ছোট গল্পসাহিত্য

মানবতা পর্ব-১ ছোটগল্প

অনিসা চেয়ারে বসে সেলাই করছে। দিন যতো বাড়ছে ততোই তার কষ্ট বাড়ছে। এখন নিচে বসতে পারেনা, চেয়ারে বসতেও কষ্ট হয় তার। তবে এটা সহ্য করা যায়।অনেক গুলো কাঁথা  সেলাই করা হয়ে গেছে। তবে তার ইচ্ছে আরো পনেরো থেকে বিশটা সেলাই করার। যদিও এতো গুলো কাথাঁ লাগে না তবুও। 

 

দুপুর গরিয়ে গেছে। তবুও খাওয়া হয়নি। খেতে ইচ্ছেও করছে না। এখন সব খাবারেই কেমন যেন একটা বোদকা গন্ধ লাগে। তবুও খেতে হয়। মানুষ জন বলে এই সময় নাকি আচার খেতে ইচ্ছে করে; কিন্তু তার বেলাই উল্টোটাই হচ্ছে । তার খেতে ইচ্ছে করছে মিষ্টি,ভীষণ মিষ্টি । কিন্তু মিষ্টি আবার বেশি খাওয়া যায় না। তাই মানুষটা বেশি এনে দেয়না। মাঝে মাঝে রাগ হয়। কিন্তু সে তো ভালোর জন্য করে, তাই কিছু বলতেও পারিনা। আর বললেও বা কি; সে কোনো প্রতিবাদ করে না। ঝগড়া একা করতে কখনোই ভালো লাগে না।অনেকটা দাবার মতো। প্রতিপক্ষ যদি উল্টো চাল না দেয় তবে কোনো মজাই থাকে না।প্রতিপক্ষকে হতে হয় সমান পারদর্শী, তবেই মজাটা সবচেয়ে বেশি। কম হলে ভালো লাগে না। আবার বেশি হলে হারতে হয় বলে সেটাও ভালো লাগে না।

 

বিকেল পাঁচটা বাজে। অনিসা বসে আছে দিগন্তের অপেক্ষায়। দিগন্ত  ছয়টার মধ্যে চলে আসে। আগে আসতে রাত আটটা নয়টা বেজে যেতো। কিন্তু এখন করোনার সময়। তাই সরকার নিয়ম করে দিয়েছে পাঁচটা পর্যন্ত অফিস খোলা থাকবে।কলিংবেল বেজে উঠলো। দিগন্ত এসেছে।অনিসা বিছানা থেকে আস্তে আস্তে উঠলো। দরজাটা খুলে একটু দূরে দাড়ালো। দিগন্ত এসেই বাথরুমে চলে গেলো। আগে কতো ভালোই না ছিলো দিনগুলো; কিন্তু এখন। এসে এসেই কথা বলা যায় না, ছোঁয়া যায় না। কিছুক্ষণ পর দিগন্ত বের হয়ে আসলো। গোসল করলে মনটা ভালো হয়ে যায়। অফিসের হাজারটা বিরক্তি গোসল একাই কাটিয়ে দিতে পারে। দিগন্তের ও মনটা ভালো হয়ে গেছে।

“আসো চা খাও”

“হ্যাঁ। তোমার শরীর কেমন আছে এখন ? ডাক্তারের কাছে কবে যেতে হবে?”

“এইতো ভালোই । দুপুরের দিকে একটু ব্যাথা উঠেছিলো যদিও। ডাক্তার তো দেরিতে ডেকেছে।”

দিগন্ত চা তে একটা চুমুক দিয়ে বললো,

“তোমার চা তে কি আছে বুঝি না। বরাবর একি রকম স্বাদ। দোকানেও এতো ভালো লাগে না। একটু শিখাও তো”

“এটা শিখার বিষয় না।এটা অভ্যাস এর ব্যাপার। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হয়। দুধ চাতে দুধ গরম করার সময় এলাচ দিতে হয়। তাহলে অন্যরকম একটা ঘ্রাণ পাওয়া যায়।”

“এলাচই তো চিনলাম না। আবার এলাচ এর চা”

“চিনতে হবেও না।আমাকে বলবে, আমি করে দিবো। এখন চলোএকটু বাইরে যায়।”

“এখুনি? একটু পরে গেলে হয় না?”

