পুরুষদের ভেরিকোসিল রোগের প্রতিকার
ভেরিকোসিল ( Varicocele) একটি মারাত্মক রোগ। এটি পুরুষদের জন্য ভয়াবহ সমস্যা। চলুন জেনে নিই কি এই রোগ? ভ্যারিকোসেল হল এমন একটি অবস্থা যেখানে অণ্ডকোষের ভিতরের শিরাগুলি বড় হয়ে যায়। ভ্যারিকোসিলস সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে বিকাশ করতে পারে যা বন্ধ্যাত্বের সমস্যার দিকে পরিচালিত করে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, ভ্যারিকোসেল ভেরিকোজ শিরার মতো কিন্তু এটি অণ্ডকোষকে প্রভাবিত করে। পুরুষ প্রজনন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক অঙ্গগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলি হল ভাস ডিফারেনস, প্রোস্টেট এবং মূত্রনালী যেখানে বহিরাগত অঙ্গগুলি হল লিঙ্গ, অণ্ডকোষ এবং অণ্ডকোষ।
অণ্ডকোষ হল একটি আলগা, থলির মতো থলি যা অণ্ডকোষকে ধারণ করে এবং নিশ্চিত করে যে অণ্ডকোষ স্বাভাবিক শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য কিছুটা শীতল তাপমাত্রার নিচে রয়েছে। টেস্টিস হল ছোট ডিম্বাকৃতি অঙ্গ যা টেস্টোস্টেরন তৈরি এবং শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য দায়ী।
অণ্ডকোষগুলি এপিডিডাইমিসের সাথে সংযুক্ত থাকে যা শুক্রাণু কোষ বহন এবং সংরক্ষণের জন্য দায়ী একটি দীর্ঘ, কুণ্ডলীকৃত নল। শুক্রাণু, অণ্ডকোষে উত্পাদিত হওয়ার পর, ভ্যাস ডিফারেন্সের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে এবং প্রোস্টেটে সঞ্চয় করে। যখন একজন পুরুষের বীর্যপাত হয়, তখন প্রোস্টেট থেকে শুক্রাণু সেমিনাল ফ্লুইডের সাথে মিশে যায়, মূত্রনালী দিয়ে ভ্রমণ করে এবং লিঙ্গে পৌঁছায়।
উপরোক্ত ছাড়াও, পুরুষ প্রজনন ব্যবস্থা শিরা এবং রক্তনালীগুলির একটি বড় গ্রুপ দ্বারা সমর্থিত।
ভেরিকোসিল রোগের কারণ
মাম্পস
আঘাত পাওয়া
কিছু এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যৌন উত্তেজক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
তীব্র হস্তমৈথন আসক্তি এবং এক সময় হঠাৎ ছেড়ে দেয়া
ভারী জিনিস উত্তোলন
দীর্ঘদিন যাবৎ ক্রমাগত দাঁড়িয়ে কাজ করা
দীর্ঘদিন যাবৎ ক্রমাগত গরম পরিবেশে কাজ করা
এছড়াও আরো নানা কারণে ভেরিকোসিল হতে পারে
ভেরিকোসিল রোগের লক্ষ্মণ
বাম দিকে বেশি হয় এবং ডান দিকে কম হয়
টেস্টিসের উপরের শিরাগুলিতে টক্সিক ব্লাড জমে শিরাগুলি ফুলে যায়,
টেস্টিসের উপরের শিরাগুলিতে টক্সিক ব্লাড জমে কাল হয়ে যায়, পেঁচিয়ে যায়
স্পার্মাটিক কর্ডে ব্যথা হয় এবং কেচুর মতো ফুলে যায়
অন্ডকোষে ব্যথা হয়
অন্ডকোষ ঝুলে যায়
অণ্ডথলিতে চাকা বা পিণ্ড
কুঁচকিতে ব্যথা
অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া
বন্ধ্যাত্ব
তলপেটে ব্যথা
অনৈচ্ছিক মূত্রত্যাগ
পুরুষত্বহীনতা
পুরুষাঙ্গে ব্যথা হওয়া
পায়ুপথে ব্যথা হওয়া
পুরুষাঙ্গ কখনো শক্ত ও সোজা হয়, কখনো বাঁকা হয়ে থাকে
ভেরিকোসিল রোগের চিকিৎসা
হোমিওপ্যাথি – সত্যি বলতে গেলে এটিই উত্তম একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। যদিও ক্রনিক অবস্থায় ভেরিকোসিল স্থায়ীভাবে ঠিক হতে কিছুটা সময় লাগে। প্রায় ৫-৬ মাস।
সার্জারী – তবে সার্জারী করলে পুনরায় হওয়ার সম্ভবনা থাকে ৯৭% . হয় কয়েক মাসের মধ্যে আবার হবে অথবা কয়েক বছরের মধ্যে আবার হবে। আর যখন পুনরায় হয় তখন দ্বিগুন লক্ষণ নিয়ে শুরু হয়। তখন সমস্যাটি আরো জটিল আকার ধারণ করে। কারণ ভেরিকোসিল সার্জারি করা মানে হলো যে শিরাগুলি ফোলা সেগুলি ব্লক করে দেয়া যেটি এই রোগের কোন সুচিকিৎসা নয়। বিশেষ করে যুবকদের জন্য ভেরিকোসিল সার্জারি মানে হলো – সারা জীবনের জন্য মহা দুর্ভোগ বয়ে আনা।