জীবন গল্প

ছোট একটি আক্ষেপ – ৪

 

সময়টা ২০১০ সাল। পড়ি ৫ম শ্রেণিতে। বলা যায় পুরো ব্যাচ আমাদের মধ্যে ২ ভাগ হয়ে যায়। কোচিং এ পড়ার দিক দিয়ে ভাগ হয়ে যায় সবাই। এটা ভালো দিক ছিলো। ছাত্রের মধ্যে যেমন প্রতিযোগিতা বাড়ে তেমনি কোচিং সেন্টারেও দেখা যায় প্রতিযোগিতা। এক দল ভর্তি হয় নতুন কুড়িতে অন্য দল ভর্তি হয় বিনয় কোচিং এ। আমি ভর্তি হলাম বিনয় কোচিং এ। সবাই যার যার পড়া ভালোই পড়তেছে সাথে  পরীক্ষাগুলোতে ২ কোচিংয়ের নাম্বার সমান সমান বলা যায়। তো পিএসসি পরীক্ষা চলে এলো। আমরা পিএসসি পরীক্ষার ২য় ব্যাচ। এতো কম বয়সে পাবলিক পরীক্ষা সবাই ভয় ভয়। পরীক্ষার আগে সিরিয়াস ভাবে পড়তাছি। বাইরে খেলাধুলা ও কমাই দিছি। শুরু হলো পরীক্ষা। আমাদের জিলা স্কুলেই সিট পরলো। তাই দিক দিয়ে একটু ভয় কম যে অন্য কোনো স্কুলে যেতে হবে না। ভেবেছিলাম পরীক্ষায় স্কুলের স্যাররাই থাকবেন কিন্তু না। বাইরের প্রাইমারী স্কুলের স্যাররা গার্ড দিলো। ২০০৮ নাম্বার রুমে সিট পরছে। দেখলাম ব্রেঞ্চের এক পাশে জিলা স্কুল অন্য পাশে গার্লস স্কুল। তাই পাশে মেয়ে হওয়ায় একটু অস্বস্তি লাহছিলো। আরও বেশি অস্বস্তি লাগছিলো যখন দেখলাম আমার সিট সবার সামনে। ভাবলাম কোনো উওর লিখতে গেলে যদি না পারি কারো কাছে সাহায্য পাবো না। যাই হক তেমন অসুবিধা হলো না। 

 

আলহামদুলিল্লাহ্‌ পরীক্ষা ভালো দিলাম। দেখতে দেখতে পরীক্ষা শেষ হলো। চলে গেলাম মামা বাড়ি। টার্গেট ছিলো সাতার শেখা। ১২ দিনের মতো থাকলাম। কিন্তু সাতার শেখা ঠিকভাবে হলো না। ঘুরতে ফিরতেই ১২ দিন শেষ। রেজাল্টের আগে আগে চলে এলাম। রেজাল্টের দিন খেলায় ব্যস্ত। বাসায় আসলাম ১ টায়। রেজাল্ট এখনো দেয়নি, গোসল করে নামাজ পড়তে গেলাম। বাসায় এসে দেখি আম্মার মুখে হাসি। বুঝে উঠতে পারলাম না কেনো মুখে হাসি। আমি আম্মারে বলি কি হইছে হাসো কেন। বলতেই চায় না। পরে বললেন সব বিষয়ে এ+ পেয়েছি। মানে গোল্ডেন। সন্ধ্যায় বের হলো নম্বরপত্র। মোট নম্বর পেয়েছিলাম ৫৪০। বছরটা ভালোই গেছিলো। বাবা মাকেও খুশি করতে পেরেছিলাম। শুধু খারাপ লাগার একটা বিষয় ছিলো বৃত্তি পাইনি। নম্বর দেখে আশা করেছিলাম সাধারণ গ্রেডে হইত বৃত্তি পাবো কিন্তু কোনোটাই পাইনি। বৃত্তিটা পেলে হইতো ১৬ আনা পূরণ হতো। কপালে ছিলো না। তো সব কিছু ঝেরে ফেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link