বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা

হিট স্ট্রোক কেন হয়?

প্রচণ্ড গরমের সময় হিটস্ট্রোক হয়। এর প্রধান লক্ষণ হলো শরীরের উচ্চ তাপমাত্রাঘাম নির্গমন প্রক্রিয়ার বিপর্যয়গায়ের চামড়া গরমলাল ও শুষ্ক হয়ে যাওয়া প্রভৃতি। এসময় গায়ের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সে. (১০৬ ডিগ্রি ফা.) বা তারও বেশি হতে পারে। একটানা প্রচণ্ড রোদে থাকলে হিটস্ট্রোক হতে পারেযাকে সাধারণত সানস্ট্রোক বলা হয়।

হিটস্ট্রোকে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আগে মাথা ঝিমঝিমনিস্তেজ ভাবখিচুনি এবং মানসিক গোলমাল দেখা দিতে পারে। খুব গরমে প্রচুর ঘামের ফলে শরীরের লবণ বের হয়ে যাওয়ার ফলেই মূলত হিটস্ট্রোক হয়। এতে কেন্দ্রীয় স্নায়ুমণ্ডলীর দ্বারা শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয় এবং ঘাম আর বের হয় না। এর ফলে চামড়া শুষ্ক ও গরম হয়ে ওঠেযা হিটস্ট্রোকের লক্ষণ।

 

শিশু ও বৃদ্ধরা হিটস্ট্রোকে সহজে আক্রান্ত হয়কারণ তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। মোটা মানুষও সহজে আক্রান্ত হয়কারণ দেহের তাপ নিষ্ক্রমণে তাদের শরীরের দক্ষতা কম। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া দরকার।

 

একটি উপায় হলো রোগীর চামড়া ঠাণ্ডা পানি বা অ্যালকোহল দিয়ে মুছে মুছে দেহের তাপমাত্রা অন্তত ৩৯ ডিগ্রি সে. (১০২ ডিগ্রি ফা.)-এ নামিয়ে আনা। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করানো যায় কিন্তু বরফে গোসল নয়। তাপমাত্রা নেমে এলে জ্বর নামানোর প্রক্রিয়া ধীরে চালাতে হবে। ধীরে ধীরে লবণপানি খাওয়াতে হবে। 

 

অনেক সময় বেশিক্ষণ গরমে থাকলে হিটস্ট্রোক হলেও কেউ গরমে একেবারে কাহিল হয়ে পড়তে পারেন। তখন মাথা ঝিমঝিম করেবমিবমি লাগে। দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার চেয়েও কম থাকে। একে বলে হিট এক্সজশন। এর চিকিৎসা হলো ধীরে ধীরে শরীর ঠাণ্ডা করা এবং অল্প অল্প করে লবণপানি খাওয়ানো

 

 হিটস্ট্রোকের দ্রুত চিকিৎসা না হলে বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা থাকেকারণ বেশি জ্বর বেশিক্ষণ থাকলে মস্তিষ্কের ক্ষতিমানসিক আঘাত অথবা হার্ট বা কিডনি বিকল হতে পারে।

 

বিশেষত যারা ওইসব রোগে ভুগছে তাদের ক্ষেত্রে ভয় বেশি। হিটস্ট্রোক বা হিট এঞ্জসশন এড়ানোর জন্য দিনের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে শ্রমসাধ্য কাজ কমিয়ে দেওয়া এবং পর্যাপ্ত তরল ও লবণ খাওয়া দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link