ইসলামইসলামিক বিষয়াদি

কেন প্রথম কাতারের সালাত এত গুরুত্বপূর্ণ?

প্রথম কাতারে সালাত আদায়ের জন্য সাহাবিরা প্রতিযোগিতা করতেন। প্রথম কাতারে সালাত আদায় করা ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। প্রথম কাতার ফেরেশতাদের কাতারের মতো। প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীর ওপর মহান আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন ও তার জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যদি লোকেরা জানত যে আজান ও প্রথম কাতারে সালাত আদায়ে কী নেকি আছে, তাহলে তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করত। অনুরূপভাবে যদি তারা জানত এশা ও ফজরের সালাতে কী নেকি রয়েছে, তবে তারা হামাগুঁড়ি দিয়ে হলেও ওই দুই সালাতে আসত।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৫)

 

আবু উমামা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন ও তাঁর ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন প্রথম কাতারের মুসল্লিদের জন্য। সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, দ্বিতীয় কাতারের ওপর? তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীদের জন্য…।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২২৩১৭)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীদের জন্য। আর আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় পদক্ষেপ হলো, যা কাতারে শামিল হওয়ার জন্য (বান্দা) করে থাকে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৪৩)

 

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, একবার রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা কি সেভাবে কাতারবদ্ধ হবে না, যেভাবে ফেরেশতারা তাঁদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ফেরেশতারা কিভাবে তাঁদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? জবাবে তিনি বলেন, তাঁরা আগে প্রথম কাতার পূরণ করেন। অতঃপর কাতারে ঘেঁষে ঘেঁষে দাঁড়ান।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৩০)

 

আর নারীরা জামাতে উপস্থিত হলে পুরুষের জন্য সামনের কাতারে সালাত আদায় করা উত্তম। আর নারীদের জন্য পেছনের কাতারে সালাত আদায় করা উত্তম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘পুরুষের জন্য সর্বোত্তম কাতার হলো প্রথম কাতার এবং সর্বনিকৃষ্ট কাতার হলো পেছনের কাতার। আর নারীদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হলো পেছনের কাতার এবং সর্বনিকৃষ্ট হলো প্রথম কাতার।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৪০)

 

ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীর জন্য তিনবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং দ্বিতীয় কাতারের জন্য একবার।’ (ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৯৯৬)

ওপরের হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীর জন্য মহান আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা ও রাসুল (সা.) দোয়া করেন। বারা ইবনে আজেব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ রহমত নাজিল করেন ও তাঁর ফেরেশতারা দোয়া করেন প্রথম কাতারের লোকদের জন্য। আর মুওয়াজজিনের আওয়াজ যত দূর যায় তত দূর পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। জীব ও জড় পদার্থ যে-ই তার ধ্বনি শ্রবণ করে, সে-ই তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গে জামাতে সালাত আদায় করে, তার জন্যও তদ্রুপ সওয়াব আছে। (নাসাঈ, হাদিস : ৬৪৬)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link