স্বাস্থ্য

পুষ্টিগুণে ভরপুর অসাধারণ এক ফল অ্যাভোক্যাডো

অ্যাভোক্যাডো গাছের ফল অ্যাভোক্যাডো যা  বৈজ্ঞানিকভাবে পার্সিয়া আমেরিকানা নামে পরিচিত। এই ফলটি তার উচ্চ পুষ্টির মানের জন্য যথেষ্ট মূল্যবান এবং এর অনন্য স্বাদের কারণে বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

 

আজকাল, অ্যাভোক্যাডো স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের কাছে অবিশ্বাস্যভাবে একটি জনপ্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে। অবাক করা সব স্বাস্থ্যগুণের জন্য একে ‘সুপার ফুড’ বললেও ভূল হবেনা।

 

অ্যাভোক্যাডো আকার এবং রঙে বিভিন্ন রকমের হয় – নাশপাতি আকৃতির থেকে গোলাকার এবং সবুজ থেকে কালো পর্যন্ত। এগুলি ৮ আউন্স (২২০ গ্রাম) থেকে ৩ পাউন্ড (১.৪ কেজি) পর্যন্তও হতে পারে।

আকৃতি পিয়ারের মতো এবং অ্যালিগেটরের মতো সবুজ রঙের ত্বকের জন্য একে “অ্যালিগেটর পিয়ার” নামেও ডাকা হয়।

 

ফলের অভ্যন্তরীণ হলুদ-সবুজ মাংসল অংশ খাওয়া হয়, তবে খোসা এবং বীচি ফেলে দেওয়া হয়। এতে ২০ রকমের ভিটামিন এবং খনিজ সহ বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মাত্র ৩.৫ আউন্স বা ১০০ গ্রাম অ্যাভোক্যাডোতে কতোটা পুষ্টি উপাদান রয়েছে চলুন সেটি জেনে আসি –

 

ভিটামিন কে: ২৬%

ফোলেট: ২০%

ভিটামিন সি: ১৭%

পটাশিয়াম: ১৪%

ভিটামিন বি-৫: ১৪%

ভিটামিন বি-৬: ১৩%

ভিটামিন ই: ১০%

 

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়

 

রক্তচাপ কমাতে, ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং ধমনী ফলকের ধীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোক্যাডো খুবি উপকারী। তাছাড়া অস্বাভাবিক হার্ট স্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস করতে অ্যাভোকাডোর তুলনা নেই। প্রতিদিনের একটি অ্যাভোক্যাডো হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।

 

হজমে সহায়তা করে

 

প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অ্যাভোকাডো রাখলে আপনার খাবার খুব ভালোভাবে হজম হবে। সেই সাথে কোষ্ট্যকাঠিন্যের মত সমস্যা দূর হবে। একটি অ্যাভোকাডোতে ১০ গ্রামের মত ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমে সহায়তা করে।

 

রোগ প্রতিরোধ করে

 

অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে। আর ভিটামিন বি শরীরকে রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এছাড়া অ্যাভাকাডোতে যে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং উদ্ভিজ্জ খনিজ রয়েছে তা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

READ MORE:  প্রথম যৌন মিলন করার সময় করণীয় কি?

 

ঘুম ভালো হয়

 

অ্যাভোকাডোতে যে ম্যাগনেসিয়াম থাকে তা শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।  

 

ওজন কমায়

 

অ্যাভোকাডো হলো ওজন কমানোর উপযোগী খাবার। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, খাবারের সঙ্গে অ্যাভোকাডো খেলে ২৩% বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায় এবং যারা এই ফলটি খান না তাদের তুলনায় পরবর্তী ৫ ঘন্টায় তাদের খাওয়ার ইচ্ছা ২৮% কম হয়। সুতরাং আপনার ডায়েট চার্টে অ্যাভোকাডো যোগ করলে এটি স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে কম ক্যালোরি খেতে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত করবে।

 

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে

 

অ্যাভোকাডোতে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্যারোটিনয়েড থাকে- লুটেন এবং জেক্সানথিন। লুটেইন এবং জেক্সানথিন উভয়ই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এই দুটি ক্যারোটিনয়েড আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে, তবে একসঙ্গে আরো ভালো কাজ করে। এর ফলে চোখে ছানিও পড়ে না।

 

চুল ও ত্বকের যত্নে

 

পেন্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি ৫) প্রায় প্রতিটি ত্বক এবং চুলের যত্নের তৈরি প্রসাধনীতে থাকে। অ্যাভোকাডোতে প্যান্টোথেনিক অ্যাসিডের ৪৫% আরডিএ থাকে। যা ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে সহায়তা করে এবং ত্বকে লাবণ্য আনতে সাহায্য করে।

 

অ্যাভোক্যাডো হলো পুষ্টিতে ভরপুর একটি চমৎকার ফল যা আধুনিক ডায়েটের সকল ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ করতে সহায়তা করে।

 

সর্বোপরি বলা যায়, অ্যাভোক্যাডো একটি চমৎকার ফল। বেশিরভাগ ফলের মধ্যে মূলত কার্বোহাইড্রেট থাকে তবে অ্যাভোক্যাডোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। তাই আমাদের উচিত এ ফলটি খাওয়ার অভ্যাস করা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *