বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা

বজ্রপাতে মৃত্যু হলে মৃত মানুষের দেহে কি পরিবর্তন হয়?

বৃষ্টির দিন প্রায় সময়ই বজ্রপাত হয়। বজ্রপাত এখন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। বজ্রপাতের সময় আকাশে তীব্র আলোর ঝলকানি দেখা দেয় এবং প্রবল শক্তি সম্পন্ন বৈদ্যুতিক আধান বা চার্জ ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। এতে অনেক সময় মানুষের মৃত্যু হয়। আমরা শুনে থাকব, অনেক সময় কবরস্থান থেকে বজ্রপাতে মারা যাওয়া মৃত ব্যক্তির লাশ চুরি করার চেষ্টা করা হয়। এর পিছনে কারণটি হলো মানুষের মাঝে একটি ধারণা প্রচলিত আছে আর তা হলো বজ্রপাতে নিহত মৃত ব্যক্তির দেহ চুম্বক বা বিশেষ কোনো খনিজ পদার্থে পরিণত হয়। তাই বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির দেহ চুরি করে বিক্রি করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এটা কি সত্য যে বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির দেহে বিশেষ কোনো পরিবর্তন ঘটে? বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির দেহ কি চুম্বকে পরিণত হয়? চলুন উত্তর জানার চেষ্টা করব।

 

সত্য কথা হলো, বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির দেহে কোনো পরিবর্তন হয় না। বজ্রপাত হচ্ছে মূলত তীব্র শক্তি সম্পন্ন বৈদ্যুতিক আধান। বৃষ্টির সময় এই বজ্রপাত মানুষের কাছাকাছি বা উপর পড়লেই মানুষ মৃত্যু বরণ করে। কারণ তীব্র শক্তি সম্পন্ন এই বৈদ্যুতিক চার্জ বা আধান ইলেকট্রিক শকের মতো কাজ করে। একজন মানুষ বিদ্যুৎ এর সংস্পর্শে এলে শরীর দিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে যেমন মানুষ মৃত্যু বরণ করে তেমনি বজ্রপাতের সময়ও একই বিষয় ঘটে থাকে।  সহজ বাংলা ভাষায় বজ্রপাতে মৃত্যু হলো বৈদুতিক শকে মৃত্যুর মতোই। মানুষের দেহ প্রচন্ড পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবাহী। বিদ্যুৎ এর সংস্পর্শে এলেই মানুষের শরীর দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হওয়া শুরু করে। এই কারণে মানুষ অনেক সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সংস্পর্শে এসে মারা যায়। শরীর দিয়ে বিদ্যুৎ যত বেশি পরিবাহিত হবে মানুষের মৃত্যু তত তাড়াতাড়ি হবে। বজ্রপাত হলে মানুষ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মৃত্যু বরণ করে। কারণ বজ্রপাতে প্রচুর পরিমাণ বৈদ্যুতিক চার্জ থাকে যার পরিণতি হয় নির্মম মৃত্যু। তাই এই থেকে বোঝা যায় বজ্রপাতে মৃত্যু আর সাধারণ ভাবে বৈদ্যুতিক শকে মৃত্যু একই রকম। তাই বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির মৃত দেহে কোনোরকমের পরিবর্তন হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এটি পুরোপুরি একটি ভুল ধারণা এবং কুসংস্কার। বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, জানালার কাছে কিংবা বড় গাছের নিচে অবস্থান করা উচিত নয়। বজ্রপাতের সময় ফোন ব্যবহার থেকেও বিরত থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link