“একটু পর আযান। আযান এর পর বের হওয়া যাবে না। আম্মা নিষেধ করেছে।”

“আচ্ছা চলো”

 

অনিসা একটা ব্যাগ  ধরিয়ে দিলো দিগন্তকে। দিগন্ত একটু বিরক্তির সুরে বললো, “আবার?”

“হ্যাঁ। এই করোনার সময় খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজ পাচ্ছে না। সামনের রাস্তায় বসে থাকে। দেখেই মায়া লাগে।”

“দান করা ভালো। কিন্তু রোজ রোজ করলে তো অভ্যাস হয়ে যাবে ওদের। তখন দেখবে রোজ এসে বসে থাকবে”

“তাতেও তো দোষের কিছু দেখিনা। একটু খাবারের জন্যই তো আসে। আমরা না খেতে পেলে আমরাও ওই রকমই করতাম “

READ MORE:  নোমান আলী খান জীবনী | Biography of Noman Ali Khan

দিগন্ত মুচকি হেসে বলল, 

“তোমার সাথে তর্কে পারা যাবেনা। চলো”

 

অনিসাদের বাড়িটা দোতলা। ওপরে বাড়িওয়ালা থাকে। পাশে থাকে তাদের প্রতিবেশী মনোয়ারা। অনিসা বাড়ি থেকে দীর্ঘ একটা গলি। পায়ে হাটার রাস্তা। তারপর বড় রাস্তা। অনিসা সামনের রাস্তায় এগিয়ে গেলো। বিকেলের শেষটুক বাকি আছে।আলো কমে এসেছে। সূর্যটা ডুবে তার শেষ চিহ্নটা মিশিয়ে দিচ্ছে।

রাস্তায় রহিম চাচা বসে। সে আগে কাজ করতো।এখন কাজ পায় না।আগে রোজ কাজ করে বাড়ি ফিরে যেতো।এখন টাকা নেয় তাই বাড়ি যেতে পারে না। পারলেও যাবে না। তার পরিবার তার অপেক্ষায় আচ্ছে। কখন সে কিছু টাকা নিয়ে ফিরবে। রহিমের জানতে ইচ্ছে করে তারা কেমন আছে। কিন্তু লজ্জা পায় সে । কি বলবে ফোন করে? তার কাছে তাদের দেবার মতো কিছুই নেয় । পরিবার চালানোর মতো ক্ষমতা তার নেয়? 

দিগন্ত একটা প্যাকেট দিলো রহিম চাচা কে। অনিসা একটু দূর থেকেই বলো,

“চাচা কেমন আছেন?”

“ভালো মা। তোমার শরীর কেমন আছে।?”

“জ্বী চাচা ভালো।”

“মা এই সময় বাড়ির বাইরে বাহন ঠিক না।”

“চাচা ওতো ভয় করলে কি হয়? তারপর যতোটুকু নিরাপত্তা নেওয়া যায় নিয়েছি। আল্লাহ রক্ষা করবেন চাচা”

দিগন্ত অনিসা কে নিয়ে পাশেই থাকা একটা ছোট কুটিরে গেলো। সেখানে একজন চাচি থাকে। তার কোন আত্নীয় আছে বলে অনিসার জানা নেয়।থাকলেও কখনো আসেনি। চাচি বয়স্ক। মানুষের বাড়ি কাজ করে । এখন করনা তাই কাজ বন্ধ।

দিগন্ত একটা প্যাকেট চাচি কে দিলো।

চাচি বললো,

“মা তোমার এই সময় বাইরে যাওয়া ঠিক না”

“কিছু হবে না চাচি। আমি সাবধানেই বের হয়।”

“তোমার কোনো দরকার হলে ডেকো মা।”

“আচ্ছা চাচি ভালো থাকবেন আসি।”

 

রাস্তার আর একটু সামনে বৃদ্ধা বৃদ্ধ থাকে। তারা রাস্তার পাশে ছোটো খাটো একটা ঘর করে নিয়েছে।পুরোটাই ফুটপাত। শেষ জীবনটা হয়তো ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি নিয়ে সুখে থাকার কথা ছিলো। কিন্ত ভাগ্যের পরিহাসে আজ এখানে।

তাদেরকে প্যাকেট দিয়ে দিগন্ত অনিসা বাড়ির পথে হাটা শুরু করলো।

“তোমাকে ওদের সাথে কথা বলতে বারণ করি তাও কেন বলো?”

