ইতিহাসকী এবং কেন?

হিটলার কেনও ইহুদি হত্যা করেছিল?

হিটলার কেনও ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন? এই বিষয়টি অনেকেরই মনে প্রশ্ন জেগেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার প্রায় ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করেছে যা ইতিহাসে হলোকাস্ট নামে পরিচিত। কেনও হিটলারের মনে এতও ইহুদি বিদ্বেষ ছিল তা নিয়ে বিগত ৭০ বছরে অনেক গবেষণা হলেও সঠিক কারণ এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে। 


[ Why did Hitler kill the Jews? This issue has raised many questions. During World War II, Hitler killed about 6 million Jews in what is known in history as the Holocaust. Despite much research over the past 70 years as to why Hitler harbored so much anti-Semitism, the exact reason remains a mystery. ] 


এড্লফ হিটলার কেন ইহুদিদের ঘৃণা করতো? এই প্রশেড়বর উত্তর খুব একটা সোজা না।

কিছু কারণ এমন ধারণা করা হয়েছে যে-


হিটলার অনেক ছবি আঁকতো। তখন তার খুব ইচ্ছা ছিল আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়া। হিটলার ভিয়েনাতে থাকতো। জানা যায় তাকে আর্ট কলেজে থেকে বেশ কয়েকবার প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছিল। কারণ আর্ট স্কুলের রেকটর ছিলেন ইহুদি। এবং ইহুদি ছাত্ররা সংখ্যাগরীষ্ঠ ছিল পুরো কলেজে।


২০০৯ সালে জামার্নিতে প্রকাশিত জার্মান ইতিহাসবিদ ও প্রবীন সাংবাদিক ড: জে. রিকার-এর লেখা বই “নভেম্বর নাইন: হাউ ওয়ার্ল্ড ওয়ার ওয়ান লেড টু দ্য হলোকাস্ট” থেকে জানা যায় হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের পরাজিত হওয়ার কারণ হিসেবে একমাত্র ইহুদিদের দায়ী করতো। ইহুদিরাই জার্মানদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে এই বিশ্বাস ছিল হিটলারের। এবং তার আরো দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, নভেম্বর ৯, ১৯১৮ সালে জামার্নির রাজতন্ত্রের বিলোপ ইহুদিদের দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল। তখন হিটলার বসবাস করতো মিউনিখে এবং সেখান থেকেই ইহুদিরা বিপ্লব করে রাজতন্ত্র ধ্বংস করেছিল। হিটলার সবসময় মনে করতো দেশ ইহুদিদের দ্বারা বিষাক্ত হয়ে উঠেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে ড: রিকার দ্বিমত পোষণ করেন হিটলারের এন্টিসেমিটিজম বা ইহুদি-বিদ্বেষের পূর্ববর্তী ধারণার সাথে যাতে বলা হয়েছে হিটলারের মনে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণার বীজ বপন হয়েছিল যখন ১৯০৭ সালে হিটলারের মা ক্লারা মারা যান একজন ইহুদি ডাক্তার এডওয়ার্ড ব্লোচ-এর অধীনে চিকিৎসারত অবস্থায়। তিনি লিখেছেন, হিটলার একমাত্র ভালোবাসতো তার মা ও জার্মান জনগণকে। তার মনের মধ্যে বিভ্রম সৃষ্টি হয়েছিল যে ইহুদিদের নির্মূল করতে পারলেই বিশ্ব জয় করতে পারবে।


১৯৩০ সালের প্রথমদিকে হিটলারের নাৎসী বাহিনী জার্মানিতে ক্ষমতায় আসে। এবং ১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। হিটলার জার্মানির জনগণকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তিনি চ্যান্সেলর হলে দেশকে উনড়বতির পথে নিয়ে যাবেন এবং দেশের বিরুদ্ধে সকল প্রতিবন্ধকতা অচিরেই দূর করবেন। তখন প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মানির শোচনীয় পরাজয় ও পরবর্তীতে গ্রেট ডিপ্রেশনের চাপে জনগণের অবস্থা ছিল করুণ। এডলফ্ হিটলাকে সকল জার্মান সমর্থন করে। ১০ লাখ ইহুদি নিধনে তাদের যে কোনো আপত্তি ছিল না তা সহজেই বোঝা যায়। কারণ জনগণের সমর্থন না থাকলে হিটলারের একার পক্ষে এত লোক হত্যা সম্ভব ছিল না এটা সহজেই অনুমেয়। চ্যান্সেলর হওয়ার পর হিটলার জার্মানদের অনেক সুযোগ সুবিধা দান করেন। জনগণকে সোসাল বেনিফিট দেন, ট্যাক্স কমান এবং সৈন্যদের বেতন ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধার প্রচুর বৃদ্ধি করেন। ইহুদিদের হত্যার ব্যাপারে জার্মানদের কোনো মাথাব্যথা না হওয়ার কারণ আরেক কারণ ছিল। 


 তবে একথা বলাই বাহুল্য যে, ইতিহাস এখন সাক্ষী হিটলারের ইহুদি নিধণ ফর্মুলা একটি ব্যর্থ প্রজেক্ট ছাড়া কিছুই নয়। কারণ বিশ্বের সব বড় বড় কম্পানির শীর্ষে এখন ইহুদিরা বসে রাজত্ব করছে। আমেরিকাও এর ব্যতিক্রম নয়। আজকের বিশ্ব নেতৃত্ব দানকারী জাতিগোষ্ঠী হলো ইহুদিরা। একথা অবশ্যই অকাট্য। 


READ MORE:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *