরা এই সমস্ত কিছুর পিছনে কিছু অতিপ্রাকৃত কারণকে বিশ্বাস করেন না।বরং দুর্ঘটনাগুলি আসলে প্রতিকূল আবহাওয়া, মানবসৃষ্ট ভুল এবং দুর্ভাগ্যের কারণে ঘটে। তারা যুক্তি দেখান যে, এই অঞ্চলটি দুর্ঘটনার শিকার অন্য আট-দশটি অঞ্চল থেকে আলাদা নয়। আসলে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল ইউরোপ, আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান পথের মধ্যে রয়েছে। প্রতিদিন অনেকগুলি জাহাজ এবং বিমানকে সেই পথটি অতিক্রম করতে হয়। আর বেশি ট্র্যাফিকের কারণে দুর্ঘটনার খবরও শোনা যায় কিছুটা বেশি।
2016 সালে, কলোরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ স্টিভ মিলার, নাসা উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত এর চিত্রগুলি বিশ্লেষণ করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে একটি গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব নিয়ে এসেছিলেন। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের বেশিরভাগ অংশ ষড়ভুজ মেঘে আবৃত এবং কিছু মেঘ 20 থেকে 55 মাইল অবধি রয়েছে। এবং এখানে বাতাসের গতি প্রতি ঘন্টা 170 মাইল! এগুলিই মূলত জাহাজ এবং বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ধরা যায়।
একবিংশ শতাব্দীর আগে, মিথেন হাইড্রেট গ্যাস তত্ত্বের জন্য, ভাবা হয়েছিল যে মিথেন হাইড্রেট গ্যাসের বুদবুদগুলি সমুদ্রের নীচ থেকে সৃষ্টি হয়ে, পানির ঘনত্বকে হ্রাস করে, জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। তবে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) যখন জানিয়েছে যে গত ১৫ বছরে এই অঞ্চলে কোনও মিথেন হাইড্রেট গ্যাস নির্গত হয়নি, তখন এই ধারণাটি নাকোচ হয়ে যায়।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল আমরা যা ভাবি ঠিক এতটা রহস্য না?
ল্যারি কুশের “দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সলভ” বইটি 1975 সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এই যৌক্তিক বইতে দেখা যায় যে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে বেশিরভাগ গল্পই মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত। ল্যারি প্রমাণ সহ এই দেখায় যে বারমুডায় সর্বাধিক দুর্ঘটনাগুলো আসলে অন্যসব সাধারণ দুর্ঘটনাগুলোর মতই । গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় প্রবণ অঞ্চলগুলিতে জাহাজ ভাঙ্গা/ডুবা এইগুলো সাধারণ ঘটনা। তো আগে যে রহস্য গুলোর কথা জেনেছিলাম, এর সমাধান কী? কিছু সমাধান অবশ্য পাওয়া গেছে!
শুরুতেই আসা যাক ফ্লাইট নাইনটিন এর রহস্যেঃ-
ফ্লাইট নাইনটিনের তদন্তে দেখা গেছে যে রেডিও সংক্রমণ বন্ধ হওয়ার আগে পাইলট বলেছিলেন, “কম্পাস কাজ করছে না, আমি জানি না আমি কোথায় আছি, সম্ভবত ফ্লোরিডায়। তখনতো জিপিএস সিস্টেম ছিল না। যারফলে একবার পথ হারিয়ে গেলে ফিরে আসে প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া জ্বালানিও যদি শেষ হয়ে যায় তখনও তো ফিরে আসা অসম্ভব।
এটাই ছিল ফ্লাইট নাইনটিন এর নিখোঁজ হওয়ার রহস্য।
এবার আসুন মেরিন সালফার কুইনের রহস্যেঃ-
মেরিন সালফার কুইন নামক এই জাহাজটিও বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিল । এর কাঠামোটি এতটাই দুর্বল ছিল যে এর ট্যাঙ্কারটি ভেঙে দু’ভাগ হয়ে যায়। এবং সেইসাথে তখন তার কম্পাসটিও সঠিকভাবে আচরণ না করে, উল্টা – পাল্টা নাড়ানারি করছিল যার ফলে সঠিক দিক নির্ণয়ে ব্যর্থহয়। যাইহোক, তখন ক্যাম্পাসের এলোমেলো ছুটাছুটির রহস্য এখনও অমীমাংসিত। যদিও বাস্তবে কোনও সত্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি, তবে মনে করা হয় যে এই অঞ্চলে চৌম্বকীয় বিশৃঙ্খলা রয়েছে। এ কারণেই ক্যাম্পাসটি এরকম আচরণ করে।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্যের বেশিরভাগ রহস্য উন্মোচিত করা হলেও এটি নিয়ে নতুন গুঞ্জন থামেনি। কেনই বা থামবে? বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল তো বর্তমানে সাহিত্য এবং মিডিয়ার অর্থের একটি দুর্দান্ত উৎসব। যেহেতু কিছু রহস্য এখনও নিষ্পত্তিহীন। তাই এটা নিয়ে এখনো আগ্রহের শেষ নেই।
আপনারা হয়তো বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে আগে অনেক কিছু জেনে থাকবেন। আশাকরি এখন নতুন করে আরো কিছু জানতে পেরেছেন।
Leave a Reply