“বললে সমস্যা কি?”

“আরে করোনার সময়। আর তোমার পেটে আমার সন্তান। যদি নজর দেয় তখন?”

“আমি যথেষ্ট দূরত্ব রেখেছিলাম। মাস্ক ও পরে। আর ওরা নজর দিবে না দিগন্ত। নজর দেয় তারা যাদের অনেক লোভ,হিংসা ।ওরা তো দুবেলা খেতে পেলেই খুশি ওরা নজর দেয় না “

“তাও”

“তাও কিছু না।দেখো পড়ন্ত সূর্যটা কতো সুন্দর লাগছে। “

“হ্যাঁ। “

দিগন্ত অনিসার কাধে একটা হাত রেখে আর একটা হাতে তার হাত ধরলো। তারপর একটু কাছে টেনে নিলো।

 

দুপুর বেলা। অনিসা রোজ নিয়ম করে তার মা আর শাশুড়ি মা কে ফোন দেয়। বিয়ের প্রথম প্রথম দিতো। তারপর দেওয়া বন্ধ করে দেয়।  শাশুড়ির কথা গুলো তার বুক চিরে বের হয়ে যেতো। আজ প্রায় পাঁচ বছর পর সে গর্ভবতী। অনেক চেষ্টা করে ডাক্তার দেখিয়ে যখন বাচ্চা নিতে পারছিলো না।তখন তার শাশুড়ির আসল রূপ বের হয়ে আসে। প্রথম দিকে কতো ভালোই না বাসতো। তারপর নতুন এক শাশুড়ি। কত রকম ভাবে যে অপমান করা যায় হয়তো তার কাছেই শেখা উচিত। তবে তাকে অনিসা কখনো দোষ দেয় না। প্রতেকের বাবা মা চায় তার ঘর আলো করে নতুন কেউ আসুক। অনিসার তখন মরে যেতে ইচ্ছে করতো। হয়তো দিগন্ত তার পাশে না থাকলে বেঁচে থেকেও মরে যাওয়া হতো। নিজের মেয়ে বলে তার মা তাকে কিছু বলতে পারে নি। তবে তিনিও যে অপমানিত হচ্ছে তা অস্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে অনেক বার। বরাবরের মতো আজও। প্রথমে তার মাকে,

READ MORE:  আব্দুল হাই মােহাম্মাদ সাইফুল্লাহ জীবনী | Biography of Abdul Hai Muhammad Saifullah

“মা ভালো আছো?”

“এইতো মা আল্লাহর দোয়ায় ভালো আছি।তোর শরীরের কি অবস্থা? “

“আছি মা। বাবা কেমন আছে?”

“তোর বাবাও ভালো আছে। মা চলে আয় এখানে।আর তো মাত্র পাঁচটা মাস”

“না মা শেষ দুইমাসে যাবো। ওর খাবার কষ্ট হবে।চারিদিকে লকডাউন। “

“কিন্তু তোর তো মা কষ্ট হচ্ছে”

“না মা একটুও কষ্ট হচ্ছে না”

“তোকে বলে লাভ হবে না শুধুই বৃথা চেষ্টা করলাম।”

অনিসা হুহু করে হেসে ফোনটা কেটে দিলো।

 

এবার শাশুড়িকে ফোন দিলো অনিসা। 

“হ্যালো মা”

“হ্যাঁ মা৷ কেমন আছিস মা?”

“এইতো মা ভালো৷ আপনি?”

“আছি মা৷ তোর কি মা কষ্ট হচ্ছে?”

