কী এবং কেন?

বিপদ সংকেত হিসেবে লাল আলো কেনও সবসময় ব্যবহার করা হয়?

বিপদ সংকেত বা সিগন্যাল লাইট লাল হয় কেন?

 

সবসময় আমরা খেলায় করেছি বিপদ সংকেত হিসেবে লাল আলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কেন? সাদা কিন্তু কোনো রং নয়, সাতটা রঙের সমাহার। বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল- এই সাত রঙের মিশ্রণে সাদা রং তৈরি হয়। কিন্তু সাতটা রঙের প্রতিটার প্রকৃতি এক রকম নয়। রঙের উৎস হলো আলো। আলো এসে কোনো বস্তুকে আলোকিত করলেই সেটাকে আমরা দেখি। কোনো বস্তু সাদা আলো থেকে যে রঙের আলো শোষণ করতে পারে না, সে বস্তুকে সেই সেই রঙের দেখায়। যেমন গাছের পাতা সবুজ বাদে সব রং শোষণ করে, তাই এর রং সবুজ। প্রতিটা রঙের আলোই একেকটা তরঙ্গ। তরঙ্গ মানেই তার একটা তরঙ্গ দৈর্ঘ্য থাকে, থাকে একটা কম্পাঙ্কও। কোনো তরঙ্গ একটা পূর্ণচক্র পূরণ করতে যতটুকু পথ পাড়ি দেয়, সেটাই হলো ওই আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য। অন্যদিকে একটা তরঙ্গ এক সেকেন্ডে কতবার পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করে, সেটা হলো তার কম্পাঙ্ক। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত বড় হয়, পূর্ণচক্র পূরণ করতে তত বেশি সময় নেয়। সুতরাং যার কম্পাঙ্ক যত বেশি তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম। সব আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বা কম্পাঙ্ক সমান নয়। সাত রঙের মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি। তাই এর কম্পাঙ্ক সবচেয়ে কম। অন্যদিকে বেগুনি আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম এবং এর কম্পাঙ্ক তাই সবচেয়ে বেশি। যে আলোর তরঙ্গ কম্পাঙ্ক যত বেশি, তার শক্তিও তত বেশি। কিন্তু দ্রুত কম্পনের ফলে সহজেই শক্তি হারিয়ে ফেলে। তাই বেশি কম্পাঙ্কের অর্থাৎ কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো দূর বেশি দূর পর্যন্ত যেতে পারে না। অন্যদিকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যার বেশি, কম্পাঙ্ক যার কম, সেই আলো অনেক দূর থেকেই স্পষ্ট দেখা যায়। অনেক দূর পথ পারি দিলেও লাল আলো সহজে দমে যায় না। এ করণেই ট্রাফিক, গাড়ি, বিমান, জাহাজ, মোবাইল অপারেটের টাওয়ারসহ সব ধরনের সিগন্যাল লাইট লাল রঙের হয়। ফলে রাতে অনেক দূর থেকেও এসব জিনিসের অস্তিত্ব বোঝা যায়। এভাবে দুর্ঘটনার হার অনেক কমানো সম্ভব অনেকটাই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link