স্বাস্থ্য

কিশোর বয়স এ স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো আপোষ নয়

কৈশোরের স্বাস্থ্য সচেতনতা- Adolescent health awareness

 

কিশোর বয়স অন্য সব বয়সের তুলনায় সেনসিটিভ। কিশোর বয়সে স্বাস্থ্য সচেতনতায় সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কিশোর বয়সে শরীরে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি দরকার হয়। অথচ এ বয়সেই শরীর সব থেকে বেশি অবহেলার শিকার হয়। কিশোর স্বাস্থ্য সচেতনতায় তাই আজ আমরা আলোচনা করব। 

 

১. মাছ, মাংস, শাক সবজি ভীষণ জরুরি: অনেকেই গরুর মাংস পছন্দ করে, আবার অনেকে খাসির মাংস খেতে চায়না। দুই ধরনের মাংসই খাওয়া উচিত। বাড়ন্ত বয়সে পুষ্টিকর খাবার দরকার হয় খুব বেশি। দুই ধরনের মাংসতেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ, ক্যালরি, খনিজলবণ ও স্নেহ পদার্থ।

 

অনেকেই আবার শুধু মাংস খেতে পছন্দ করে, শাক-সবজি পছন্দ করেনা। শাক-সবজিও খেতে হবে। শুধুমাত্র মাংস কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করবে। খাবার হজমে সমস্যা হবে। মাসের পর মাস মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণ না করে, যতো তাড়াতাড়ি টাটকা অবস্থাতে খেয়ে ফেলা যায়, ততোই ভালো। টাটকা খাওয়াটা শুধু মাংসের জন্য নয়, সব খাবারের জন্য উপযোগী।

 

মাংসের পাশাপাশি মাছ, বিশেষত ছোট মাছ, সব ধরণের শাক সবজিও খেতে হবে। 

 

২. চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে: যেসব কিশোর-কিশোরী বয়স অনুযায়ী অধিক ওজন সম্পন্ন তাদের অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার অতিমাত্রায় না খাওয়াই ভালো।

 

কিশোর বয়সে সব ধরনের খাবার দরকার। কিন্তু তারপরেও চিন্তা ভাবনা করতে হবে। যাদের বাবা-মার উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস রয়েছে তারা মাত্রাতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস, অতিমাত্রায় ফাস্টফুড, আইসক্রিম, মিষ্টি খাবারের পরিমাণ কিশোর অবস্থা থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 

 

মাংস খাবার সঙ্গেসঙ্গেই দুধ বা আইসক্রিম খাওয়া অনুচিত। দুধ মানে উচ্চমাত্রার প্রোটিন। আর দুধের থেকে মাংসতে প্রোটিন আরও বেশি। দুই ধরনের প্রোটিন একসঙ্গে হলে অনেকের হজমের সমস্যা হয়। তাই মাংস খাবার পর কিছু সময় বাদ দিয়ে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো।

 

৩. কলিজা নিয়মিত খাওয়া উচিত: কলিজাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রণ আছে। আয়রণ হলো রক্ত তৈরির প্রধান উৎস। তাই শুধু কুরবানির ঈদে নয়, সারাবছর কলিজা খাওয়া উচিত। কিশোর-কিশোরীদের দেহের অভ্যন্তরীণ গঠনের জন্য আয়রণ যথাযথ পরিমাণে দরকার।

 

যেসব পরিবারের মানুষজনের মাঝে রক্ত শূণ্যতার ইতিহাস থাকে, তাদেরকে কলিজা, ডালিম, কচুরশাক, কচুরলতি, কাঁচাকলা নিয়মিত খাওয়া উচিত। যারা নিয়মিত খেলাধুলা, নাচ, কারাতে, জুডো খেলে তাদের নিয়মিত মাংস, কলিজা, সব ধরনের শাক সবজি খাওয়া দরকার।

 

৪. নিয়মিত পানি পান করতে হবে: প্রতিদিন এক থেকে দেড় লিটার পানি অবশ্যই পান করতে হবে।

 

৫. মগজ, ভুড়ি, পায়া ভীষণ ক্যালরি সম্পন্ন খাবার: অনেকেই এই খাবার গুলো পছন্দ করে না। কিন্তু এসব খাবার ভীষণ পুষ্টিকর। শিশু-কিশোরদের জন্য দরকারি। ‘পায়া’ খাবারটি তৈরি হয় গরু-ছাগলের পা দিয়ে। পায়া বা নিহারীতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ থাকে। কিশোর বয়সে দাঁত, হাঁড়, চুল, নখ, ত্বক ভালো রাখার জন্য এই খাবার যথেষ্ট উপকারী।

 

৬. পারিবারিক কাজ, নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ভীষণ জরুরি: করোনা ভাইরাসের জন্য সব বাসাতেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা  বজায় রাখতে যেয়ে  কাজের পরিমান বেড়ে গেছে। পিতামাতা কে পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করার অভ্যাস কিশোর বয়স থেকেই হওয়া উচিত। পারিবারিক কাজগুলোর মাধ্যমে ব্যায়াম হয়।

 

হাড়ের সঠিক বর্ধনের জন্য ব্যায়াম, খেলাধুলা ভীষণ জরুরি। আর সেই সঙ্গে চাই নিয়মিত দাঁতব্রাশ। মাংস, মিষ্টি খাবার, কোমল পানীয় পান করার পর নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা উচিত। সামান্য কিছু সতর্কতা কিশোর-কিশোরীদের করবে আরও বেশি সুস্থ-সবল। 

 

যাদের ঠান্ডা জনিত ওষুধ নিয়মিত খেতে হয়, থাইরয়েড-এর জন্য ওষুধ লাগে, তাদের অভিভাবকেরা সঠিক পরিমাণে ওষুধ কিনে রাখবেন। ফার্স্ট এইড বক্স বাসাতে হাতের কাছে রাখবেন।

 

৭. বাসার বাইরে নিয়মিত ফেস মাস্ক পড়তে হবে। করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।

 

৮. কিশোর বয়স থেকেই ধর্ম কর্ম ভীষণ জরুরি। ধর্ম কর্ম কিশোর কিশোরীদের কে মন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link