“না মা”

“হলে বলিস আমি চলে আসবো”

“প্রয়োজন নেয় মা”

“তুই তো কখনো নিজের কষ্ট বলিস না এটাই সমস্যা”

অনিসা হাসতে শুরু করলো৷ 

অনিসা ভাবতে থেকে এই ভালোবাসার একটা ফোঁটা যদি তখন পেতো হয়তো তাঁর লড়াইয়ে একটু হলেও সাহস পেতো। 

তবে তিনি যে কষ্ট পান এটা মুখে না বললেও অনিসা বুঝতে পারে। হয়তো কথা শেষে ফোনটা বুকে জড়িয়ে কেঁদে উঠেন।

আজ জ্যোস্না রাত।আকাশে বিশাল একটা চাঁদ।অনিসা রাতের খাবার শেষে বেলকুনিতে এসে দাড়ালো। সামনের বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা। তাই আলো বাধা না পেয়ে সরাসরি এখানে এসে পড়ে।

দাড়িয়ে থাকা দেখে দিগন্ত পাশে এসে দাড়ালো।

“দাড়িয়ে আছো যে”

“চাঁদ দেখেতে ভালো লাগছে। দেখো”

“হ্যাঁ সুন্দর। চেয়ার এনে দিবো বসবে? দাঁড়াও এনে দেয়”

দিগন্ত চেয়ার এনে অনিসাকে বসতে দিলো। নিজেও একটা চেয়ার এনে বসলো।

“অনিসা তোমার এখানে থাকতে কষ্ট হচ্ছে?”

“না তো”

“মিথ্যে বলো না।অনিসা তুমি চলে যাও। আমার কষ্ট হবে না”

“এক কথা কয় বার বলো?”

“তোমার ভালোর জন্য বলছি”

“আমার ভালো করতে হবে না। শুনো দিগন্ত বিয়ের পর মেয়েরা তার স্বামীর ঘরে থাকতেই শান্তি পায়।আর আমার এখন শান্তিটা বেশি দরকার”

“অনেক ভালোবাসো তাই না?”

“বাসিতো।”

অনিসা দিগন্তের কাধে মাথা রাখলো।দিগন্ত হাত দিয়ে আর একটু কাছে টেনে নিলো।জড়িয়ে ধরে বললো,”ভালোবাসি তোমাকে আর আমাকে”

অনিসা একটু চমকে উঠে বললো মানে?

“মানে তোমাকে মানে তোমাকে। আর আমাকে মানে তোমার মাঝে যে আমিটা একটু একটু করে বেড়ে উঠেছে তাকে।”

অনিসা একটু হেসে বললো, “গাধা একটা।”

অনিসা তারপর চুপ হয়ে যায়।

“আচ্ছা দিগন্ত একটা প্রশ্ন করবো?”

“প্রশ্ন করার জন্য অনুমতি কবে থেকে নেওয়া শুরু করলে?”

“প্রশ্নটা একটু কঠিন তাই অনুমতি নেওয়াটা জরুরী।”

“আচ্ছা বলো”

“এমন না হক;কিন্তু যদি বলা হয় আমাকে নাকি তোমার সন্তানকে বেছে নিতে হবে তুমি কাকে নিবে দিগন্ত? “

দিগন্ত একটু চমকে উঠলো। হয়তো এমন কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন সে কখনো হয়নি। তবে একটু স্বাভাবিক হয়ে বললো, 

READ MORE:  অনুভূতি

“দেখো অনিসা। আমি দোয়া করি এমন পরিস্থিতি যেনো কখনো না আসে। তবে সত্যিই যদি এমন হয় তবে আমি তোমাকেই বেছে নেব। তুমি আমার কাছে ছিলে এতোটা দিন। আর যে আসবে তাকে আমি এখনো দেখিনি। তোমার মায়ায় এতোদিন ছিলাম তাই তোমাকেই নিবো। আমার মনে হয় মা ছাড়া বেঁচে থাকার চেয়ে না থাকায় ভালো। আমি সেই শিশুকে মা না থাকার কষ্ট দিতে পারবো না অনিসা।”

দিগন্ত চুপ করার পর হাঁপাতে শুরু করলো। এতো কঠিন একটা বিষয় নিয়ে বলা তার কাছে সত্যিই দূরসাধ্য। যেখানে একপাশে তার প্রিয় তমা অন্য পাশে প্রাণ প্রিয় সন্তান।

অনিসা নিরব থেকে বললো,

“আমি জানতাম তুমি এমন কিছু বলবে। কিন্তু দিগন্ত তুমি আমাকে কথা দাও তুমি আমাদের সন্তানকে বেছে নিবে। সন্তান হীন থেকে যে কষ্ট আমি পেয়েছি আর পেতে যায় না। তাহলে আমাকে বেঁচে থেকেও মরে যেতে হবে দিগন্ত। আমি সহ্য করতে পারবো না”

দিগন্ত বুঝতে পারে তার কাধ বেয়ে গরম পানির একটা গভীর কষ্টের স্রোত বয়ে যায়।

 

রোজকার মতো আজও দিগন্ত আর অনিসা খাবার নিয়ে বের হলো।অনিসার জোর করলো বলেই দিগন্ত বের হলো।তার একটুও ইচ্ছে করছিলো না।

 

রহিম চাচা কে খাবার দিতেই বললো,

“মা তুমি এতো কষ্ট করে খাবার দিতে আহো আমার যে কষ্ট লাগে।”

“আমার কষ্ট হয়না চাচা”

 

চাচা আর কিছু না বলে খেতে লাগলো।সারাদিন খাওয়া হয়নি।এখন এটা তার কাছে অমৃতের চেয়ে নেহাতই কম না।অনিসা তাকিয়ে থেকে চাচাকে খেতে দেখছে।অনিসার ইচ্ছে করছে সবাইকে যদি এভাবে খাওয়াতে পারতো।সবার মুখে যদি এমন হাসি থাকতো।

 

 চাচি তাকে জিজ্ঞেস করলো,

“মা তোমার আর কতোদিন?”

“চাচি আর চার মাস চৌদ্দ দিন”

“মা তুমি এখন বাড়ি চলে গেলেই পারতা এখনে কষ্ট হবে একা একা।”

“চাচি যাবো শেষ দুইমাস”

“এখন গেলেই পারতা মা”

 

বৃদ্ধা বৃদ্ধ হয়তো অনিসার অপেক্ষা ছিলো।তাকে দেখেই তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।বৃদ্ধা বললো,

“মা তুমি এতো ভালো কেনো?”

“আমি ভালো না খালা।আমি স্বার্থপর।”

“কি বলো মা তুমি এগুলো। এটা তোমার শত্রুও বলতে পারবে না”

“আমি পরকালে জান্নাত চাই তাই স্বার্থপর খালা।হাদিসে বলা হয়েছে যে একটুকরো খেজুরও দান করে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাচাঁর চেষ্টা করো।দান এমন একটা ইবাদত যা কবরের আজাবকে মাফ করে দেয়।”

বৃদ্ধ কাদতে শুরু করলো।তারপর আপণ মনেই চোখ মুছে বললো,”আমার ছেলেমেয়ে গুলো যদি এগুলো বুঝতো।”

অনিসা বললো,”চাচা আপনি কাদবেন না”

“যাও মা বাড়ি যাও আজান দিবে”

“আচ্ছা চাচা”

 

বাড়ি ফেরার পথে অনিসা দিগন্তকে বললো,

“দেখো তারা আমাকে কতো ভালোবাসে।নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলছে।চাচাকে তোমার বাবার মতো লাগে”

“ওগুলো সব মুখে।দেখাবা কবে তোমার বাড়িতেই ডাকাতি করবে”

“দিগন্ত এসব বলতে হয়না।তারা মানুষ।আমার যদি সামর্থ্য থাকতো এই এলাকার সব গরিব দের আমি খাওয়াতাম।”

“থাক বাবা আর ভেবো না।কবে আমাকে বিক্রি করে ওদের খাওয়াবা”

অনিসা দিগন্ত দুইজনেই হেসে উঠলো। 

 

আর ও পড়ুন- মানবতা পর্ব – ২

 

লেখক,

সিহাব
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *